Virat Kohli-Moahmmed Siraj sledging: শ্রীলঙ্কার কুশল মেন্ডিস ভারতের মহম্মদ সিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় পালটা সেই ঝাল মেটাতে চরিথ আসালাঙ্কাকে আক্রমণাত্মক ঢঙে বিদায় জানালেন বিরাট কোহলি। বুধবার ভারত-শ্রীলঙ্কা তৃতীয় একদিনের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার ইনিংসের শুরুতে মহম্মদ সিরাজ এবং কুশল মেন্ডিসের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এর পরেই সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে বিরাট কোহলি আক্রমণাত্মক ঢঙে বুঝিয়ে দেন, শ্রীলঙ্কার ব্যাটার ব্যাপারটা ঠিক করেননি।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত রীতিমতো স্বপ্নের সূচনা করেছিল। মহম্মদ সিরাজ ম্যাচের প্রথম বলেই ফর্মে থাকা পাথুম নিশাঙ্কাকে আউট করেন। তবে, বুধবার সিরিজের নির্ধারক ম্যাচে তেমন কোন উত্তেজনা ছিল না। কারণ, সিরাজের বলে বাউন্ডারি মারেন নিশাঙ্কা। প্রথম তিন ওভারে শ্রীলঙ্কার স্কোর দাঁড়ায় 0/২২ পড়ে। সিরাজের দ্বিতীয় স্পেলেও অভিষ্কা ফার্নান্দোর দুটি ছক্কা এবং একটি বাউন্ডারি মারেন। সিরাজের পারফরম্যান্স এই ম্যাচে একদমই ভালো হয়নি। মনে হচ্ছিল যেন তিনি স্রেফ ছুটি কাটাতে এসেছেন।
আরও পড়ুন- মাঠে গাফিলতি, পন্থের ওপর ক্ষেপে লাল রোহিতও! লজ্জার তৃতীয় ম্যাচে বেনজির বিতর্ক, দেখুন ভিডিও
আর, এর ফলে যেন সিরাজের মধ্যে একটা হতাশার জন্ম নেয়। তিনি শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চরিথ আসালাঙ্কার সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। ৩৯তম ওভারে সিরাজকে কুশল মেন্ডিসের উদ্দেশে কিছু বলতে দেখা যায়। যা শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা ভালোভাবে নেয়নি। দু'জন ব্যাটার একে অপরের কাছে যান। সিরাজ মেন্ডিসের দিকে তাকিয়ে ড্রেসিংরুমের দিকে কিছু ইঙ্গিত করেন। মেন্ডিস, সেই সময় ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন। আর, শ্রীলঙ্কার স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৮৩। মেন্ডিসকে দেখা যায় ভারতীয় পেসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে। আর, সিরাজ তাঁর রান আপের দিকে ফিরে যান। মেন্ডিসের শারীরিক ভাষা বলে দিচ্ছিল যে তিনি রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন।
সতীর্থকে এভাবে বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে দেখে বিরাট কোহলিও ব্যাপারটার মধ্যে ঢুকে পড়েন। তবে, মেন্ডিস নয়। তাঁর টার্গেট হয়ে ওঠে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চরিথ আসালাঙ্কা। তিনি ওপেনার ফার্নান্দোর উইকেট পতনের পর ব্যাট করতে এসেছিলেন। সেঞ্চুরির চেয়ে চার রান কমে আউট হন ফার্নান্দো। ভারতের, সেই সময় একটি উইকেটের খুব প্রয়োজন ছিল। অভিষেক ম্যাচে নামা রিয়ান পরাগ ছাড়া আর কোনও বোলারই টিম ইন্ডিয়াকে সাফল্য দিতে পারেননি। আসালঙ্কা ১০ রানে ভারতীয় বোলারের ফাঁদে পড়েন। কোহলি সেই সময় রীতিমতো গর্জন করে ওঠেন। 'বেন স্টোকস' মার্কা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন, সিরাজের ঘটনাটি তিনি ভালোভাবে নেননি।
১৭৩/১ থেকে, শ্রীলঙ্কা শেষ পর্যন্ত ২৪৮/৭-এ থেমে যায়। তবে, তাতেও ভারতের সামনে মোটামুটি বড় লক্ষ্যই রেখে যান শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা। তবে, শীর্ষ তিনজন বাদে, শ্রীলঙ্কার কেউই ম্যাচে বিরাট অবদান রাখতে পারেননি। ভারত শেষ ১২ ওভারে দুর্দান্ত খেলে লঙ্কানদের ২৫০-এর নীচে স্কোর রাখতে বাধ্য করে।
তবে ভারতের এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তিন ম্যাচে তৃতীয়বারের মত, ভারতের ব্যাটিং শ্রীলঙ্কার স্পিনারদের কাছে আত্মসমর্পণ করে। বর্তমান টি২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা মাত্র ১৩৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। যার ফলে, শ্রীলঙ্কা ১১০ রানের বিরাট জয় পায়। দ্বিপাক্ষিক একদিনের সিরিজে ১৯৯৭ সালের ২৭ বছর পর এই প্রথমবার ভারতের বিরুদ্ধে জিতল শ্রীলঙ্কা।
ম্যাচে রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল ওপেন করতে এসে ৩৭ রান করেন। যা ছিল মেন-ইন ব্লু দলের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান। গিল একটা ভয়ংকর শট মেরে এবং রোহিত ক্যাচ আউট হন। তৃতীয়বারের মত এই সিরিজে এলবিডব্লিউ হন কোহলি। তিনি মাত্র ২০ রান করেন। চারটি বাউন্ডারি মেরেছেন কিংবদন্তি এই ব্যাটার। শ্রীলঙ্কার হয়ে, ফের দুনিথ ওয়েলালেজ স্পিনের ভেলকি দেখান। ২৭ রানে ৫ উইকেট নেন। ভারতের বিপক্ষে পাঁচটি ওয়ানডে ম্যাচে এটা এক ম্যাচে তাঁর দ্বিতীয় পাঁচটি উইকেট শিকার।