ভারত: ১৩৭/৯ এবং ৪/০
শ্রীলঙ্কা: ১৩৭/৮ এবং ২/২
IND vs SL 2024 3rd T20I Match Report: ২৮ বলে দরকার ২৮ রান। হাতে ৯ উইকেট। এই ম্যাচ হেরে যাওয়া সম্ভব? সম্ভব। যদি সেই দলের নাম হয় শ্রীলঙ্কা। প্রথম ম্যাচে ৩১ রানে ৮ উইকেট খুঁইয়ে ম্যাচ হেরেছিল লঙ্কানরা। দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে ৩০ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকেই ছিটকে গিয়েছিলেন আশালঙ্কার দল। শেষ ম্যাচ ছিল নিয়ম রক্ষার। সেই ম্যাচে ১৩৮ টার্গেট চেজ করে শ্রীলঙ্কা ১৫ ওভার পর্যন্ত মাত্র ১ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কা শেষমেশ ২০ ওভারে তুলল ১৩৭/৮। পাল্লাকেলের কার্যত নিয়মরক্ষার ম্যাচ-ই যে এভাবে চরম রোমাঞ্চ নিয়ে হাজির হবে, কে ভাবতে পেরেছিল!
২৮ বলে ২৮ রানের সমীকরণ নেমে এসেছিল শেষ দুই ওভারে ৮ রানে। তবে তখন রক্তের স্বাদ পেয়ে গিয়েছে ভারত। ১৭ তম ওভারে হাফডজন ওয়াইড সমেত ১২ রান খরচ করে যান খলিল আহমেদ। এরপরে স্রেফ জুয়া খেলে যান সূর্যকুমার যাদব।
স্লো স্পিনিং ট্র্যাকে ১৮ তম ওভারে রিঙ্কু এবং শেষ ওভারে কোটার ওভার বাকি থাকা সিরাজকে নয়। বলে হাতে তুলে নিলেন ক্যাপ্টেন স্কাই নিজেই। আর এই জুয়ায় চেপেই হোয়াইটওয়াশ সম্পন্ন ভারতের। রিঙ্কু ১৯তম ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ২ উইকেট তুললেন। সূর্যকুমারকে শেষ ওভারে ডিফেন্ড করতে হত ৫ রান। শেষ বলে জয়ের সমীকরণ দাঁড়ায় ৩ রানের। তবে ক্রিজে থাকা চামিন্দু বিক্রমাসিংহে দু রানের বেশি তুলতে পারেননি।
টাই ম্যাচ গড়াল সুপার ওভারে। এবং সুপার ওভারের ১২ বলের মধ্যে চার বলেই খেল খতম। প্ৰথম তিন বলেই জোড়া উইকেট খুঁইয়ে শ্রীলঙ্কা তুলেছিল মাত্র ২ রান। জবাবে শুভমান গিল প্ৰথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দেওয়ায় ভারত জিতে যায়।
ভারত কুড়িয়ে বাড়িয়ে স্কোরবোর্ডে কোনওরকমে ১৩৭ খাড়া করেছিল। জবাবে লো স্পিনিং ট্র্যাকে ওপেনিং জুটিতেই শ্রীলঙ্কা ৫৮ তুলে দিয়েছিল। নবম ওভারে রবি বিশ্নোই ফর্মে থাকা পাথুম নিশঙ্কাকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর দুই কুশল- মেন্ডিস এবং পেরেরা মিলে আরও ৫২ রান যোগ করে সিরিজে ব্যবধান কমানো প্রায় নিশ্চিত করে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ক্রিকেটের মহাযজ্ঞ বসছে ভারত-বাংলাদেশে! আগামী বছরেই তুলকালাম টুর্নামেন্টের আয়োজক দুই দেশ
তবে শেষ পাঁচ ওভারে যে ম্যাচ এভাবে মোচড় নিয়ে হাজির হবে, ভাবা যায়নি। কুশল মেন্ডিস আউট হওয়ার পরেও জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার টার্গেট ছিল আতুপুতু। ২৮ বলে মাত্র ২৮ রান। খলিল আহমেদ ১৮ তম ওভারে যেন শ্রীলঙ্কাকে জিতিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই বোলিং করছিলেন। ১২ রান বিলিয়ে দেন লো স্কোরিং ম্যাচে। তবে শেষ দুই ওভারে রিঙ্কু-সূর্যকুমার ব্যাট নয়, বল হাতে যেভাবে নাভিশ্বাস তুলে দিলেন লঙ্কানদের, তাতে ভারত যে সত্যি বর্তমানে বিশ্বের একনম্বর দল, তা আবারও প্রমাণ হয়ে যায়।
তার আগে ভারতকে প্ৰথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। চার বদল ঘটিয়ে দল নামিয়েছিল ভারত। শুভমান গিল যেমন ফিরেছিলেন তেমন সুযোগ পেয়েছিলেন খলিল আহমেদ, ওয়াশিংটন সুন্দর, শিভম দুবেরা। তবে পাল্লাকেলের ঘূর্ণি ট্র্যাকে শুরু থেকেই বিপদের মুখে পড়ে ভারত। শক্তিশালী ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতেই ধসে গিয়েছিল। পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারানোর পর নবম ওভারের আগেই ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ৪৮/৫-এ।
এরপরে দলের হাল ধরেন রিয়ান পরাগ এবং শুভমান গিল। দুজনে সিঙ্গলস, ডাবলস নিয়ে দলের স্কোর এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেন। দুজনে মিলে ৫৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছিলেন। তবে একই ওভারের পরপর দুজনে আউট হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ধাক্কা খায় ভারতের বড় রান গড়ার স্বপ্ন। এরপরে ওয়াশিংটন সুন্দর শেষ দিকে রবি বিশ্নোইয়ের সঙ্গে কোনওরকমে ৩২ রানের পার্টনারশিপে ভারতকে ১৩৭ পর্যন্ত পোঁছে যাওয়া নিশ্চিত করেন।