মুসলিম প্রধান দেশ ইন্দোনেশিয়ার অনুর্দ্ধ-২০ ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করার কথা ছিল। তবে ইজরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে দেশটির একাংশে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম হয়েছিল।।দেশের রাজনীতিতেও ইজরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে গনগনে বাতাবরণ তৈরি হচ্ছিল। এমন আবহেই ফিফার তরফে যুব বিশ্বকাপের আয়োজন স্বত্ত্ব কেড়ে নেওয়া হল ইন্দোনেশিয়ার কাছ থেকে।
ইন্দোনেশিয়ার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ফিফার কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারায় শাস্তির মুখে পড়তে হল। ইন্দোনেশিয়া ফুটবল সংস্থার তরফে ফিফাকে জানানো হয়, বালির রাজ্যপাল ইজরায়েলের ম্যাচ আয়োজন করতে অস্বীকার করছে। তারপরেই ফিফার তরফে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া হয়। ফিফার তরফে জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্টিনো এবং ইন্দোনেশিয়া ফুটবল সংস্থার চেয়ারম্যান এরিক থোহিরের সঙ্গে আলোচনার পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনায় ইন্দোনেশিয়ান ফুটবলারদের তরফে রাজনৈতিক নেতাদের দায়ী করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার যুব দলের স্ট্রাইকার রাব্বানি তাসনিম সিদ্দিক বলেছেন, "আমরা নিজেদের রক্ত, ঘাম, সময়, চিন্তা ব্যয় করেছি। তবে রাজনৈতিক কারণে সব বৃথা হয়ে গেল।" অন্য একজন ফুটবলার হকি কারাকা জানিয়েছেন, "বিশ্বকাপে গোল করে বাবা-মাকে গর্বিত করতে চেয়েছিলাম। জীবনের এটাই স্বপ্ন ছিল। তবে সেই সুযোগ হারালাম।"
ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন দ্বন্দ্বে বরাবর ধর্মীয় কারণে প্যালেস্টাইনকে সমর্থন জানিয়ে এসেছে বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। ইজরায়েলের সঙ্গে কোনও সরকারি স্তরেও সম্পর্ক নেই ইন্দোনেশিয়ার।
যুব বিশ্বকাপে ইজরায়েলের অংশগ্রহণে আপত্তি জানিয়ে কয়েকদিন আগেই রাজধানী জাকার্তায় বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বেরিয়েছিল। এরপরেই প্রমাদ গোনে ফিফা।
ইন্দোনেশিয়া ফুটবল সংস্থার তরফে বলা হচ্ছে, ফিফা আয়োজনের দায়িত্ব কেড়ে নেওয়ায় দেশটির পরবর্তীকালে বিশ্বকাপ ফুটবলে যোগ্যতা অর্জন করা কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়াল। তাছাড়া একদম শেষ মুহূর্তে আয়োজন কেড়ে নেওয়ায় প্রচুর আর্থিক ক্ষতিও সইতে হবে। যার অঙ্ক মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার।
১৯৮৩ সালে শেষবার বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশগ্রহণ করেছিল ইন্দোনেশিয়া। সেই সময় অবশ্য দেশটির নাম ছিল ডাচ ইস্ট ইন্ডিস। তারপরে কোনও বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলেও দেশটিতে ফুটবল জনপ্রিয়তায় খামতি নেই।
আয়োজক দেশ হওয়ার সুবাদে ইন্দোনেশিয়া সরাসরি যুব বিশ্বকাপে অংশ নিতে পেরেছিল। তবে এবার অন্য দেশে বিশ্বকাপের আসর বসলে অটোমেটিক কোয়ালিফিকেশনের সুযোগ হাতছাড়া হবে দেশটির।
ইন্দোনেশিয়ার যুব দলের সহকারী কোচ নোভা আরিয়ান্ত জানিয়েছেন, "যুব ফুটবলারদের স্বপ্ন আমরা কবরস্থ করলাম।" ২০ মে থেকে ১১ জুন পর্যন্ত যুব বিশ্বকাপ আয়োজিত হওয়ার কথা। ফিফার তরফে পরিবর্ত ভেন্যু এখনও জানানো হয়নি।
Read the full article in ENGLISH