গ্রামে দীর্ঘদিনের সমস্যা ছিল মোবাইল নেটওয়ার্ক। সেই সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য এখন বীরের মর্যাদা পাচ্ছেন আইসিসির আন্তর্জাতিক প্যানেলের ভারতীয় আম্পায়ার অনিল চৌধুরী।
মার্চে ভারত বনাম বাংলাদেশ সিরিজ আয়োজনের কথা ছিল। সেই সিরিজেই ম্যাচ পরিচালনার দ্বায়িত্বে ছিলেন তিনি। তবে বিশ্বজোড়া করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সেই সিরিজ বাতিল হয়ে যায়। সেই সময়েই আম্পায়ার অনিল চৌধুরী সামলি জেলায় নিজের পৈতৃক গ্রাম ডাঙরলে যান। তারওর তড়িঘড়ি লকডাউনের ফলে সেখানেই আটকে পড়েন তিনি।
নেটওয়ার্ক সমস্যার কারনে সেই সময় গাছে উঠে রাত কাটাতে হচ্ছিল আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করা ভারতীয় আম্পায়ারকে। উত্তরপ্রদেশে নিজের পৈতৃক গ্রাম আটকে পড়ে মোবাইল নেটওয়ার্কের অপ্রতুলতার কারণে বাকি বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে অবস্থায় কয়েক মাস কাটাতে হয় তাঁকে। সেই সময়েই ভয়ঙ্কর দুর্যোগের মুখে পড়েন তিনি।
তার এই খবর জাতীয় প্রচারমাধ্যমে লেখালেখি হতেই গ্রামবাসীর সমস্যা মেটে। একটি টেলিফোন নেটওয়ার্ক সংস্থার তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে গ্রামে মোবাইল টাওয়ার বসিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত করে।
ফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি জানান, "কখনই ভাবতে পারিনি এই উদ্যোগ এত প্রশংসিত হবে। এই গ্রামে একজন জলন্ধরের অধ্যাপক থাকেন। যিনি এখন অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন। ছাত্ররাও এতে খুশি। মাঠে মশার কামড় সহ্য না করে তাঁরা এখন অনলাইন ক্লাস এটেন্ড করতে পারছে।"
রাজকুমার নামের এক গ্রামবাসী জানালেন, আগে নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে কয়েক দিন লেগে যেত। এখন মাত্র কয়েক ঘন্টাতেই এই সমস্যার সমাধান হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, "আম্পায়ার অনিল চৌধুরীর উদ্যোগের জন্য ওঁকে ধন্যবাদ জানাই। এখন উনি আমাদের কাছে হিরো। এই অতিমারীর সময়ে এটা হয়ত ছোট ইস্যু। তবে এটা দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে আমাদের সাহায্য করবে। আমাদের পঞ্চায়েত সদস্য মনীশ চৌহান এবং স্থানীয় বিধায়ক তেজিন্দর নারওয়াল জিও নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর আমাদের পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।"
আপাতত গ্রামবাসীদের আশীর্বাদ ঝরে পড়ছে আম্পায়ার অনিল চৌধুরীর উপর। এই বিষয় তিনি বেশ উপভোগও করছেন। তবে এর কিছু বিপত্তিও রয়েছে। আন্তর্জাতিক আম্পায়ার বলছিলেন, "এখন অনেক গ্রামবাসীই অন্যান্য সমস্যা মেটানোর আবদার করছেন।আমি বলেছি, আমি কেবল একজন আম্পায়ার।"