শুক্রবারেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের জন্য টিম ইন্ডিয়া স্কোয়াড ঘোষণা করে দিল বিসিসিআই। প্ৰথমবারের জন্য বাংলার সিমার মুকেশ কুমারকে সুযোগ দেওয়া হল টিম ইন্ডিয়ায়। বিহারের গোপালগঞ্জ থেকে উত্থান। ক্যারিবীয় সফরেই টেস্টে অভিষেক ঘটিয়ে ফেলতে পারেন মুকেশ কুমার। ঘরোয়া ক্রিকেটের দীর্ঘদিনের পারফর্মার। কিছুদিন আগে আইপিএলেও প্ৰথমবার খেলে ফেলেছিলেন।
কীভাবে ক্রিকেটে হাতেখড়ি:
২০১২-য় কলকাতায় পা রাখেন মুকেশ। বিহারের গোপালগঞ্জ থেকে কলকাতায় এসেছিলেন রুটি রুজির টানে। বাবা কলকাতার ট্যাক্সি চালক। তবে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর বাবার পাশে দাঁড়াতে কলকাতায় চলে এসেছিলেন। পেটের টানেই কলকাতায় খেপ ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। ম্যাচ পিছু পেতেন ৪০০-৫০০ টাকা। ছেলেকে ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য মুকেশ কুমারকে বাবা মাত্র এক বছর সময় দেন।
আরও পড়ুন: কোহলি ভাইস-ক্যাপ্টেনও নন, বোর্ডের বিরাট সিদ্ধান্ত ক্যারিবিয়ান সফরের দল নির্বাচনে
মুকেশ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে বলছিলেন, "বাবা আমাকে ক্রিকেটের জন্য মাত্র এক বছর সময় দিয়েছিলেন। এর মধ্যে কিছু করতে না পারলে বাবাকে সাহায্য করতে হবে। এমনটাই কথা হয়েছিল। উনি ভালোভাবেই জানতেন ক্রিকেট আমি কতটা ভালোবাসি।" ধীরে ধীরে মুকেশ ডানা মেলতে শুরু করেন। এবং একটা পর্যায়ে বাংলার বোলিং আক্রমণের স্তম্ভ হয়ে ওঠেন। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর সেই উড়ান আপাতত আরও উঁচুতে।
শামির থেকেও পেয়েছেন সাহায্য:
বাংলা থেকেই জাতীয় দলের বর্তমানে সেরা অস্ত্র মহম্মদ শামি। সেই শামির পরামর্শ পেয়েছেন তাঁর রাজ্য দলের অনুজ ক্রিকেটার। ডিউক এবং কোকাবুরা বল কীভাবে ব্যবহার করতে হয় ইনিংসের বিভিন্ন পর্যায়ে, কার্যত হাতে ধরে শিখিয়েছেন শামি। ইংল্যান্ডে খেলার জন্য শামির উপদেশ ছিল লেন্থে ফোকাস করা। শামি মুকেশের বোলিংয়ে যে ছোটখাটো টিউনিং করে দিয়েছেন, তাতেই আরও ধারালো হয়ে উঠেছেন তিনি। আইপিএলে খরুচে হলেও শামি আস্থা হারাননি বাংলার বন্ধুর ওপর।
আরও পড়ুন: ‘বুড়ো ঘোড়া’দের একেবারে বাতিল! ক্যারিবিয়ান সফরে তরুণ রক্তে দল নির্বাচন ইন্ডিয়ার
আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালস মুকেশকে কিনেছিল ৫.৫ কোটি টাকায়। আর দিল্লির জার্সিতে খেলতে নেমে বেধড়ক মার হজম করতে হচ্ছিল। সেই সময়েই মুকেশের কাছে কোটি টাকার টিপস নিয়ে হাজির হন শামি। মুকেশ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলছিলেন, "আহমেদাবাদে গুজরাট টাইটান্স-এর বিপক্ষে খেলছিলাম। শামি বলেছিলেন, 'প্রতিদিন প্রার্থনা করে মাঠে খেলতে নেমো। সবসময় ভাববে তোমার চার ওভারে ৬০ রান পর্যন্ত উঠতে পারে।' আমি হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলাম। তবে এই পরামর্শ ম্যাজিকের মত কাজ করেছিল। ব্যর্থতার ভয় আচমকা কেটে গিয়েছিল।"
রিকি পন্টিংয়ের আস্থাও পেয়েছেন:
এর আগে দিল্লি ক্যাপিটালসের নেট বোলার ছিলেন মুকেশ। দুটো অনুশীলন ম্যাচে কোচ রিকি পন্টিংকে প্রভাবিত করেছিলেন বাংলার পেসার। মুকেশ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানালেন, দিল্লি গত সিজনেই তাঁকে দলে চেয়েছিল। এবার আইপিএল নিলামে সিএসকেও মুকেশের জন্য ঝাঁপিয়েছিল। শেষমেশ ৫.৫ কোটিতে মুকেশ নাম লেখান দিল্লিতেই।
Read the full article in ENGLISH