মনে করা হয়েছিল চলতি সপ্তাহেই চুক্তি বিতর্কে সই সাবুদ পর্ব মিটে যাবে। মধ্যস্থতাকারী পার্থসারথী সেনগুপ্তের প্রচেষ্টায় ইস্টবেঙ্গলের দাবি মেনে চুক্তিপত্রের বেশ কিছু পয়েন্ট শিথিল করার বার্তাও দিয়েছিল শ্রী সিমেন্ট।
তবে মঙ্গলবারে ইস্টবেঙ্গলের কর্মসমিতির বৈঠকের পর তা আপাতত বিশ বাঁও জলে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঁচ বছরের চুক্তি চেয়ে দ্বারস্থ হয়েছে ইস্টবেঙ্গল। সময় চাওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তবে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, মুখ্যমন্ত্রী সম্ভবত আর এই বিষয়ে নতুন করে কিছু বলবেন না। যা বলার 'খেলা হবে'-র সূচনা অনুষ্ঠানেই জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, "একটু ছেড়ে খেলুন, সমস্যা মিটে যাবে।" ইনভেস্টরের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি বার্তা দিয়েছিলেন, "পাঁচ বছরের জন্য যে কেউ গ্যারান্টি নেবে, এটাও তো মুখের কথা নয়। এক-একটা ৫০ কোটি টাকা করে লাগে। সুতরাং তাদের অনেক করে বলেকয়ে রাজি করানো হয়েছে।"
আরও পড়ুন: প্রয়াত মোহনবাগান কর্তা টুটু বসুর স্ত্রী! শোকের ছায়া ময়দানে
এমন পরিস্থিতিতে ফের একবার পাঁচ বছরের চুক্তি করার শর্তে ইনভেস্টর যে আর রাজি হবে না তা ইস্টবেঙ্গলের বৈঠকের পরেই সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় থাকা পার্থ সেনগুপ্তও কার্যত নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গলের কর্মসমিতির বৈঠকের পরেই ক্লাবের তরফে পাঁচ বছরের বিষয়টি জানানো হয়। সঙ্গেসঙ্গেই পার্থবাবু ক্লাবকে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর পক্ষে এই অনুরোধ রাখা সম্ভব নয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে পার্থ সেনগুপ্ত বুধবার জানিয়ে দিলেন, "আমি পুরো প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। আমার পক্ষে যতটুকু করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। বাকিটুকু আমার হাতে নেই। বেশ কয়েকটি বিষয় মধ্যস্থতা করে দিয়েছি সাধ্যমত। যা করতে পারিনি, সেটাও জানিয়ে দিয়েছি।"
আরো পড়ুন: পাঁচ বছরের চুক্তি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ ইস্টবেঙ্গল, অপব্যাখ্যা চাইছে না শ্রী সিমেন্ট
তিনি বলছিলেন, আইনি বিষয়ে কোনো জটিলতার সমাধান হিসাবে কলকাতা হাইকোর্টের কথা বলা হয়েছিল। তবে চুক্তির শর্ত হিসেবে তা জয়পুরেই করতে হবে। আরবিট্রেশনের ক্ষেত্রে গন্তব্য হবে দিল্লি হাইকোর্ট। এই বিষয়ে কোনোভাবেই শিথিল হবে না ইনভেস্টর।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধির সঙ্গেও শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষের আলোচনার সময় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সংশোধিত চুক্তিপত্র থেকে একচুলও সরা হবে না। সেক্ষেত্রে সই না হলে তাঁদের আপত্তি নেই। কেবল বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত দিলেই তাঁরা প্রস্থানে রাজি হয়ে যাবেন।
পার্থ সেনগুপ্তের আশঙ্কা, পরিমার্জিত চুক্তিপত্রে সই না করলে শ্রী সিমেন্টের তরফে ক্লাবকে দেওয়া নিজেদের চুক্তিপত্রে যে বিষয়ে 'কনসেশন' বা ছাড় দেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হতে পারে। এমনই ভাবনাচিন্তা নাকি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। লগ্নিকারী সংস্থা অবশ্য ইস্টবেঙ্গলের পরবর্তী বৈঠকের দিকে তাকিয়ে। আগামী শুক্রবার ফের একবার ক্লাব কর্তারা বৈঠকে বসছেন। সেই বৈঠক কি নতুন করে আলো দেখাবে, সেদিকেই তাকিয়ে ফুটবল মহল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন