করোনা অতিমারিতে ঘরোয়া ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রবল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন রঞ্জি ক্রিকেটাররা। বিসিসিআইয়ের তরফে ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণ প্যাকেজের ভাবনা চিন্তা করার কথা হচ্ছে। তবে শুধুমাত্র আর্থিক ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ নয়, বরং কেন্দ্রীয় চুক্তির দাবি করে বসলেন রঞ্জির তারকা ক্রিকেটাররা। আওয়াজ তুলেছেন শেলডন জ্যাকসন, জয়দেব উনাদকাট, হরপ্রীত সিং ভাটিয়ার মত তারকারা।
গত মাসেই রোহন গাভাসকার ঘরোয়া ক্রিকেটারদের জন্য রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় চুক্তি চালু করার দাবি করেন। ম্যাচ ফি বাদেও যাতে ক্রিকেটাররা আর্থিকভাবে সুরক্ষিত থাকেন। বলা হচ্ছে, ঘরোয়া ক্রিকেটের অধিকাংশ ক্রিকেটার আইপিএলে খেলেন না। আর্থিকভাবে পুরোপুরি ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচ ফি-র ওপরেই নির্ভরশীল। তবে অতিমারীর কারণে রঞ্জি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেই সমস্যায় পড়েছেন সেই সমস্ত ঘরোয়া ক্রিকেটাররা।
আরো পড়ুন: ধোনিকে প্রথমে নিতে চাননি সৌরভ! অতীত খুঁড়ে বিতর্ক বাড়ালেন কিরণ মোরে
জাতীয় দলের এবং সৌরাষ্ট্র ক্রিকেটার জয়দেব উনাদকাট জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় থাকলে ক্রিকেটাররা আর্থিকভাবে অনেক নিরাপদ থাকবে। "অতিমারীর আগে থেকেই ঘরোয়া ক্রিকেটে কেন্দ্রীয় চুক্তির কথা হয়ে আসছে। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার তরফে যদি সেরা ৩০ ক্রিকেটাররা এই চুক্তির জন্য বেছে নেওয়া উচিত। সবাইকে এই চুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়। তবে ৩০ জন ঠিক আছে। এমনকি বয়স ভিত্তিক স্তরেও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ক্রিকেটারদের প্যাকেজ দেওয়া উচিত। এতে ক্রিকেটাররা আরো মোটিভেশন পাবেন।"
সাধারণভাবে ঘরোয়া ক্রিকেট পুরো মরশুম খেলা হলে একজন ক্রিকেটার ১৫-১৬ লক্ষ টাকা উপার্জন করে থাকেন। তবে গত বছরে ৮৭ বছরে প্রথমবার রঞ্জি আয়োজন করা যায়নি। আর্থিক সমস্যা মেটাতে ছত্রিশগড়ের অধিনায়ক হরপ্রীত সিং ভাটিয়া বর্তমানে ইংল্যান্ডে ক্লাব ক্রিকেটে খেলছেন বার্নসলে উলে মিনার্স দলের হয়ে। তিনি বলেছেন, "গত বছরে ১০টাই সীমিত ওভারের ম্যাচে খেলেছিলাম। তবে তাতেও আর্থিক সুরাহা হয়নি। তাই অতিরিক্ত টাকার জন্য ইংল্যান্ডে চলে এসেছি। ক্রিকেট ছাড়া ভারতে অন্য কোনো উপার্জনের উৎস নেই। তাই এটাই আমার ভরসা। আমাদের যদি কেন্দ্রীয় চুক্তি থাকত, তাহলে ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলতে আসতে হত না। বিসিসিআই আগেও ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আশা করি ভালো আর্থিক প্যাকেজ দেওয়ার সঙ্গেই রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার তরফে কেন্দ্রীয় চুক্তি দেওয়া হবে।"
এর সঙ্গেই তাঁর আরো যুক্তি, "অধিকাংশ ঘরোয়া ক্রিকেটার আইপিএল খেলে না। নিরাপদ কোনো চাকরিও নেই। পুরোটাই আসে রঞ্জি খেলে। চোট পেলে গোটা সিজন যখন আমরা খেলতে পারি না, তখন তো পুরোটাই ক্ষতি। এই কারণেই কেন্দ্রীয় চুক্তি এত গুরুত্বপূর্ণ।"
বতর্মানে কেকেআরের স্কোয়াডে থাকা শেলডন জ্যাকসন জানিয়েছেন, "রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার তরফে অবশ্যই কেন্দ্রীয় চুক্তি চালু করা উচিত। যাতে এই কোভিডের মত কঠিন সময়ে ক্রিকেট সংস্থাগুলি ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়াতে পারে। আমরা কেউই জানি না কোভিড কতদিন চলবে। এতে অন্তত ক্রিকেটাররা সুরক্ষিত থাকবে। শুধু ছেলে ক্রিকেটার নয়, মহিলা ক্রিকেটারদেরও কেন্দ্রীয় চুক্তির সুরক্ষা দেওয়া উচিত। কারণ ওদের চাকরির সুযোগ ছেলেদের থেকে কম।"
বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমল জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই বোর্ডের সঙ্গে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলির সঙ্গে আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা চলছে। যদিও ২৯ তারিখ বোর্ডের এসজিএম-এ এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি এজেন্ডায় না থাকায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন