বরুণ চক্রবর্তী ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হতে না পারায় টি২০ দল থেকে বাদ পড়েছেন। তারপরেই শুরু হয়ে গিয়েছে নয়া বিতর্ক। বিরাট কোহলি যেমন সাংবাদিক সম্মেলনে বলে দিয়েছেন, জাতীয় দলে সুযোগ পেতে হলে, নিয়ম কানুন মানা বাধ্যতামূলক।
তবে বরুণ চক্রবর্তীর পাশে এবার দাঁড়াল খোদ কেকেআরের শীর্ষ কর্তা ভেঙ্কি মাইশোর। ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে বরুণ চক্রবর্তীর বাদ পড়ার প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা করে টুইট করেছিলেন, "বরুণ চক্রবর্তীর জন্য খারাপ লাগছে। ও সত্যিকারের অপেশাদার ক্রিকেটার। অধিকাংশ ক্রিকেটারদের যেমন কেরিয়ার গড়ে ওঠে, ওঁর সেটা হয়নি। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ফিজিও, ট্রেনারদের তত্ত্বাবধান ছাড়াই লোয়ার ডিভিশন থেকে তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগ, সেখান থেকে সরাসরি কেকেআর এবং টিম ইন্ডিয়া। ২৯ বছর বয়সে জাতীয় দলের ফিটনেস লেভেল অর্জন করা বেশ কঠিন হবে ওঁর জন্য।"
আরো পড়ুন: ধাওয়ানকে বাদ দেওয়ার ঘোষণা কোহলির, টি২০ শুরুর আগেই দুঃসংবাদ পেলেন বাঁ হাতি
হর্ষ ভোগলের এই টুইট শেয়ার করেই কেকেআরের অন্যতম শীর্ষ কর্তা ভেঙ্কি মাইশোর পাল্টা লেখেন, "সাধারণ ক্রিকেটারদের থেকে ও স্কিলে বেশ এগিয়ে। হয়ত স্প্রিন্টে কয়েক সেকেন্ড স্লো হবে। বর্তমান এই ফিটনেস স্ট্যান্ডার্ডস বিবেচ্য হলে অতীতের কত মহান ক্রিকেটারকে হারাত ক্রিকেট, সেটাই ভাবছি।" অর্থাৎ ফিটনেসের দোহাই দিয়ে তারকা ক্রিকেটারের বাদ পড়া মানতে পারছেন না মাইশোর।
আইপিএলে সাফল্যের সঙ্গে খেলছেন। উদীয়মান তারকা হিসাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন। সেই সূত্রেই কেকেআরের তারকা স্পিনার জায়গা পেয়েছিলেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজের স্কোয়াডে। তবে জাতীয় দলের জার্সিতে ফিটনেস টেস্টে ব্যর্থ হয়ে বরুণ চক্রবর্তীকে দেখা যাবে না।
তরুণ এই তারকা টিম ইন্ডিয়ার নতুন ফিটনেস বেঞ্চমার্ক হিসাবে ইয়ো ইয়ো টেস্ট (ন্যূনতম স্কোর ১৭.১) অথবা দৌড়ের (৮.৫ মিনিটে ২ কিমি) যোগ্যতামান পেরোতে পারেননি।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার জাতীয় দলের জার্সিতে খেলার সুযোগ হারাবেন তিনি। এর আগে অস্ট্রেলিয়া সফরের দলেও রাখা হয়েছিল মিস্ট্রি স্পিনারকে। তবে চোট পেয়ে অস্ট্রেলিয়া উড়ে যাওয়া হয়নি তাঁর।
বোর্ডের এক কর্তা সংবাদসংস্থা এর আগে পিটিআইকে বলে দিয়েছিলেন, “অস্ট্রেলিয়া সফরে কাঁধের চোটের জন্য খেলতে পারেনি বরুণ। সেই চোট সারিয়ে ফেরার জন্য ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজে বরুণকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। তারপরে এনসিএ-তে রিহ্যাব করেছিল। ভালোভাবে থ্রো-ও করতে দেখা গিয়েছিল ওকে। তবে ও ইয়ো ইয়ো টেস্ট এবং ২ কিমি দৌড়ের ফিটনেস টেস্ট টানা দুবার ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয়েছে।”
বোর্ডের সূত্র পিটিআইকে আরো বলেন, “ও মুস্তাক আলি চলাকালীন রিহ্যাব করছিল। তবে তারপরেও ও তামিলনাড়ুর হয়ে বিজয় হাজারে ট্রফিতে একটাও ম্যাচ খেলেনি। পাঁচ মাস আগে কোন ম্যাচ খেলেছিল তাঁর ভিত্তিতে কীভাবে ওঁর ম্যাচ ফিটনেস বোঝা সম্ভব? বরুণ চক্রবর্তীর নির্বাচন নির্বাচকদের কাছে শিক্ষা হয়ে থাকবে।”
তারপর তিনি কড়া ভাষায় বলেছেন, “ভারতীয় দলে যে ফিটনেসের পর্যায়ে রয়েছে সেখানে কেবলমাত্র বোলিং করে স্কোয়াডে থাকা সম্ভব নয়।”
কোহলির গলাতেও শোনা গিয়েছে একই সুর, "জাতীয় দলের জন্য যে সিস্টেম চালু করা হয়েছে, তার গুরুত্ব সকলকে বুঝতে হবে। উচ্চপর্যায়ের ফিটনেস নিয়েই আমাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে হবে। সেই কারণেই এই ভারত দল ক্রিকেট খেলায় ফিটনেসের মাপকাঠিতে একদম ওপরে।টিম ইন্ডিয়ার অংশ হতে গেলে আশা করব প্রত্যেক ক্রিকেটার সমস্ত নিয়ম মেনে চলবে। এই ক্ষেত্রে কোনোরকম কম্প্রোমাইজ করা যাবে না।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন