India vs South Africs 4th T20I Match Report, Pitch Report(DP World Wanderers Stadium), Weather Report: দক্ষিণ আফ্রিকা যেন বাংলাদেশ। ঠিক যেন পাড়ার কোনও ক্রিকেট ম্যাচ হচ্ছে মহল্লায়। ব্যাটার একতরফা চার-ছক্কা হাঁকিয়ে যাচ্ছেন। আর বোলাররা প্রত্যেক বলের শেষে দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন। কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হায়দরাবাদের টি২০ এমন দৃশ্য দেখিয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। সেই দৃশ্যই এবার ফিরল দক্ষিণ আফ্রিকায়।
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেই আইডেন মার্করামের প্রবল প্রতাপশালী টি২০ দলকে বাংলাদেশ বানিয়ে ভারত কচুকাটা করল জোহানেসবার্গে। দু-দিন আগে সেঞ্চুরিয়ন দেখেছিল ২২৩ রানের ম্যাচে ভারতীয় ব্যাটারদের উদ্দাম দাপট। আর সেই ম্যাচের ঘা শুকোতে না শুকোতেই ভারত এবার আরও তেড়েফুঁড়ে নামল। রেকর্ড বই ওলট পালট হয়ে গেল নিমেষে।
পিষে দিল, নাকি দুমড়ে মুচড়ে দিল বলা ভালো! নাকি ক্ষত বিক্ষত, থেঁতলে দেওয়া হল প্রতিপক্ষকে! উপযুক্ত বিশেষণ খুঁজতে গিয়ে আপাতত মাথায় হাত ক্রিকেট লিখিয়েদের। ছিনিমিনি খেলা হল ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে। প্রোটিয়াজ বোলারদের পাড়ার বোলার বানিয়ে দুজনেই হাঁকিয়ে গেলেন শতরান। দ্বিতীয় উইকেটে গড়লেন ২১০ রানের পার্টনারশিপ।
ছক্কায় ছক্কায় অতিষ্ট করে ভারত গোটা ইনিংসে হাঁকাল ২৩ ছক্কা। এবং ১৭ বাউন্ডারি। এবং প্রতিবেদনের ওপরের প্রত্যেক লাইনই আসলে রেকর্ড।
ভারত স্কোরবোর্ডে ২৮৩ তোলার পরে দেখার ছিল প্রোটিয়াজদের ইনিংস কতটা প্রতিরোধ জানান দিতে পারে। তবে সেই প্রতিরোধের দংশন শেষ হয়ে গিয়েছিল প্ৰথম তিন ওভারেই। অর্শদীপ সিংয়ের ওপেনিং স্পেল সমলাতে না পেরে দক্ষিণ আফ্রিকা ১০/৪ হয়ে যাওয়ার পর। নিজের প্ৰথম ওভারেই অর্শদীপ রেজা হেন্ড্রিক্সকে ফিরিয়ে দেন।
দ্বিতীয় ওভারের শেষ দুই বলে অর্শদীপ ক্যাপ্টেন মার্করাম এবং ক্ল্যাসেনকে বাড়ি পাঠিয়ে ম্যাচে খতম করে দেন। হার্দিক পান্ডিয়া ই ইনিংসের দুই নম্বর ওভারে অন্য ওপেনার রায়ান রিকেলটনকে ফেরানোর পর পুরো ম্যাচটাই হয়ে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২০ ওভার কোনওরমে টিকে থেকে পরাজয়ের মাত্রা কমানোর চ্যালেঞ্জ।
দক্ষিণ আফ্রিকা ১০/৪ থেকে কোনওরকমে মান বাঁচানোর মত স্কোরবোর্ডে ১৪৮ তোলার ফাঁকেই ১০ উইকেট হারাল। সেই ট্রিস্টান স্টাবসের ২৯ বলে ৪৩ এবং ডেভিড মিলারের ২৭ বলে ৩৬ রানের সুবাদে দলগত স্কোর ১০০ পেরোল। শেষদিকে আবারও ব্যাটিং দক্ষতা দেখিয়ে গেলেন মার্কো জ্যানসেন (১২ বলে ২৯)। সিরিজের শেষ ম্যাচে ভারত জয় পেল ১৩৫ রানের বিশাল ব্যবধানে। সিরিজ হল ৩-১। অর্শদীপের ৩ উইকেটের পাশাপাশি দুটো করে উইকেট শিকার বরুণ চক্রবর্তী এবং অক্ষর প্যাটেলের।
যাইহোক, টি২০-র ইতিহাসে শুক্রবারের আগে পর্যন্ত কোনও ম্যাচে একই সঙ্গে দুই ব্যাটার এক ইনিংসে শতরান হাঁকাননি। সঞ্জু স্যামসন শতরান হাঁকালেন ৫১ বলে। তিলক ভার্মা নিলেন আরও ১০ বল কম, ৪১ বল। কয়েকদিন আগেই সিরিজের প্রথম টি২০-তে ফিল সল্ট-এর সঙ্গে একই আসনে বসেছিলেন সঞ্জু টানা দুটো টি২০ ইনিংসে জোড়া শতরান করে।
তিলক ভার্মা মাত্র দুদিনের ব্যবধানে সঞ্জু-সল্টকে ছুঁয়ে ফেললেন ৪১ বলে দ্রুততম শতরানের মাধ্যমে। সঞ্জু এই নিয়ে একই বছরে তিনটে টি২০ শতরান হাঁকালেন। একই ক্যালেন্ডার বর্ষে তিনটে টি২০ শতরান হাঁকানোর নজির আগে ছিল না। সেটাই একমাত্র ব্যাটার হিসাবে গড়ে ফেললেন সঞ্জু।
টসে জিতে ব্যাট করতে নামা থেকে ভারতের পুরো ইনিংসই ছিল যেন হাইলাইটস। শুরু থেকেই মারমার কাটকাট ব্যাটিং। অভিষেক শর্মা তার আগে ১৮ বলে ৩৬ রানের ক্যামিওয় ট্রেলার দেখিয়ে গিয়েছিলেন। ২০০ স্ট্রাইক রেটে তিনিই চারটে ওভার বাউন্ডারির সঙ্গে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান।
তারপর থেকে পুরোটাই সঞ্জু, তিলকের নামে। সঞ্জু শেষ পর্যন্ত ৯ ছক্কার সাহায্যে ৫৬ বলে ১০৯-এ অপরাজিত রইলেন। তিলক ভার্মা ৪৭ বলে হাঁকালেন ১২০। ৯টা বাউন্ডারির পাশে ১০টা ওভার বাউন্ডারি তাঁর নামের পাশে। ব্যাট করলেন অবিশ্বাস্য ২৫৫.৩২ স্ট্রাইক রেটে।