India vs South Africa 3rd T20I Match Report: স্কোরবোর্ডে পুঁজি ২১৯ রানের। সেই রান ডিফেন্ড করতে নেমেই ভারত হেনরিখ ক্ল্যাসেন এবং মার্কো জ্যানসেনের ঝড় সহ্য করে শেষমেশ কোনওরকমে ১১ রানে জয় পেল। রান চেজ করতে নেমে অধিকাংশ সময়ই ব্যাকফুটে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবুও ম্যাচের উত্তেজনা বজায় থাকল শেষ বল পর্যন্ত। সৌজন্যে মার্কো জ্যানসেনের অবিশ্বাস্য পাওয়ার হিটিং।
১০ ওভারে ৮৪/৪ হয়ে যাওয়ার পর প্রোটিয়াজরা অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচে অক্সিজেন পেয়ে থাকল হেনরিখ ক্ল্যাসেন এবং ডেথ ওভারে মার্কো জ্যানসেনের ব্যাটে ভর করে। শুরুতে সেভাবে ব্যাটে বলে করতে না পারলেও ক্ল্যাসেন ঝড় তুলে দিলেন বরুণ চক্রবর্তীকে এক ওভারে তিনটে ছক্কা সমেত ২৩ রান খরচ করে। সেই মোমেন্টাম পেয়ে যাওয়ার পর কার্যত ঝড়ের তান্ডব চালাল প্রোটিয়াজরা।
ক্ল্যাসেন ২২ বলে ৪১ করে আউট হন অর্শদীপ সিংয়ের বলে। ঠিক যে সময় মনে হচ্ছিল, ভারতের জয় সহজেই আসতে চলেছে, সেই সময় আবার ব্যাট হাতে তুফান তুলে যান মার্কো জ্যানসেন। পাঁচ পাঁচটা বিশাল ছক্কায় ১৬ বলে হাফসেঞ্চুরি করে অসম্ভব আশা জাগিয়ে তুলেছিলেন। ক্ল্যাসেন, জ্যানসেন তান্ডবে একদম দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ২৫ রান। টি২০-র যুগে যা কার্যত অসম্ভব নয়।
প্ৰথম ২ বলে ৭ উঠে যাওয়ার পর সমীকরণ দাঁড়ায় শেষ চার বলে ১৮ রান। তবে তৃতীয় বলে অর্শদীপ বিধ্বংসী মেজাজে থাকা জ্যানসেনকে আউট করে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেন।
তার আগে ভারতের হয়ে ব্যাট হাতে তান্ডব চালিয়ে শতরান করে যান তিলক ভার্মা। টসে জিতে ভারতকে শুরুতে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকান নেতা আইডেন মার্করাম। আর ক্রিজে নেমে ধুন্ধুমার বাঁধিয়ে দিয়েছিল ভারত। সঞ্জু স্যামসন দ্বিতীয় টি২০-র মতই ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ডাক করে ফেরেন। টানা দুটো সেঞ্চুরির পর টানা দুটো ডাক- বিশ্ব ক্রিকেটে অনন্য নজির স্থাপনের পরেও ভারতের শুরুটা দুর্ধর্ষ হয়েছিল।
অভিষেক শর্মা এবং ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া তিলক ভার্মা হল্লা মাচিয়ে দিয়েছিলেন। পরপর অল্প রানে আউট হওয়া অভিষেক চাপে ছিলেন। বুধবার সেই চাপ উড়িয়েই ব্যাট হাতে প্রোটিয়াজ বোলারদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে শুরু করেছিলেন অভিষেক। ভারত পাওয়ার প্লেতেই ৭০/১ তুলে ফেলেছিল।
শুরুতে কিছুটা ধীরে সুস্থে ব্যাট করছিলেন তিলক। অন্যপ্রান্তে থাকা অভিষেক ছিলেন সংহারক মূর্তিতে। তবে উড়তে থাকা এই জুটিতে ভাঙন ধরান কেশব মহারাজ। ১০৭ রানের পার্টনারশিপ খতম হয় মহারাজের কুশলী বোলিংয়ে। স্টেপ আউট করে হাঁকাতে গিয়েছিলেন অভিষেক শর্মা। স্ট্যাম্পড হয়ে ফিরতে হয়ে তাঁকে ২৫ বলে ৫০ করে।
হঠাৎ করেই উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ভারতের রান তোলার গতিতেও আচমকা যেন হ্যাঁচকা টান পড়ে যায়। মিডল ওভারে কেশব মহারাজ এবং সিমলানে অনবদ্য বোলিংয়ে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া মাত্র দু ওভারের ব্যবধানে পরপর ফিরে যাওয়ায় একসময় ১৩৭/৪ হয়ে যায় টিম ইন্ডিয়া।
ব্যাকফুটে চলে যাওয়া ভারত পুনরায় ম্যাচে ফেরে তিলক ভার্মার ব্যাটে ভর করে। ৩২ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করা তিলক সেঞ্চুরিতে পৌঁছন আর মাত্র ২০ বল খেলার ফাঁকেই। রিঙ্কু-তিলক জুটি ৫৮ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করে। রিঙ্কু এদিন মোটেও প্রত্যাশিত ছন্দে ছিলেন না। ব্যাটে মিডল করতে সমস্যায় পড়েছেন বারবার। আন্দে সিমলানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে রিঙ্কু কোনওরকমে ১৩ বলে ৮ করেন।
জুটির পুরো রানই আসে তিলক ভার্মার ব্যাট থেকে। শেষদিকে অভিষেক ঘটানো রামনদীপের ৬ বলে ১৫ রানের ক্যামিও ভারতকে ২১৯ পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। তিলক ভার্মা ৫৬ বলে ১০৭ করে অপরাজিত থাকেন। ৮টা বাউন্ডারির পাশাপাশি ৭টা ওভার বাউন্ডারিও হাঁকিয়েছেন তিনি।