শ্রীলঙ্কা: ২৪৮/৭
ভারত: ১৩৮/১০
IND vs SL 2024 3rd ODI Match Report: পাথিরানা নেই। দুষ্মন্ত চামিরা নেই। নুয়ান থুসারা নেই। দিলশান মধুশঙ্কা নেই। এমনকি প্ৰথম ওয়ানডের পর ছিটকে গিয়েছেন দলের তারকা অলরাউন্ডার হাসারাঙ্গাও। ভাঙা চোরা এই দল নিয়েই ইতিহাস গড়ে ফেলল শ্রীলঙ্কা। ভারতকে কাঁদিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল শ্রীলঙ্কা। ২৭ বছর ভারতের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ জিততে পারেননি লঙ্কানরা। সেই ইতিহাস মুছে কলম্বোর প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে নতুন যুগের সূচনা করে ফেললেন দ্বীপরাষ্ট্র-এর ক্রিকেটাররা।
নতুন চেহারার ভারতীয় দল। রিয়ান পরাগদের মত তরুণ তুর্কির অভিষেক হয়েছে তৃতীয় ওয়ানডেতে। রবীন্দ্র জাদেজা নামক দীর্ঘদিনের সৈনিককে ওয়ানডে থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। হার্দিক পান্ডিয়াকে পরোক্ষে বলে দেওয়া হয়েছে, ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করে ওয়ানডে স্কোয়াডে ফিরে এস। সূর্যকুমার যাদবকে ওয়ানডে মশলা হিসাবে ভাবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে গত বিশ্বকাপের পরেই। জসপ্রীত বুমরাকে বিশ্রামে পাঠানো হয়েছিল। অর্শদীপকে ভবিষ্যতের ওয়ানডের মুখ হিসাবে দেখানোর ভাবনা চালু হয়ে গিয়েছে গম্ভীর জমানায়। পুরোনো মুখ বলতে কোহলি-রোহিত-সিরাজ-কুলদীপ। তবু এই হেভিওয়েট দলই ভেঙে পড়ল শ্রীলঙ্কার স্পিনের ফাঁদে পড়ে। একবার নয়, দু-বার নয়, তিন তিনবার।
কোচ হিসেবে অভিষেক সফরে এসেই টি২০ সিরিজ দখল করেছিলেন। টি২০ সিরিজে ভারত হোয়াইটওয়াশ জয় উপভোগ করলেও ক্ষণে ক্ষণে দুর্ভাবনা ছড়িয়ে দিয়েছিল। টি২০ সিরিজের অনিরূপদ্রব এই জয়ের পর ওয়ানডে সিরিজে যে লঙ্কানরা কার্যত দুরমুশ করে হারাবে ভারতকে, ভাবাই যায়নি।
প্ৰথম ওয়ানডেতেই একমাত্র লড়াই দিয়েছিল ভারত। জেতা ম্যাচ হারাকিরি করে ড্র করে বসেছিলেন সুন্দর-অর্শদীপরা। তারপর শেষ দুই ম্যাচে ভারতকে কার্যত দাঁড়াতে দেয়নি।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে ধ্বংস করে দিয়েছিল জেফ্রি ভ্যান্ডারসের ঘূর্ণি। সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচেও সেই একই চিত্র। প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কার প্রায় আড়াইশো তুলে দেওয়া। তারপর লঙ্কান স্পিনারদের দমবন্ধ করে দেওয়া।
রোহিত শর্মার ফুলঝুরি ছোটানো টি২০ স্ট্রাইক রেট সমেত ব্যাটিং। তারপর তিনি ফিরতেই ফ্লাডলাইটে স্লো স্কিডিং সারফেসে নাভিশ্বাস উঠে যাওয়া, তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়া- টানা তিন ম্যাচ দেখে ফেলল এই দৃশ্য। একটা ম্যাচ হারলে অঘটন। টানা তিনটে ম্যাচ বিপর্যয়ের কী ব্যাখ্যা দেবেন গম্ভীর?
আগের ম্যাচের লঙ্কান নায়ক জেফ্রি ভ্যান্ডারসে বুধবার যখন ১৩তম ওভারে বোলিং করতে এলেন, তখন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের ধড়-মুন্ড আগেই আলাদা হয়ে গিয়েছিল। পরে ছিল ল্যাজটুকু। ২৪৯ রানের টার্গেট চেজ করতে নেমে তখন ভারত ধসে গিয়েছিল ৮২/৬-এ। বাকি চার উইকেটের মধ্যেই ভ্যান্ডারসে তুললেন জোড়া উইকেট। এবার লঙ্কানদের হয়ে বল হাতে ঘূর্ণির ত্রাস ছড়ালেন দ্বিমুথ ওয়ালেলেগে। ৫ উইকেট তাঁর নামের পাশে।
ভারতকে সামনে পেলেই ব্যাটে-বলে আগুন ছড়ানোর অভ্যেস করে ফেলেছেন ওয়েললেগা। চলতি সিরিজে ব্যাটে-বলে নায়ক তিনিই।