সেঞ্চুরিয়নে প্ৰথম টেস্টে ধুয়েমুছে গিয়েছে ভারত। মাত্র তিনদিনে খতম হয়ে গিয়েছে টিম ইন্ডিয়ার যাবতীয় প্রতিরোধ। আর ভারতের হারের ময়নাতদন্তে উঠে এসেছে উত্তুঙ্গ ব্যাটিং ব্যর্থতা। এবং সেই সঙ্গে বোলিং বিভাগের দুর্বলতা। অনেক আশা করে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের হাতে ডেভিউ ক্যাপ তুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি এবং শার্দূল ঠাকুর ভারতকে কার্যত ডুবিয়ে দিয়েছেন।
কৃষ্ণ-ঠাকুরের যুগলবন্দি কাজে আসেনি। দুজনেই চরম ব্যর্থ। তাই এবার কেপ টাউনে ৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলা দ্বিতীয় টেস্টে ডেকে নেওয়া হল আবেশ খানকে। কয়েক দিন আগেই আবেশ খান সীমিত ওভারের সিরিজ খেলেছেন দক্ষিণ আফ্রিকায় টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে। বর্তমানে এ দলের হয়ে খেলছেন দক্ষিণ আফ্রিকান এ দলের বিপক্ষেই। নজরও কেড়েছেন। বিপদের মুখে তাঁর-ই শরণাপন্ন হল টিম ম্যানেজমেন্ট।
বোর্ডের পাঠানো প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মহম্মদ শামির জায়গায় আবেশ খানকে টেস্ট স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। মহম্মদ শামিকে টেস্ট স্কোয়াডে রাখা হয়েছিল। তবে ফিটনেস সংক্রান্ত শর্ত-ও জুড়ে দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের আগে ফিট না হয়ে উঠতে পারায় শামি যে টেস্ট সিরিজে খেলতে পারবেন না, আগেই বোর্ডের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে এতদিন পরিবর্ত নেওয়ার পথে হাঁটেনি টিম ম্যানেজমেন্ট। এবার সেঞ্চুরিয়নে লজ্জার হারের পরেই প্যানিক বাটন প্রেস করে ফেলল টিম ইন্ডিয়া। আপদকালীন অবস্থায় তড়িঘড়ি ডেকে নেওয়া হলে আবেশ খানকে।
আবেশ খান দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে বেশ সফল ছিলেন। প্ৰথম ম্যাচে অর্শদীপ সিংয়ের ৪ উইকেটের সঙ্গে তাঁর নামের পাশেও ছিল ৩ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকান পিচে তিনি সফল হতে পারেন, এমনটা ধরেই ডেকে নেওয়া হল তাঁকে।
আবেশ খান স্কোয়াডে থাকলেও তিনি যে কেপ টাউন টেস্টে সুযোগ পাবেন, এমন সম্ভবনা কম। দল এখনও নন-পারফর্মার প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে ব্যাক করবে। এমনটাই সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা, "মানছি ও খুব একটা লাল বলের ক্রিকেট খেলেনি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা দলেও এরকম অনভিজ্ঞ তিন ক্রিকেটার রয়েছে। ওঁরা কিন্তু দেখিয়ে দিয়েছে, এই পিচে কীভাবে খেলতে হয়। এটা মোটেই অভিজ্ঞতার প্রশ্ন নয়। পুরো বিষয়টিই মানসিকতার। যদি তুমি ভেবেই নাও তুমি বেশি ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খেলনি, তাহলে সমস্যা হবে।”
“তোমাকে প্রাপ্ত সুযোগের জন্য কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। প্রসিদ্ধ কিন্তু প্রমাণ করেছে, ওঁর মধ্যে যথেষ্ট সম্ভবনা রয়েছে। বেশ কিছুদিন ও দলের সঙ্গে রয়েছে। অবশ্যই ও চাপে ছিল। নার্ভাস হয়েছে। এই ফরম্যাটে ওঁর উন্নতির অবকাশ রয়েছে। আমরা সকলে ওঁকে ব্যাক করব। ক্রিকেটের প্রতি ওঁর চরিত্র বেশ সদর্থক যেটা আমাদের সাহায্য করবে ভবিষ্যতে।”
রোহিত অবশ্য বোলারদের ব্যর্থতা স্বীকার করে নিচ্ছেন। জসপ্রীত বুমরা সেভাবে বাকি তিন বোলারের থেকে সমর্থন পাননি। ক্যাপ্টেন জানিয়েছেন, “এটা মোটেই ৪৫০ রানের পিচ ছিল না। আমরা অনেক রান উপহার দিয়েছি। এটা অবশ্য হয়েই থাকে। একজন বোলারের ওপর নির্ভর করে টেস্ট খেলা যায় না। বাকিদেরও নিজস্ব ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রতিপক্ষ দলের থেকে এই বিষয়ে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।”
“বুমরা দারুণ বল করেছে। ওঁকে স্রেফ অন্য প্রান্ত থেকে সাহায্যের।প্রয়োজন ছিল। যেটা ও পায়নি। ওঁরা চেষ্টা করেছে। তবে সফল হয়নি। এই ধরণের ম্যাচ অনেক কিছু শিক্ষা দিয়ে যায়, কীভাবে বোলিং বিভাগ একটা দল হিসেবে পারফর্ম করতে পারে।"