/indian-express-bangla/media/media_files/2025/11/05/icc-2025-11-05-13-09-43.jpg)
Women’s World Cup 2025: বিশ্বকাপ জয়ের পর উচ্ছ্বাস টিম ইন্ডিয়ার।
ICC Women’s World Cup 2025: ভারতের মেয়েরা বিশ্বকাপ জিতেছে — এই জয় শুধু মাঠে নয়, সমাজের মানসিকতাতেও নতুন ইতিহাস গড়ল। যাঁরা আজ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, তাঁদের বড় হওয়ার সময়টা একেবারেই সহজ ছিল না। ছোটবেলায় অনেকেই ছিলেন মাঠে একমাত্র মেয়ে, যাকে ছেলেরা ‘শেষে ব্যাট করার সুযোগ’ দিত। কেবল বৈষম্যই নয়, তখন ছিল অবুঝ ভয় — “মেয়েটিকে যদি আঘাত লাগে?” তাই ছেলেরা ইচ্ছে করেই জোরে বল করত না, কোচরাও জানতেন না কীভাবে মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিতে হয়।
মহারাষ্ট্রের মহিলা ক্রিকেট দল রবিবারই প্রথমবারের মতো সিনিয়র মহিলা টি-২০ ট্রফি জিতেছে। ফাইনালে মধ্যপ্রদেশকে ১২ রানে হারিয়ে ট্রফি জেতে দলটি। সেই দিনই ভারতের মহিলা দল বিশ্বকাপ জয় করে — দ্বিগুণ উৎসব মহারাষ্ট্রে। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার বললেন, “এই জয় শুধু সেই ১৫ জনের নয় যারা মাঠে লড়েছে, বরং দেশের প্রতিটি মেয়ের স্বপ্নের জয়।”
মহারাষ্ট্রে বদলে যাচ্ছে মহিলা ক্রিকেটের চেহারা:
১২–১৩ বছর আগে যখন তিনি মহারাষ্ট্রের হয়ে খেলতে শুরু করেন, তখন রাজ্যে কোনও আন্তঃজেলা প্রতিযোগিতা ছিল না। এখন নিয়মিতই নতুন প্রতিভা উঠে আসছে — শুধু পুনে নয়, কোহলাপুর, নাসিক, ঔরঙ্গাবাদ থেকেও। যে ক্লাব একসময় শুধুমাত্র রঞ্জি খেলোয়াড় তৈরি করত, এখন সেখান থেকেই উঠে আসছে মহিলা ক্রিকেটাররা।
আরও পড়ুন- Virat Kohli Birthday: সাধে বলে 'রাজার রাজা'? এই ১০ রেকর্ডই কোহলিকে করেছে 'বিরাট'
আগে বড় টুর্নামেন্টের আগে দুই-তিন দিনের ক্যাম্প হতো। এখন দু’মাসব্যাপী ক্যাম্প চলে — ফিটনেস, ফিল্ডিং, পুষ্টি ও মানসিক প্রস্তুতির উপর জোর দেওয়া হয়। প্রতিটি রাজ্য সংস্থার এখন মহিলা দলে ট্রেনার, ফিজিও, নিউট্রিশনিস্ট এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকও রয়েছেন। বৃষ্টির দিনে ইন্ডোর নেটের ব্যবস্থা করে দেয় সংস্থা।এক সময় যা ছিল কল্পনার বাইরে।
পরিবর্তনের হাওয়া ও নতুন প্রেরণা:
মহারাষ্ট্রে এখন নিজস্ব মহিলা টি-২০ লিগ হয় এবং সেই ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। ফলে খেলোয়াড়রা নজরে আসার সুযোগ পান। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা বিজয়ী দলের ৪০ লক্ষ টাকা পুরস্কারের সমান অঙ্ক অতিরিক্ত প্রণোদনা হিসেবে ঘোষণা করেছে— ভারতের বিশ্বজয়ের আগের দিনই। এই জয় শুধু ট্রফি নয়, মনোভাবের জয়ও। দেশের ছোট ছোট গ্রাম থেকে মেয়েরা এখন বিশ্বাস করছে, তারাও একদিন ভারতের জার্সি গায়ে মাঠে নামতে পারবে।
“আমরা ছোট শহর থেকে উঠে এসেছি — স্মৃতি মন্ধানা এসেছে সাংলি থেকে, আমি কোহলাপুরের। ২০০৪-০৫ সালে কোনও সুযোগ-সুবিধা ছিল না, কিন্তু পরিবারের সহযোগিতা ছিল বিপুল। এখন মেয়েরা সেই অনুপ্রেরণাতেই বড় হচ্ছে,” বলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার।
চ্যালেঞ্জ, সংগ্রাম ও স্বপ্ন:
শুরুর দিনগুলো ছিল কঠিন — ছেলেদের সঙ্গে খেলতে যেতেন একমাত্র মেয়ে হিসেবে। শুনতে হতো, “মেয়েরা ক্রিকেট খেলে না, এটা তোমার কেরিয়ার হতে পারে না।” কিন্তু ক্রিকেট তাঁর রক্তে ছিল। বাবা, কাকা, মামা — সকলে ছিলেন স্থানীয় ক্লাব ক্রিকেটার। আর্থিক অসুবিধা সত্ত্বেও তাঁরা মেয়েটির স্বপ্নে জ্বালিয়েছিলেন আলো।
তখন ছিল না সোশ্যাল মিডিয়া, না ছিল প্রচারের আলো। তিনি ও স্মৃতি মন্ধানা মিলে যেতেন মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামীদের অনুশীলন দেখতে। তাঁদের ট্রেনিং পদ্ধতি নকল করেই শুরু করেছিলেন নিজের প্রস্তুতি।
“এখন প্রত্যেক ক্রিকেটার জানে, সফল হতে গেলে ফিটনেস ও পুষ্টির দিকে মনোযোগ দিতে হবে। খেলাগুলোর সংখ্যা যেমন বেড়েছে, তেমনই শক্তিও বাড়াতে হবে। তাহলেই আসবে আরও অনেক জয়,”— আত্মবিশ্বাসী মন্তব্য তাঁর।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us