আড়াই দিনেই খেল খতম। লক্ষ্য ছিল মাত্র ৯০ রান। ২ উইকেট হারিয়ে সেই রান তুলে দিল অস্ট্রেলিয়া। কার্যত একপেশেভাবে ভারতকে আট উইকেটে প্রথম টেস্টে হারিয়ে টুর্নামেন্টে অভিযান শুরু করল অজিরা। প্রথম ইনিংসে কোহলির ৭৪ রানে ভর করে ভারত স্কোরবোর্ডে ২৪৪ তোলে। জবাবে অস্ট্রেলিয়াকে ১৯১ রানে আটকে রেখে ৫৩ রানের লিড নেয় ভারত। তবে তৃতীয় দিনের সকাল পুরো হিসাব উল্টে দিল। ৫৩ রানের ফার্স্ট ইনিংস স্কোর সমেত ভারত অস্ট্রেলিয়ার কাছে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছুড়েছিল ৯০ রানের। ম্যাথু ওয়েড (৩৩) ও জো বার্নস (৫১) জয়ের রাস্তা সহজ করে দেন দলের।
৩৬/৯ রানে ইনিংস শেষ করার পর ভারত টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে নিজেদের সর্বনিম্ন স্কোরের কলঙ্কের নজির গড়ল শনিবার। মাত্র এক ঘন্টার মধ্যেই তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ল ভারতের ইনিংস। কামিন্স-হ্যাজেলউডের বিরুদ্ধে ন্যূনতম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারল না ভারত।
আরো পড়ুন: ৩৬ রানে খতম কোহলিরা, এডিলেডে মহাকলঙ্ক টিম ইন্ডিয়ার
যাইহোক, এর আগে ভারতের সর্বনিম্ন রানের নজির ছিল ৪২। ১৯৭৪ সালে এই কুখ্যাত রেকর্ড গড়ে ভারত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ভারতীয় ক্রিকেটের অলিন্দে এই ঘটনা এখনো পরিচিত ‘সামার অফ ৪২’ নামে।
ভারতের দুর্ভাবনা বাড়িয়ে মহম্মদ শামির সিরিজ প্রায় শেষ হয়ে গেল এদিন সকালেই। কামিন্সের শর্ট বল আছড়ে পড়ে শামির কব্জিতে। তারপরেই খেলা থামিয়ে উঠে যেতে বাধ্য হন তিনি। সেখানেই ভারতের ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটে। মনে করা হচ্ছে হাড়ে চিড় ধরেছে। ৫৩ রানের ফার্স্ট ইনিংস স্কোর সমেত ভারত দুই ইনিংস মিলিয়ে লিড নেয় ৮৯ রানে।
যাইহোক, এদিন ২৬/৮ হয়ে যাওয়ার পরে মনে করা হচ্ছিল ভারত টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসেই সর্বনিম্ন রানের নজির ঘটিয়ে বসবে। যা এতদিন দখলে ছিল নিউজিল্যান্ডের। ২৬ রানের। তবে হনুমা বিহারীর বাউন্ডারিতে মহালজ্জার কেলেঙ্কারি এড়াতে সমর্থ হয় ভারত। টেস্ট ক্রিকেটের সর্বনিম্ন রানের নিরিখে অবশ্য সাত নম্বরে রয়েছে ভারত।
ভারতীয় ব্যাটিং এদিন পিচের এক্সট্রা বাউন্স সামলাতেই পারল না। নিয়মিত অফ-মিডল চ্যানেল দিয়ে বল রেখে ভারতীয় ইনিংসকে শেষ করে দিলেন কামিন্স, হ্যাজেলউডরা। কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্কের রানে এদিন পৌঁছাতে পারলেন না। পূজারা, রাহানে এবং অশ্বিন রানের খাতা খোলার আগেই হয়ে গেলেন। এমন রেকর্ড ক্রিকেট ইতিহাসে আগে কখনো ঘটেনি।
গতকাল নাইটওয়াচম্যান হিসাবে অপরাজিত ছিলেন বুমরা। সঙ্গে ছিলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। এদিন শুরুর দ্বিতীয় ওভারেই বুমরা কামিন্সের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন। আউট বন্যার সেই শুরু। তখনও বোঝা যায়নি সামনের কয়েকটা ওভারে কী হতে চলেছে। তবে এরপরেই মহাপ্রলয় ঘটিয়ে শুরু হয়ে যায় আয়ারাম-গয়ারাম পালা। কোহলি, পূজারা, রাহানে, ঋদ্ধিমান সাহা, অশ্বিন এবং বাকিরা দাঁড়াতেই পারলেন না।
ভারত ৩৬/৯ থাকার সময়ে ব্যাটিং করছিলেন শামি এবং উমেশ যাদব। তবে শামি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন