অসহায় আত্মসমর্পণ শ্রীলঙ্কার। ব্যাটে-বলে কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারল না লাসিথ মালিঙ্গার ছেলেরা। কার্যত বিনা বাধায় ৭৮ রানে জিতে তিন টেস্টের টি২০ সিরিজ ২-০ ব্যবধানে দখল করল ভারত। টি২০ বিশ্বকাপের লক্ষ্য়ে ভারত যে ঠিক পথেই রয়েছে, তা লঙ্কানদের গুড়িয়ে দিয়ে আরও একবার প্রমাণ করল কোহলি ব্রিগেড।
লক্ষ্য ছিল ২০৩। বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে গেল মাত্র ১২৩ রানে। ভারতীয় বোলারদের সামনে ন্য়ূনতম প্রতিরোধটুকু গড়তে পারলেন না শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। দু-অঙ্কের রান করেছেন মাত্র দু-জন- অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ (৩১) এবং ডিসিলভা (৫৭)। বাকিরা থেমে গিয়েছেন অনেক আগে। এতেই প্রকট শ্রীলঙ্কান ব্যাটিংয়ের অনভিজ্ঞতা। আসলে ভারতের জয় এল অলরাউন্ড ক্রিকেটে।
প্রথম একাদশে তিনটে পরিবর্তন ঘটিয়ে খেলতে নেমেছিল ভারত। ঋষভ পন্থ, কুলদীপ যাদব এবং শিবম দুবেকে বাইরে রেখে প্রথমন একাদশে খেলানো হয়েছিল সঞ্জু স্যামসন, যুজবেন্দ্র চাহাল এবং মণীশ পাণ্ডেকে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার একাদশে এলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ।
টসে জিতে এদিন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক লাসিথ মালিঙ্গা রান তাড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন। ওপেনিং জুটিতে লোকেশ রাহুল (৫৪) ও শিখর ধাওয়ান (৫২) ৯৭ তুলে স্কোরবোর্ডে বড় রান তোলা নিশ্চিত করে যান।
এসব সত্ত্বেও চাপে পড়েছিল ভারত। ধাওয়ান ফেরার পরে পরপর প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় লোকেশ রাহুল, সঞ্জু স্যামসন ও শ্রেয়স আইয়ারকে। মাত্র ২৫ রানের মধ্যে ৪ উইকেট খুইয়ে ভারত বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে মণীশ পাণ্ডে (১৮ বলে ৩১) এবং বিরাট কোহলি (১৭ বলে ২৬)। দু-জনে পঞ্চম উইকেটে ৪২ রান যোগ করে যান। পন্থের জায়গায় খেলতে নেমে এদিন ব্যাট হাতে ব্যর্থ সঞ্জু স্যামসনও (২ বলে ৬)। প্রথম বলে ছক্কা হাকানোর পরের বলেই আউট তিনি।
বিরাটের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান ওয়াশিংটন সুন্দর। শেষবেলায় ব্যাট হাতে ঝলসে ওঠেন শার্দুল ঠাকুর। তাঁর ৮ বলে ২২ রানের ক্যামিও ইনিংস না থাকলে ভারত এদিন স্কোরবোর্ডে ডাবল সেঞ্চুরি করতে পারত না। মুম্বইকর ছোট ঝোড়ো ইনিংসে ১টা বাউন্ডারি ও ২টো বিশাল ওভার বাউন্ডারি হাকিয়ে পুণে দর্শকদের এন্টারটেন করে যান। ভারতের হাফডজন উইকেটের মধ্যে শ্রীলঙ্কার সন্দাকান একাই নেন তিন উইকেট। অধিনায়ক মালিঙ্গা ছিলেন এদিন সবথেকে খরুচে। নিজের ৪ ওভারের কোটায় ৪০ রান খরচ করেন তিনি।
ওভার পিছু ১০-এরও বেশি রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট খোয়াতে থাকে দ্বীপরাষ্ট্রের ক্রিকেটাররা। বুমরা, শার্দুল ঠাকুর, নভদীপ সাইনিদের আগুন ঝড়া বোলিংয়ের সামনে কোনও শ্রীলঙ্কান ব্য়াটসম্যানই ক্রিজে টিকতে পারেননি। ২৬ রানের মধ্য়েই ৪ উইকেট খুইয়ে ফেলেছিল তারা।
পঞ্চম উইকেটে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ ও ডিসিলভা ৬৮ রানের পার্টনারশিপ না গড়লে এদিন শ্রীলঙ্কা স্কোরবোর্ডে তিন অঙ্কের রানে পৌঁছতে পারত কিনা, তা নিয়ে সংশয় ছিল। ১২তম ওভারে ওয়াশিংটন সুন্দর ম্যাথিউজকে ফেরানোর পরে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে শ্রীলঙ্কান বাকি ব্য়াটিং লাইন আপ। শেষ ৬ উইকেট শ্রীলঙ্কাকে হারাতে হয় স্কোরবোর্ডে ২৯ রান যোগ করার ফাঁকে।
বুমরাকে এদিন পুরো ৪ ওভার বল করতে হয়নি। ২ ওভার মাত্র ৫ রান খরচ করেই তাঁর শিকার ওপেনার গুণতিলকে। বাকি শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইন আপকে ভাঙেন শার্দুল ঠাকুর (১৯/২), নভদীপ সাইনি (২৮/৩) এবং ওয়াশিংটন সুন্দর (৩৭/২)। কুলদীপ যাদবকে বসিয়ে এদিন খেলানো হয়েছিল যুজবেন্দ্র চাহালকে। তবে চাহাল নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন না এদিন। ৩ ওভারেই তিনি খরচ করেন ৩৩ রান।
আরও পড়ুন ঋষভ পন্থকে বাদ দিলেন বিরাট, ব্যাটিং করছে ভারত
আরও পড়ুন সৌরভকে নিয়ে ‘ব্যঙ্গ’ শচীনের, ফাঁস হল দাদার ‘কীর্তি’
Read live blog article in ENGLISH