সাধারণত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোচদের আদেশ বেদবাক্য বলে মেনে নেওয়া হয়। খুব বড়সড় কিছু না ঘটলে ক্রিকেটাররা কোচের পরামর্শ বা আদেশ মেনেই চলেন। তবে অস্ট্রেলিয়া সফরেই কোচ রবি শাস্ত্রীর আদেশ অমান্য করেছিলেন শার্দুল ঠাকুর। এমন ঘটনাই এবার ফাঁস করে দিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
তারকা অফস্পিনার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে 'ক্যাঙ্গারু ভূমি' নামের একটি চ্যাট শো করলেন। সেখানে ছিলেন ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধরও। কোনো সন্দেহ নেই, ভারতের অজি বিজয় নিয়ে একটি তথ্যচিত্র বানানো যেতেই পারে। যেখানে এডিলেডে ৩৬ অলআউট থেকে কালক্রমে সিরিজ জিতে নেওয়া- তর্কাতীত ভাবে ভারতের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সফল অধ্যায়। যেভাবে নিজেদের চোট আঘাতের।সমস্যাকে পেরিয়ে গাব্বায় সিরিজ বিজয় সম্পন্ন করল, তা নিয়ে এখনো মোহিত ক্রিকেট বিশ্ব।
আরো পড়ুন: স্মিথ, মালিঙ্গাকে ছেড়ে দিল রাজস্থান, মুম্বই! কেকেআর দলেও চমক
ব্রিসবেনের জয় সবথেকে গর্বের মুহুর্ত নিয়ে হাজির হলেও ভারতীয় ক্রিকেটারদের চারিত্রিক কাঠিন্য ফুটে উঠেছিল সিডনি টেস্টে। শেষদিনে রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং হনুমা বিহারি যেভাবে দুই সেশন ব্যাট করে দলকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেন, তা এখনো বহুল চর্চিত বিষয়।
যাইহোক, সেই সিডনি টেস্টেই রবি শাস্ত্রী কিছু রণকৌশলগত টিপস অশ্বিন এবং বিহারিকে দিতে চেয়েছিলেন। যাঁর বার্তাবাহক হিসাবে তিনি বাছেন শার্দুলকে। গোটা ঘটনা অশ্বিন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে জানিয়েছেন।
শ্রীধর বলেন, "রবি শাস্ত্রী একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছিলেন। তিনি শার্দুলকে ডেকে বলেন, 'শার্দুল এখানে এসো। ওদের বলে এসো যে এটা আমি বলেছি।' শার্দুল রীতিমত কাঁপছিল। ও বলল, 'কী বলব স্যার?' শাস্ত্রীর জবাব, 'অশ্বিনকে বলো এটা আমি বলেছি।' ঠাকুর আবার জিজ্ঞাসা করে,'কী জানাতে হবে?'"
এরপরেই গোটা ঘটনা খোলসা করে অশ্বিন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে জানান, "শাস্ত্রী বলেছিল, অশ্বিন যেন নিজের প্রান্ত থেকে ব্যাট করে যায়। বিহারির উচিত অন্য প্রান্ত থেকে ব্যাট চালিয়ে যাওয়া। লিয়নের বিরুদ্ধে গোটা দলের মধ্যে সেরা ব্যাটসম্যান অশ্বিন। তাই নিজের এন্ডেই ওঁকে ব্যাট করা চালিয়ে যেতে হবে। ওঁর ব্যাটিংয়ের স্ট্রাইড বেশ বড়, তাই লিয়নের স্পিন নির্বিষ করতে পারবে। বিহারি স্টার্ক, কামিন্সকে দারুণ সামলাচ্ছে। বাউন্সার ভালোই মোকাবিলা করছে। তাই ওদের এভাবেই ব্যাট করা চালিয়ে যেতে হবে।"
তবে শার্দুল শাস্ত্রীর এই বার্তা পুরোপুরি দেননি দুই ব্যাটসম্যানকে। বরং ক্রিজের পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখে শার্দুল স্রেফ বলে যান, যেভাবে তাঁরা ব্যাট করছেন সেভাবেই যেন ব্যাট চালিয়ে যান। অশ্বিন জানান, "শার্দুল একছুটে আমাদের কাছে এসে বেশ হাফাচ্ছিল। আমাদের ভাবভঙ্গি অনেকতা ছিল, 'কী বলেছে ভাই, বল!' শার্দুল আমাদের বলে, 'ওরা আমাকে ড্রেসিংরুমে অনেক কিছু বলেছে। তবে আমি এত কিছু কথা বলছি না। তোমরা দারুণ ব্যাট করছ। এভাবেই চালিয়ে যাও।"
কোচের বার্তা পুরোপুরি না পৌঁছালেও, অশ্বিন-বিহারি কোচের রণকৌশল মেনেই ব্যাট করে যান। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট থাকায় বিহারি নাথান লিয়নকে ফেস করেননি। তার পরিবর্তে অশ্বিন লিয়নকে সামলানোর কাজ চালিয়ে যান। আর বিহারি প্যাট কামিন্স-মিচেল স্টার্ক-জোশ হ্যাজেলউডকে রুখে দেন। দুজনের দুরন্ত পার্টনারশিপে ভর করেই ড্র ছিনিয়ে নেয় ভারত।
Read the full article in ENGLISH
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন