দু’চাকায় বিশ্ব ভ্রমণ করে নজির গড়লেন ভারতের বেদাঙ্গি কুলকার্নি। বছর কুড়ির পুনের সাইক্লিস্ট ১৫৯ দিন ধরে ১৪টি দেশে সাইকেল চালিয়ে ২৯ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছেন। এশিয়ার মধ্যে প্রথম ও বিশ্বের দ্বিতীয় নাগরিক হিসেবে এই রেকর্ড করেছেন দেশের কন্যা বেদাঙ্গি। ব্রিটিশ অভিযাত্রী জেনি গ্রাহাম দ্রুততম মহিলা হিসেবে ১২৪ দিন ধরে সাইক্লিং কের বিশ্ব ভ্রমণের রেকর্ড করেন। চলতি বছরেই ৩৮ বছরের জেনি এই কাজ করেন। অতীতের রেকর্ডের থেকে তিন সপ্তাহ কম সময় নেন তিনি।
বেদাঙ্গি চলতি বছর জুলাইয়ে পার্থ থেকে শুরু করেছিলেন তাঁর যাত্রা। এখন অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যাচ্ছেন এই রেকর্ড সম্পূর্ণ করার জন্য়। সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে ফোনে বেদাঙ্গি জানিয়েছেন যে, বিশ্ব ভ্রমণের সময়ে তিনি নিজের ও পৃথিবীর সেরা দিকটার সঙ্গেই সবচেয়ে খারাপ দিকটাও দেখে ফেলেছেন। বেদাঙ্গির বাবা বিবেক কুলকার্নি বলেছেন যে, খুব কম মানুষই এই রুদ্ধশ্বাস অভিযানে অংশ নেয়। তাঁর কন্যা দ্রুততম এশিয়ান হিসেবে সাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন।
আরও পড়ুন: দু’চাকায় জ্যোতিষ্কের ছটা; ট্রান্স হিমালয় অভিযান সেরে ঘরের পথে
লন্ডনের বোর্নমাউথ ইউনিভার্সিটির স্পোর্টস ম্যানেজমেন্টের ছাত্রী বেদাঙ্গি। দু’চাকায় সারা পৃথিবী ঘোরার জন্য শেষ দু’বছর ধরেই তিনি দীর্ঘ সাইকেল সফর করতেন। এভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। এক ধরণের বিশেষ সাইকেল ও অনান্য সরঞ্জামেরও বন্দোবস্ত করতে হয়েছে তাঁকে। এছাড়াও কোন সময় কোন রুটে যাওয়া যেতে পারে তারও একটা ছক তৈরি করেন তিনি। বিশ্ব ভ্রমণের ৮০ শতাংশ সময়টাই বেদাঙ্গির পাশে কেউ ছিল না। তাঁর সাইকেলে বোঝাই ছিল নানারকম যন্ত্রপাতি, ক্যাম্পের সরঞ্জাম ও পোশাক। মূলত বাবা-মা’ই বেদাঙ্গিকে এই সফরের জন্য আর্থিক ভাবে সাহায্য করেছে।
পার্থ থেকে শুরু করে সারা অস্ট্রেলিয়া ঘুরে ফেলেন তিনি। এরপর ব্রিসবেন থেকে নিউজিল্যান্ডের উড়ান ধরেন। পৌঁছে যান ওয়েলিংটনে। সেখানকার উত্তর ও দক্ষিণ চষে ফেলেন তিনি। এরপর বিমানে করে পশ্চিম কানাডার ভ্যাঙ্কুভার হয়ে পশ্চিমমুখী যাত্রার জন্য বন্দর শহর টিল হালিফাক্স বেছে নেন। এখান থেকে আসেন ইউরোপে। পতুর্গাল, স্পেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জার্মানি ও ডেনমার্ক ঘুরে বেরান সাইকেলে।
ইউরোপ থেকে রাশিয়া হয়ে ভারতে আসেন বেদাঙ্গি। এখানেই শেষ ৪,০০০ কিলোমিটার ভ্রমণ করেন তিনি। গত রবিবার কলকাতাতেও এসেছেন তিনি। মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৭ ড্রিগ্রি সেলসিয়াসে সাইকেল চালিয়েছেন বেদাঙ্গি। জানিয়েছেন বাবা-মা’র সমর্থন না-থাকলে এই কাজ তিনি করতে পারতেন না। বেদাঙ্গি এখন চলে যাবেন পার্থে। ওখানে ১৫ কিলোমিটার সাইক্লিং করলেই তাঁর বৃত্ত সম্পূর্ণ হবে। এই পার্থ থেকেই শরু করেছিলেন তিনি।