ভারত: ২২৪/২ (২০ ওভার)
ইংল্যান্ড: ১৮৮/৮ (২০ ওভার)
টেস্টের পর টি২০ সিরিজও দারুণভাবে দখল করল টিম ইন্ডিয়া। সিরিজ নির্ধারক ম্যাচে ভারতের কাছে কার্যত দাঁড়াতেই পারল না ইংল্যান্ড। ভারতের ২২৫ রান তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৮৮-র বেশি তুলতে পারল না। ভারতের জয় এল ৩৬ রানে। সিরিজের ফলাফল ভারতের পক্ষে ৩-২।
ব্যাটে আগুন ছড়িয়ে ভারতের জয়ে নায়ক কোহলি-রোহিতরা। বল হাতে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট এনে দিলেন ভুবনেশ্বর কুমার। নিজের ৪ ওভারের কোটায় মাত্র ১৫ রান খরচ করে তুলে নেন ২ উইকেট। শার্দুল ঠাকুরও একই ওভারে জোড়া ব্যাটসম্যানকে আউট করে যান। তাঁর দখলে মোট ৩ উইকেট।
বিশাল রান তাড়া করতে গিয়ে একসময় রীতিমত ভারতকে ব্যাকফুটে ফেলে দিয়েছিলেন ওপেনার জস বাটলার (৩৪ বলে ৫২) এবং তিন নম্বরে নামা ডেভিড মালান (৪৬ বলে ৬৮)। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ভুবনেশ্বর কুমার জেসন রয়কে ফিরিয়ে দেওয়ার পর ভারতীয় বোলারদের ওপর তান্ডব চালাচ্ছিলেন দুই ইংরেজ ব্যাটসম্যান। স্কোরবোর্ডে ১৩ ওভারে ১৩০ তুলে ফেলেছিলেন তাঁরা।
আরো পড়ুন: এই কালো জলেই লুকিয়ে বিরাটের তুখোড় ফিটনেসের রহস্য, দাম জানলে চমকে উঠবেন
তবে খেলার মোড় ঘোরার শুরু ১২তম ওভার থেকে। সেই ওভারে মারমুখী দুই তারকার সামনে মাত্র ৭ রান খরচ করেন রাহুল চাহার। তার পরের ওভারেই ভুবনেশ্বর কুমার ফেরান জস বাটলারকে। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি ভারতকে। ১৩০ রানের পার্টনারশিপ ভাঙার পর ইংল্যান্ড ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়।
আরো পড়ুন: বিরাটকে সরিয়ে ভারতের ক্যাপ্টেন হলেন রোহিত! ম্যাচের শেষেই কারণ জানালেন কোহলি
১৫তম ওভারে জনি বেয়ারস্টো (৭), ক্যাপ্টেন মর্গ্যানকে (১) আউট করে জোড়া ধাক্কা দেন শার্দুল ঠাকুর। তারপরে ম্যাচ নিয়মরক্ষার হয়ে দাঁড়ায়।
তার আগে রোহিত শর্মা (৩৪ বলে ৬৪), বিরাট কোহলি (৫২ বলে ৮০), সূর্যকুমার যাদব (১৭ বলে ৩২), হার্দিক পান্ডিয়া (১৭ বলে ৩৯)- চার ব্যাটসম্যানের তোপে কার্যত ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের বোলাররা। মোতেরায় শেষ ম্যাচের জন্য ছিল পাটা পিচ। সেই পিচেই ঝড় তুললেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা।
কেএল রাহুলকে বাদ দিয়ে এদিন রোহিতের সঙ্গে শুরুতে ওপেন করতে নেমেছিলেন স্বয়ং দলনেতা বিরাট কোহলি। টি২০ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটসম্যান শুরু থেকেই ঝড় তুলে দেন।
মার্ক উড থেকে আদিল রশিদ, জোফ্রা আর্চার কাউকেই রেয়াত করছিলেন না দুই তারকা। রোহিত যখন ঝড় তুলেছিলেন, তখন শিট এঙ্করের ভূমিকা নিয়েছিলেন কোহলি।
রোহিত-কোহলি জুটি ৯ ওভারেই ৯৪ তুলে দিয়ে কার্যত বড় স্কোরের ভিত্তি গড়ে দেন। বেন স্টোকসের স্লো অফকাটার রোহিতকে ফিরিয়ে দিলেও মোতেরায় ঝড় থামেনি।
সূর্যকুমার যাদব এরপরে মনের সুখে পেটাতে থাকেন মার্ক উডদের। ২০০ কাছাকাছি স্ট্রাইক রেট নিয়ে ফের যখন তিনি হাফসেঞ্চুরির স্বপ্ন দেখছেন, সেই সময়েই সূর্যকুমারকে ফিরতে হয় ক্রিস জর্ডনের সেরার সেরা ক্যাচে। বল বাউন্ডারি লাইন পেরিয়ে যাচ্ছিল মিড অনে। তবে লং অন থেকে দৌড়ে এসে ক্যাচ তালুবন্দি করে নিজেকে সামলে নিয়ে মাঠের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগেই জেসন রয়কে বল দিয়ে দেন।
চার নম্বরে এদিন পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোট করা হয় হার্দিক পান্ডিয়াকে। অন্যদিন শর্ট বলে বিভ্রান্ত হলেও এদিন হার্দিক রান করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেননি। বিরাট কোহলির সঙ্গে শেষপর্যন্ত ৮১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে অপরাজিত থাকেন তিনি।
বিরাট কোহলি বরাবরের মতোই অনবদ্য। গোটা ইনিংসে শিট এঙ্করের দায়িত্ব পালন করে শেষের দিকে ঝড় তুললেন। সবমিলিয়ে টি২০-তে ২৮তম হাফসেঞ্চুরি করে ফেললেন তিনি।
ইংল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে করুণ দশা হল মার্ক উডের। গত চারটে টি২০ ম্যাচেই দলের বোলিংয়ে সেরা অস্ত্র ছিলেন তিনি। এদিন কোহলি-রোহিতদের আগুনে মেজাজের সামনে ৪ ওভারের কোটায় খরচ করলেন ৫৩ রান। ক্রিস জর্ডন দিলেন ৫৭ রান। জোফ্রা আর্চার দিলেন ৪৩ রান।
ভারতের প্রথম একাদশ:
রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, সূর্যকুমার যাদব, , শ্রেয়স আইয়ার, ঋষভ পন্থ, হার্দিক পান্ডিয়া, ওয়াশিংটন সুন্দর, শার্দুল ঠাকুর, ভুবনেশ্বর কুমার, রাহুল চাহার, নটরাজন
ইংল্যান্ডের প্রথম একাদশ: জেসন রয়, জস বাটলার, ডেভিড মালান, জনি বেয়ারস্টো, ইয়ন মর্গ্যান, বেন স্টোকস, স্যাম কুরান, ক্রিস জর্ডন, জোফ্রা আর্চার, আদিল রশিদ, মার্ক উড
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন