মানবাধিকারের বিনিময়ে খেলা নয়! চৌষট্টি খোপের দুনিয়া থেকে এমনটাই বার্তা দিলেন দেশের প্রাক্তন জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়ন সৌম্য স্বামীনাথন। ইরানে অনুষ্ঠিত আসন্ন এশিয়ান টিম চেস চ্যাম্পিয়নশিপে হেডস্কার্ফ (মাথা ঢাকার কাপড়) পরে খেলতে পারবেন না বলেই টুর্নামেন্ট থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিলেন তিনি। বছরখানেক আগে ভারতের আরেক মহিলা ক্রীড়াবিদ হিনা সিধুও এই কারণে ইরানে অনুষ্ঠিত এক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেননি।
আগামী ২৬ জুলাই থেকে ৪ অগস্ট পর্যন্ত ইরানের হামাদান শহরে বসছে উপমহাদেশীয় দাবার চ্যাম্পিয়নশিপ। সে দেশে মেয়েদের মাথা ঢেকেই প্রকাশ্যে বেরোনো নিয়ম। কিন্তু তা মেনে নিতে পারেননি কেরলের বছর উনত্রিশের এই কন্যা। নিজের ফেসবুক পেজে দীর্ঘ একটি পোস্ট দিয়ে পুরো বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন সৌম্য। তিনি লিখেছেন, "আমি বলপূর্বক হেডস্কার্ফ বা বুরখা পরার বিরোধী। ইরানের এই বাধ্যতামূলক নিয়ম আমার কাছে অত্যন্ত অস্বস্তিকর। এটা কোথাও আমার নূন্যতম মানবাধিকারকে লঙ্ঘন করেই ব্যক্তি স্বাধীনতার বিরোধী।”
র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ৯৭ নম্বর ও দেশের পাঁচ নম্বর দাবাড়ু হতাশা প্রকাশ করেছেন যে এরকম একটি আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়নশিপের আসরে খেলোয়াড়দের অধিকারকে একেবারেই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না। সেখানে ধর্মীয় ভাবাবেগকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, "বুঝতাম যদি আমাদের অনুরোধ করা হত নিজের নিজের দেশের জাতীয় পোশাক পরে খেলতে, বা ওই ধরনের কিছু, কিন্তু খেলাধূলোর ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক কোন ধর্মীয় পোশাক বিধি থাকতে পারে না।"
গ্র্যান্ডমাস্টার সৌম্য দেশের হয়ে এত বড় মঞ্চে অংশ নিতে না পারার জন্য আক্ষেপও প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, “এত গুরুত্বপূর্ণ একটা টুর্নামেন্টে জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটা অত্যন্ত সম্মানের। আমাদের মতো স্পোর্টসপার্সনদের খেলার স্বার্থে অনেক কিছুই মানিয়ে নিতে হয়। জীবনে সেটাই অগ্রাধিকার পায়। কিন্তু কিছু বিষয়ের সঙ্গে কখনই সমঝোতা করা যায় না।"