কী বলা যায় একে! চোক করে যাওয়া নাকি অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ! আন্ডারডগ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে বিশ্বকাপের ফাইনালে মাত্র ১৭৭ রানে গুটিয়ে গেল ভারত। তা-ও আবার পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিংই করতে পারলেন না ভারতীয়রা। ৪৭.২ ওভারেই অলআউট বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বোলারদের কোনও জবাবই খুঁজে পেলেন না ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশ আর ইতিহাসের মাঝে আপাতত ১৭৭ রান। ১৭৮ রান করলেই পদ্মাপাড়ের ক্রিকেটে নয়া ইতিহাস!
ভারতের টোটালের ১৭৭ রানের মধ্য়ে যশস্বী জয়সোয়ালেরই একার ৮৮। বাকি ব্যাটসম্যানরা ডাহা ফেল। ছোট একটা পরিসংখ্যান। যশস্বী বাদে ভারতের হয়ে দু অঙ্কের রানে পৌঁছেছেন মাত্র দু-জন- তিলক ভার্মা (৩৮) ও জুরেল (২২)। বাকিদের রানসংখ্যা টেলিফোন নম্বরের মতো।
#TeamIndia all out for 177.
The Bangladesh chase shall begin shortly.
Follow the #INDvBAN #U19CWC final live ????????https://t.co/WK6GcTF6Ou pic.twitter.com/QPCaRERUEJ
— BCCI (@BCCI) February 9, 2020
আরও পড়ুন ধোনির মতোই ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশার! এই তারকাকেই ফাইনালে ভয় ভারতের
বিশ্বকাপ ফাইনালের মঞ্চ। চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। হেভিওয়েট দলেরই মর্যাদা দেওয়া হচ্ছিল গতবারের চ্যাম্পিয়নদের। তবে সেই দলই কিনা প্রথমবার যে কোনও পর্যায়ের বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা বাংলাদেশের সামনে শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতির শিকার হল।
টসে জিতে প্রথমে ভারতে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। শুরু থেকেই বাংলাদেশি পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে হাসফাঁস করছিলেন দুই ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল ও দিব্যাংশ সাক্সেনা। প্রথম দুই ওভারই বাংলাদেশের পেসারদের সামনে যশস্বীরা কোনও রান তুলতে পারেননি স্কোরবোর্ডে। প্রথম ছয় ওভারে উঠেছিল মাত্র ৮ রান। দিব্যাংশ সাক্সেনা আউট হলেন মাত্র ২ রানে। সপ্তম ওভারের মাথায়।
আরও পড়ুন রূপে লক্ষ্মী গুণে সরস্বতী, সৌরভের একরত্তি সানা এখন আঠারো
অনন্ত চাপের সেই পরিস্থিতি থেকেই যশস্বী জয়সওয়াল টানলেন দলকে। ৮৯ বলে পূর্ণ করলেন হাফ-সেঞ্চুরি। চলতি টুর্নামেন্টে স্বপ্নের ছন্দে রয়েছেন তিনি। এর আগে চারবার হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। পঞ্চমবারও করে ফেললেন বিশ্বকাপের ফাইনালে।
Yashasvi Jaiswal's #U19CWC with the bat:
Runs: 4️⃣0️⃣0️⃣
Fifites: 4️⃣
Hundreds: 1️⃣
Average: 1️⃣3️⃣3️⃣.3️⃣3️⃣???? ???? #INDvBAN | #FutureStars pic.twitter.com/IJPZw6rtbr
— Cricket World Cup (@cricketworldcup) February 9, 2020
আরও পড়ুন ভারতের বিরুদ্ধে বারেবারেই হার! বিশ্বকাপের ফাইনালে প্রতিশোধের স্বপ্ন বাংলাদেশের
ব্যক্তিগত ৮৮ রানে তাঁকে তানজিদ হাসানের কাছে ক্যাচ তুলে যশস্বীকে আউট করেছিলেন শরিফুল ইসলাম। এরপরে বেশিক্ষণ টেকেননি ক্রিজে টিকে যাওয়া তিলক ভার্মা ও অধিনায়ক প্রিয়ম গর্গ। ১১৪ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল ভারত। সেখান থেকে যখন মনে করা হচ্ছিল ভারত ঘুরে দাঁড়াতে চলেছে, তারপরেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ভারতের ব্যাটিংয়ের অবশিষ্টাংশ।
১৫৬ থেকে ১৭৭- ২১ রানের মধ্যে ভারত শেষ সাত উইকেট হারায়। বাংলাদেশ এদিন দুরন্ত বোলিং করে গেল আগাগোড়া। শরিফুল ইসলাম শুরু করেছিলেন। তানজীম হাসান সাকিব, অভিষেক দাস, রকিবুল হাসান, শামীম হোসেন— প্রত্যেককেই হেভিওয়েট ভারতের ব্যাটিংকে থমকে দিতে সাহায্য করেন। বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক দাস ৩ উইকেট নিয়েছেন। শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসানের শিকার ২ ভারতীয় ব্যাটসম্যান।
১৯৮৩ বিশ্বকাপে কপিল দেবদের ভারত হাতে মাত্র ১৮৩ রানের পুঁজি নিয়ে শক্তিশালী ওয়েস্টইন্ডিজ বধ করে প্রথমবার সিনিয়র পর্যায়ে বিশ্বকাপের স্বাদ পেয়েছিল। সেরকমভাবেই পচেফস্ট্রুমে ইতিহাস গড়তে পারবে ভারত, নাকি নতুন করে ক্রিকেটের মহাকাব্য লিখবে পদ্মাপাড়ের এগারো বাঙালি, সেটাই দেখার।