টানা জাতীয় দলের সঙ্গে হিল্লি-দিল্লি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তবে নিয়মিত দলের কেউ একজন অনুপস্থিত থাকলেও একমাত্র প্ৰথম একাদশে খেলার সুযোগ জুটছে। এই সংশয় মানসিকভাবে দীর্ণ করে দিয়েছে ঈশান কিষানকে। এই কারণেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার শুরু হতে চলা টেস্ট সিরিজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন ঈশান কিষান।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জাতীয় দলের সঙ্গে গত এক বছর ধরে ক্রমাগত ভ্রমণ করে চলেছেন তিনি। এতেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিরতি চেয়ে নিয়েছেন বোর্ডের কাছ থেকে। টিম ম্যানেজমেন্টের তরফে নির্বাচকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলা হয়। তারপরেই সাগ্রহে ঈশানকে ছুটি দিতে রাজি হয়ে যান নির্বাচকরা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে বোর্ডের এক সূত্র জানিয়েছেন, "ও (ঈশান) টিম ম্যানেজমেন্টকে জানিয়েছিল মানসিকভাবে ওঁকে ক্লান্তি গ্রাস করছিল। সেই কারণেই কয়েকদিনের জন্য ক্রিকেট থেকে।দূরে কাটাতে চায় ও। যাতে সকলেই রাজি হয়েছেন।"
এর আগে বোর্ডের তরফে যে প্রেস বিবৃতি জারি করা হয়েছিল তাতে সচিব জয় শাহ জানিয়েছিলেন, "দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজ থেকে ব্যক্তিগত কারণে ছুটি চেয়েছিলেন ঈশান। সেই অনুরোধ মেনেই টেস্ট স্কোয়াড থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচক কমিটি পরিবর্ত হিসাবে কেএস ভরতের নাম ঘোষণা করেছে।"
চলতি বছরের জানুয়ারির ৩ তারিখ থেকে প্রত্যেক স্কোয়াডে ছিলেন ঈশান কিষান। টানা ক্রিকেটের মধ্যেই ছিলেন। বিরতিহীনভাবে। টানা জাতীয় দলে সেট আপের মধ্যে থাকলেও পর্যাপ্ত গেম টাইম পাননি তারকা। বিশ্বকাপে শুভমান গিল শারীরিক অসুস্থতা কাটিয়ে ওঠার আগে প্ৰথম দুই ম্যাচেই ঈশান কিষান খেলেছিলেন। বিশ্বকাপে অবশ্য উইকেটকিপার হিসেবে ছিলেন কেএল রাহুল। বিশ্বকাপের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্ৰথম তিনটে টি২০ ম্যাচে খেলে দুটো হাফসেঞ্চুরিও হাঁকান। তবে শেষ দুই ম্যাচে তাঁকে আর নামানো হয়নি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় টি২০ সিরিজে তিনি থাকলেও ঈশানকে বসিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট খেলায় জিতেশ শর্মাকে। টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে দলের আন্তঃস্কোয়াড ম্যাচে তাঁর খেলার কথা ছিল। তবে তিনি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
চলতি বছরে ভারতের ক্রিকেট সূচি আঁটোসাঁটো ছিল। জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তিনটে করে টি২০ এবং ওয়ানডে ম্যাচের মাধ্যমে ভারত বছর শুরু করে। এরপরে নিউজিল্যান্ডও ভারতে এসে তিনটে করে টি২০ এবং ওয়ানডে খেলে।
ফেব্রুয়ারির ৯ থেকে মার্চের ২২ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট স্কোয়াডে ছিলেন ঈশান। তবে একটি ম্যাচেও খেলার সুযোগ পাননি। টিম ম্যানেজমেন্ট কেএস ভরতকে খেলায়। তিনটে ওয়ানডের মধ্যে তিনি খেলেন মাত্র একটিতে।
এরপরে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স-এর জার্সিতে গোটা আইপিএল সিজন খেলেন তিনি। এরপরে নির্বাচক কমিটি দ্বিতীয় বাছাই উইকেটকিপার হিসাবে তাঁকে নির্বাচিত করে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের জন্য। এরপরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ট্যুর হয় জুলাই ১২ থেকে অগাস্ট ১৩ পর্যন্ত। সেই সিরিজে তিনি দুটো টেস্ট, তিনটে করে ওয়ানডে এবং টি২০ খেলেন।
এক সপ্তাহ পর ঈশানকে পাঠানো হয় শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপ খেলতে। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের ঠিক আগেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজেও তিনি ছিলেন।