ভারত: ২০১/৭
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৯৫/১০
ওয়ান্ডার্সে ওয়ান্ডারফুল টিম ইন্ডিয়া। দুর্ধর্ষ ভারতের সামনে দাঁড়াতেই পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজ জয়ের মুখে দাঁড়িয়েছিল প্রোটিয়াজরা। তবে ভারত একপেশেভাবে জিতে সিরিজ ১-১ করে গেল বৃহস্পতিবার রাতে। সূর্যকুমার যাদবের বিস্ফোরক শতরান, তারপর সিরাজদের বল হাতে অনবদ্য পারফরম্যান্সে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা।
সূর্যকুমার যাদব এবং যশস্বী জয়সোয়ালের বিধ্বংসী ব্যাটে ভারত স্কোরবোর্ডে ২০১ রান তুলেছিল। জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা চাপের সামনে ৯৫ রানেই গুটিয়ে গেল।সিরিজ ১-১ করার ম্যাচে ভারতের জয় এল ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে। দ্বিতীয় ম্যাচে রান ডিফেন্ড করতে নেমে ভারত হেরে গিয়েছিল প্ৰথম দুই ওভারে। ৩৮ রান বিলিয়ে দিয়েছিল ভারত। ১৫২ রানের টার্গেট যার পর মোটেই অনতিক্রম্য মনে হয়নি।
ওয়ান্ডার্সে ভারত সেই ভুল আর করেনি। সিরাজ প্ৰথম ওভারে মেডেন নিয়ে যে চাপ তৈরি করে গিয়েছিলেন, সেই ফাঁস আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ওভারেই মুকেশ কুমার বোল্ড করেন ব্রিজকেকে। এরপরে পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই রেজা হেন্ড্রিক্স রান আউট হয়ে যান, ক্ল্যাসেনকে ফেরান অর্শদীপ। পাওয়ার প্লে-র পরের ওভারেই ক্যাপ্টেন মারক্রাম ফেরেন জাদেজাকে হাঁকাতে গিয়ে। ৪২/৪ হয়ে যাওয়ার পর ম্যাচের আর কিছুই বাকি ছিল না। একপ্রান্ত আগলে ডেভিড মিলার ২৫ বলে ৩৫ করলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকান ইনিংস স্থায়ী হল মাত্র ১৩.৫ ওভার।
ব্যাটে সূর্যকুমারের মতই বল হাতে আগুনে পারফরম্যান্স করে গেলেন কুলদীপ যাদব। ২.৫ বলে মাত্র ১৭ রানের বিনিময়ে কুলদীপের বৃহস্পতিবার রাতের শিকার পাঁচজন। অন্যপ্রান্তে জাদেজাও দুই উইকেট তুললেন।
তার আগে আইডেন মারক্রাম টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন। আর পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই ভারতের টপ অর্ডারে বিপদ হিসাবে আবির্ভুত হয়েছিলেন কেশব মহারাজ। তৃতীয় ওভারে পরপর দু-বলে কেশব মহারাজ আউট করে দেন শুভমান গিল, তিলক ভার্মা।
প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে ভারতকে চালকের আসনে বসিয়ে দেয় যশস্বী জয়সোয়াল-সূর্যকুমারের ১১২ রানের দুরন্ত পার্টনারশিপ।
সূর্য প্রথমে মারমুখী যশস্বীকে যোগ্য সঙ্গত করছিলেন। তবে দ্রুতই নিজের ভয়াল ছন্দে ফিরে আসেন ক্রিজে কিছুটা থিতু হয়ে। সূর্যকুমারের বিধ্বংসী শতরান এল মাত্র ৫৫ বলে। হাঁকালেন ৭ বাউন্ডারি, আট ওভার বাউন্ডারি। ক্রিজে নামার পর সেভাবে ব্যাটে-বলে করতে পারছিলেন না। ২১ করতে নিয়ে নিয়েছিলেন ২০ বল। তবে এর পরে পুরোটাই সূর্য-ময়। বাকি ৭৯ রান করলেন মাত্র ৩৫ বলে।
ভারতের ইনিংস গড়ার কাজে যোগ্য সহায়তা করে গেলেন যশস্বী জয়সোয়াল-ও। ৪১ বলে ৬০ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে গেলেন যশস্বী-ও। আন্তর্জাতিক টি২০’তে সর্বাধিক শতরানের নজির রয়েছে রোহিত শর্মা এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের। দুজনেই চারটে করে শতরান করেছেন। তবে সূর্যকুমার বৃহস্পতিবার ছুঁয়ে ফেললেন দুই তারকার টি২০ শতরান সংখ্যাকে।
যশস্বী এবং সূর্যকুমার দুজনে চার-ছক্কার ঝড় তুলে প্রোটিয়াজ অনভিজ্ঞ বোলারদের নাভিশ্বাস তুলে দেন। টেস্টের প্রস্তুতির জন্য মার্কো জ্যানসেন, জেরাল্ড কোয়েটজেদের ছেড়ে দিতে হয়েছে। আর অভিষেককারী নান্দ্রে বার্গার, আন্দ্রে ফুলেকাওয়া, লিজার্ড উইলিয়ামসদের কার্যত দাঁড়াতেই দেননি দুজনে। ফুলেকওয়ে এক ওভারে ২৩ রান খরচ করেন।
যাইহোক, যশস্বী-সূর্যকুমারের দুরন্ত পার্টনারশিপে ছেদ ধরান শামসি। জশস্বী আউট হওয়ার পর রিঙ্কু সিংয়ের সঙ্গে আরও ৪৭ রান যোগ হয়। এই পার্টনারশিপের অধিকাংশ রান-ই আসে ক্যাপ্টেনের ব্যাট থেকে। রিঙ্কু ১০ বলে ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি।
এক সময় মনে হচ্ছিল ভারত হয়ত ২২৫-এর আশেপাশে পৌঁছে যাবে। তবে ডেথ ওভারে ছোটখাটো ব্যাটিং বিপর্যয়ে ভারত স্কোরবোর্ডে ২০১ রানের বেশি তুলতে পারেনি।