মাঠের মধ্যে তুমুল ঝামেলা। বয়স নিয়ে খোঁটা, গালিগালাজ, বাউন্সার বৃষ্টি, হেলমেটে আঘাত, কটাক্ষ- সব-ই হল। আবার ম্যাচ শেষের সঙ্গেই সেই বাগবিতন্ডার ইতিবৃত্ত কার্যত ডাস্টবিনে ফেলে দিলেন ক্যাপ্টেন কোহলি। অন্তত লর্ডস টেস্ট সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। আন্ডারসনকে সিরাজ আউট করতেই কোহলি সৌজন্যের করমর্দন করলেন আন্ডারসন এবং শেষ ব্যাটসম্যান মার্ক উড-কে। যে দুজনের সঙ্গেই ভারতের ভালমত লেগেছিল।
কোহলি প্রথমে হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন। মুষ্টিবদ্ধ হাত বাতাসে আঘাত করে কোহলি দর্শকদের অভিবাদন গ্রহণ করলেন লর্ডস টেস্ট শেষে। তারপরেই ছুটে আসেন আন্ডারসনদের দিকে। ইংরেজ তারকা পেসারও স্পোর্টসম্যান স্পিরিট দেখিয়ে হাসিমুখে করমর্দনের হাত বাড়িয়ে দিলেন। সবমিলিয়ে লর্ডস দারুণ দৃশ্যপট রচনা করে গেল টেস্টের শেষে।
আরও পড়ুন: আন্ডারসনে মেজাজ হারিয়ে অশ্লীল গালি কোহলির! লর্ডস ধুন্ধুমার, ভিডিও দেখুন
প্রবল প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ম্যাচ। এড্রিনালিনের তীব্র ক্ষরণ। সেই ম্যাচেই দু-দলের বিরাট কোহলি, জসপ্রীত বুমরা, মহম্মদ সিরাজ, অলি রবিনসন, জেমস আন্ডারসন, বাটলাররা হিংস্র কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েছেন ম্যাচের একাধিক লগ্নে। জেমস আন্ডারসন ক্রিজে আসতেই বুমরা প্রথম ইনিংসে বাউন্সারে বন্যায় ভাসিয়ে দেন।
আন্ডারসনের আঙুলে চোট লাগে। হেলমেটে বল আছড়ে পড়ে। পাল্টা বুমরা ক্রিজে আসতেই রুট লেলিয়ে দেন মার্ক উড-কে। বুমরার হেলমেটেও বল লাগে। যদিও বুমরাকে বিব্রত করতে পারেননি ইংরেজ পেসাররা। বুমরার সঙ্গে সেই সময় একপ্রস্থ লেগে যায় জস বাটলারের। বুমরার সদম্ভ খোঁচা, "আমি ভাই তোমাদের মত আস্তে বল করার কাকুতি মিনতি করছি না।"
আরও পড়ুন: বাউন্সারের পর বাউন্সার! বুমরার বিষ-বোলিংয়ে দুঃস্বপ্ন আন্ডারসনের, মুখ খুললেন স্টেইনও
এরপরে ক্রিজের মাঝখান দিয়ে হেঁটে যাওয়ার জন্য আন্ডারসনকে তুলোধোনা করেন কোহলি। বলে দেন, "বুমরাকে তুমি গালি দিয়েছ না? এটা তোমার বাড়ির পিছনের উঠোন নয়। বিড়বিড় করা চালিয়ে যাও। বুড়ো হলে সবাই এরকম করে।" তারও আগে লেগেছিল জনি বেয়ারস্টো এবং মহম্মদ সিরাজের। আউট করে মুখে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন।
কোহলি পরে ম্যাচের শেষে বলেন, বুমরা-শামিকে স্লেজ করে ইংরেজরা ওদের তাতিয়ে দিয়েছিল। এতে বলা হাতেও ওঁরা নিজেদের উজাড় করে দেয়। "আমরা জানতাম ওঁদের ৬০ ওভারের মধ্যেই আউট করে দিতে পারব। মাঠের টেনশন আদতে আমাদের উপকারই করেছে।"
ম্যাচের পরে সমস্যা মেটানোর ইঙ্গিত দিয়ে রুটও বলে দিয়েছেন, "বিরাটের খেলার নিজস্ব ঘরানা রয়েছে। যার সঙ্গে আমার খেলার বিন্দুমাত্র মিল নেই। ওঁরা মাঠের মধ্যে আবেগ নিয়ে খেলে। সেটাই হয়ত ট্যাকটিক্যালি ওদের এগিয়ে রাখে।"
সমস্যা মেটানোর বার্তাই আসলে এল কোহলির ম্যাচ শেষের করমর্দনে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন