Royal Challengers Bangalore vs Kolkata Knight Riders highlights: ম্যাচের শুরুতে আমরা বলেছিলাম, শাহরুখের টিম একটু বেশিই যেন নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে আন্দ্রে রাসেলের উপর। আজকের অতিমানবিক ব্যাটিংয়ের পর, টিমকে দোষ দেওয়া যায় কি? স্বীকার করে নেওয়া ভাল, প্রথম দুটো ম্যাচ রাসেল প্রায় একা হাতে জিতিয়েছেন। আজ একেবারে আক্ষরিক অর্থেই, প্রায় অমানুষিক ভাবে, একা হাতে জেতালেন।
ম্যাচ শেষে বোলারদের উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন বিরাট, বললেন, "বোলারদের শেষ চার ওভারে ইন্টেলিজেন্ট বোলিং করা দরকার ছিল। চার ওভারে ৭৫ যদি ডিফেন্ড না করা যায়, তাহলে কিছু বলার থাকে না। চার ওভারে একশো রানের কুশন তো আর দেওয়া যায় না বোলারদের।" খাঁটি কথা। ডেথ ওভারে জঘন্য বল করলেন অভিজ্ঞ সাউদি, চার ওভারে দিলেন ৬১, করে গেলেন একের পর এক লেংথ বল। সিরাজ চাপের মুখে নো আর ওয়াইড করলেন বারবার, বিমার করার ফলে সরতে হলো আক্রমণ থেকে। কী করবেন কোহলি?
Vivo IPL 2019: RCB vs KKR Playing 11, Match 17 highlights
Live Blog
Royal Challengers Bangalore vs Kolkata Knight Riders Live Score
আইপিএল-এ প্রতি বছর কী যে হয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর, সে রহস্যের সমাধানে বোধহয় ফেলু মিত্তির-ব্যোমকেশ বক্সীরাও হার মেনে যেতেন। তারকাখচিত টিম নিয়েও প্রতিবারই মুখ থুবড়ে পড়ে টিমটা, হারের দুরারোগ্য ভাইরাস ঢুকে পড়ে প্লেয়ারদের অস্থি-মজ্জায়। বিরাট যে বিরাট, ক্রিকেটের তিন ধরণের ফরম্যাটেই যিনি তর্কাতীতভাবে এখন বিশ্বসেরা ব্যাট, সেই তিনিও আইপিএল-এ আশ্চর্যজনক ভাবে নিষ্প্রভ থাকেন।
সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে এবারও, কিং কোহলির ব্যাটে রানের খরা প্রথম চারটে ম্যাচে। যে টিমে বিরাট আর এবি ডিভিলিয়ার্সের মতো দুই মহাতারকা আছেন, তারা এভাবে হেরেই চলবে? হারের চাকা ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য এই দুই মহারথীর ব্যাটের দিকেই আজ তাকিয়ে থাকবে চিন্নাস্বামী। পারবেন বিরাট, পারবে আরসিবি? মুম্বই কিন্তু পেরেছিল। ২০১৫ সালে প্রথমে পরপর চারটে ম্যাচ হেরেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দুর্ধর্ষ কামব্যাকে।
পারবেন বিরাট? পারবে বেঙ্গালুরু? ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তের হালহকিকত জানতে চোখ রাখুন আমাদের সাইটে।
অবিশ্বাস্য! ১৩ বলে রাসেল ৪৮! এ জিনিস কদাচিৎ দেখা যায় ক্রিকেটে! সুপারম্যানও পারবে না। ম্যাচ জিতছে কেকেআর! নায়ক রাসেল, সাতটা ছয়! সেনসেশনাল! কী-ই আর বলার থাকে, লেখার থাকে এই অতিমানবিক ব্যাটিংয়ের পর? কোহলিদের হারের ধারা অব্যাহত থাকল। কেউ যদি ১৩ বলে ৭ টা ছয় মারে, অসহায় ভাবে দেখা ছাড়া কী আর করার থাকে? আন্দ্রে রাসেল, কুর্নিশ!
নাইটদের কঠিন কাজটা একটু সহজ করে দিলেন মহম্মদ সিরাজ। কোমরের ওপরে দ্বিতীয়বার বল করার ফলে নিজের নির্দিষ্ট স্পেল শেষ করতে পারবেন না তিনি। ওভার শেষ করলেন মার্কাস স্টোইনিস। এবং প্রত্যাশা পূরণ করে দুটি বিশাল ছক্কা হাঁকড়ালেন ড্রে রাস! সাউদির ওভারে ফের ছক্কা! ১০ বলে চাই ২৩ রান!! অসম্ভবকে সম্ভব করতে একমাত্র রাসেলই পারেন! আট বলে কুড়ি ব্যাটিং, রাসেলের আসুরিক ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে। শেষ হাসি কার?
আউট! কার্তিক আউট! এবার আর সন্দেহের জায়গা নেই। অসম্ভবকে সম্ভব করার চেষ্টা করছিলেন, একটা চার, একটা ছয়ের পর ফের ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ! তিন ওভারে ৫৩ চাই। কঠিন, খুব কঠিন।
চার ওভারে চাই ৬৬, সোজা কথায় ২৪ বলে ৬৬। এবং নাইট সমর্থকদের জন্য সুখবর, গদা.. সরি.. ব্যাট হাতে ক্রিজে এখন আন্দ্রে রাসেল। দুর্দান্ত স্পেল শেষ করলেন চাহাল , কেকে আর-এর ভাগ্য এখন রাসেলের ব্যাটে!
২৬ বলে চাই ৬৭ রান, এই অবস্থায় আউট নীতিশ রানা! এবং মাঠে আন্দ্রে রাসেল! কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আউট দেওয়া হলো কার্তিককে! চাহালের এই ওভারেই ঘটছে যত অঘটন! থার্ড আম্পায়ারের সাহায্য চাইলেন কার্তিক।
১৩ নম্বর ওভারে অসাধারণ বোলিং করলেন সাইনি। এলো স্রেফ তিন রান, ১৪ নম্বর ওভার চাহালের, উঠল ছয় রান। গত পাঁচ ওভারের সংগ্রহ ২৮ রান, খরচের খাতায় দুই উইকেট। সোজা হিসেব, ৩৬ বলে ৮৬ রান চাই। রাসেলও বোধহয় পেরে উঠবেন না আজ। নেগির হাতে নাকাল কেকেআর! কার্তিক আছেন, ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ ফিনিশ করায় যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি আছে যাঁর। চাপ ক্রমশ বাড়ছে কেকেআর-এর উপর। জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করেছেন কোহলি, পরিষ্কার শরীরী ভাষায়। তবে খেলাটার নাম তো ক্রিকেট, ছন্দে ছন্দে কত রং বদলায় বলেই শেষ কথা বলার সময় আসেনি এখনও।
আট ওভারে ৯৫ চাই কেকেআর-এর, ক্রিজে রানা-কার্তিক। কঠিন, কিন্তু কখনওই নয় অসম্ভব। নেগি দুরন্ত বল করে আস্কিং রেট বাড়িয়ে দিয়েছেন নাইটদের। জমে গেছে ম্যাচ, মনে রাখুন, এরপর নামবেন রাসেল। যাঁর ব্যাট চললে কিছুই অসম্ভব নয়।
বারো নম্বর ওভারে ফের বিপর্যয়! ক্রিস লিন আউট! চমৎকার এগোচ্ছিলেন, কোনও দরকার ছিল না এই শটের। এগিয়ে এসে একরকম নিজেই নিজেকে ইয়র্ক করে ফেললেন। ফের একবার আশার আলো দেখে জ্বলে উঠল চিন্নাস্বামী। মারাত্মক বোলিং ফিগার পবন নেগির, দুই ওভারে ছয় রান দিয়ে দুই উইকেট। কেকেআর-এর স্কোর ১১১-৩
নয় নম্বর ওভারে মহম্মদ সিরাজকে মেরে পাট করলেন রবিন উথাপ্পা, এলো ১৯ রান, কিন্তু পরের ওভারেই উথাপ্পা আউট! লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন রানা এবং লিন, ভালভাবেই চালাচ্ছেন। এগারো ওভারের পর স্কোর ১০৭/২, ফের একবার প্রশ্নের মুখে বেঙ্গালুরুর বোলিং।
আরসিবি-র ব্যাটিংয়ের সময় লিখেছিলাম, দুশো প্লাস এই উইকেটে সবসময় 'চেজেবল'। নাইটদের পাওয়ার হিটার একাধিক, শেষ পাঁচ ওভারে ষাট-সত্তর অনায়াসে আসবে যদি হাতে উইকেট থাকে আর ক্রিজে থাকেন রাসেল। উইকেট চাই বেঙ্গালুরুর, আট ওভারে ৭৩-১।
বেচারা সাউদির কপাল খারাপ আজ। পঞ্চম ওভারে ১৩ রান দিয়ে দায়িত্ব নিয়ে কেকেআর-কে পঞ্চাশে পৌঁছে দিলেন এই অভিজ্ঞ পেসার। লিন দুটি, উথাপ্পা একটি চার মারলেন তাঁকে। সেইসঙ্গে আরসিবি-র বিরুদ্ধে আইপিএল-এ ৫০০ রানের মাইলফলক ছুঁলেন রবিন। পরের ওভার চাহালের, শুরুটা শান্তভাবেই হয়েছিল, কিন্তু পাঁচ নম্বর বলে বিশাল ছক্কা ক্রিস লিনের! সম্ভবত টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় ছয়! স্টেডিয়ামের বাইরে বল! ছয় ওভার শেষ, কেকেআর ৫৯-১
চার ওভার শেষ, রানের গতি স্বাভাবিকভাবেই কমেছে, স্কোর ৩৮-১। কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে দুশোর বেশি রান তাড়া করার সমস্যা একটাই, রান রেট খুব বেশি কমতে দেওয়া যায় না কিছুতেই। যদিও ছোট মাঠ, তবু পরের দিকে রানের চাপ বাড়লে বাড়ে 'মিস-হিট' হওয়ার আশঙ্কাও।
চূড়ান্ত এলোমেলো প্রথম ওভার সাউদির, পাঁচ-দশ নয়, একেবারে ১৭ রান দিয়ে ফেললেন। দু দুটো চার মেরে হাতের সুখ করে নিলেন ক্রিস লিন, আরেক বলে সাউদি দিলেন চারটে ওয়াইড। পরের ওভারে হাত খুললেন নারিন, দুটো চারও হলো, কিন্তু লিখতে লিখতেই নারিন আউট! সাইনির বাউন্সারে পুল শট মারতে গিয়ে ফাইন লেগে নেগির হাতে ক্যাচ দিয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরত পিঞ্চ হিটার! দুই ওভারের শেষে কেকেআর ২৮-১
শেষ ওভারে এলো ১৮ রান, শেষ ১০ ওভারে ১২৭। বেঙ্গালুরুর স্কোর শেষমেশ দাঁড়াল ২০৫/৩, সৌজন্যে বিরাট-এবিডি। শেষবেলায় ১৩ বলে ২৮ রানের ঝড় তুলে দিয়ে গেলেন মার্কাস স্টোইনিস। এই পিচে ২০৫ নাগালের বাইরে নয়, কিন্তু দেখেশুনে মনে হচ্ছে খেলা জমে গেছে। সঙ্গে থাকুন, ফিরছি দ্বিতীয় ইনিংসে।
আউট! এবিডি আউট! নারিনকে মাঠের বাইরে ফেলতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ ! ৩১ বলে ৬৩ করে ফিরছেন এবি, আরসিবি ১৯ ওভারে ১৮৭-৩, দুর্দান্ত ওভার নারিনের। কোহলিদের দুশো হওয়া নিয়ে হঠাৎই সংশয়। বাকি আর ছটা বল।
১৮ ওভার শেষ, আরসিবি ১৮১-২। বাকি আর মাত্র বারোটা বল, ডিভিলিয়ার্স এই বারোর কটা খেলবেন তার উপর নির্ভর করবে চূড়ান্ত স্কোর। স্টেডিয়াম এবি-ম্যাজিকের অপেক্ষায়, বল নারিনের হাতে।
চিন্নাস্বামী গর্জন করছে, "কোহলি .. কোহলি!" বিরাট ব্যাটিং ৮৪, খেলেছেন মাত্র ৪৭ বল। তিন ওভার বাকি, বোর্ডে ১৭২-১। ফের ছক্কা এবি-র! ওভারে এল ১৯। দুশো পেরোবে আরসিবি? লিখতে লিখতে কোহলি আউট! কুলদীপের বলে ফিরতি ক্যাচ! ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট?
ষোলো ওভারে বেঙ্গালুরু ১৫৩-১। এবিডি-র পঞ্চাশ এল ২৮ বলে! স্বপ্নের ব্যাটিং করছেন ডিভিলিয়ার্স, যেমন খুশি যেখানে খুশি মারছেন। গাভাস্কারের কথায়, "Pure Joy!" সত্যিই, বিশুদ্ধ আনন্দ এই ব্যাটিংয়ের সাক্ষী থাকায়।
কোহলিই বা পিছিয়ে থাকেন কেন? চার এবং ছক্কা রানার প্রথম দু'বলে। এবং পঞ্চম বলে ব্যাকফুটে গিয়ে সোজা লং অফের উপর দিয়ে এবিডি-র ছয়! এই শট শুধু ডিভিলিয়ার্সের পক্ষেই সম্ভব! পনের ওভারে ১৪২-১। ব্যাটিং তাণ্ডব চলছে চিন্নাস্বামীতে, কোথায় থামবে আরসিবি? মেজাজ বুঝেই কলকাতায় আছড়ে পড়ল কালবৈশাখী!
রাসেলের ওভারে বিশাল ছক্কা হাঁকালেন এবিডি, ক্রমশ স্বমূর্তি ধরছেন নিজস্ব ঢঙে। এবং আবার আকাশ ছোঁয়া ছক্কা! এই না হলে এবিডি! চোদ্দ ওভারে ১২৪-১, গিয়ার পাল্টাচ্ছে আরসিবি।
১৩ ওভার শেষ, আরসিবি ১০৮-১। খাপ খুলছেন এবিডি, নারিনকে দুবার পাঠালেন বাউন্ডারিতে। বাকি সাত ওভারে ঝড় ওঠার অপেক্ষা এখন। আবার লিখি, অন্তত দুশো চাই এই বাইশ গজে। নাইটদের পাওয়ার হিটারের অভাব নেই, খোদ রাসেল তো একাই একশো। লড়তে হলে বাকি ৪২ বলে অন্তত ৯০-১০০ চাই কোহলিদের। হবে? হওয়ার প্ল্যাটফর্ম কিন্তু তৈরি।
এগারো ওভার শেষ, স্কোর ৯১-১। এবি সময় নিচ্ছেন সেট হতে, পীযুষকে লফটেড ড্রাইভে চার মারলেন। বিরাট পঞ্চাশ পেরোলেন ৩১ বলে, চোখ জুড়িয়ে দেওয়া লেটকাটে চার মেরে। ব্যাটে-বলে হচ্ছে চমৎকার। কিং কোহলি ফের স্বমহিমায়! গ্যালারি উত্তাল।
রানের গতি কমেছে সামান্য, পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরের ওভার কয়েকে যা হয়ে থাকে সচরাচর। কোহলি আর এবিডি-র জুটি যদি পরের আট ওভার টিকে যান, চিন্তার কারণ থাকবে না বেঙ্গালুরুর। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে গেলে আজ সেরা খেলাটা খেলতে হবে ওঁদের। নয় ওভারে এখন ৬৯-১, এবং স্ট্র্যাটেজিক টাইমআউট।
আউট! পার্থিবের পা উইকেটের সামনে পেয়ে গেল নীতিশ রানার বল, আউট! প্লাম্ব এলবি!
নাইটদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে হলে কোহলিকে আজ থাকতে হবে অন্তত ১৫ ওভার পর্যন্ত। মনে রাখুন, চিন্নাস্বামীর মাঠ ছোট, আউটফিল্ড ফাস্ট। এই উইকেটে সোয়া দুশোও তাড়া করার মতো মতো ব্যাটিং-শক্তি আছে কেকেআর-এর। বেঙ্গালুরুর লক্ষ্য হওয়া উচিত কমপক্ষে দুশো। সাত এবং আট নম্বর ওভার মিলিয়ে এল ১১, বোর্ডে ৬৪-১। ক্রিজে এখন দুই মহারথী, কোহলির সঙ্গী এবিডি।
লাগাতার চারটে ম্যাচ হারার পর আজ এসপার-ওসপার লড়াইয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছে বেঙ্গালুরু। বিরাট এখনও পর্যন্ত রাজকীয় ছন্দে, যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছেন পার্থিব। পাঁচ নম্বর ওভারে এল আট, ছয় নম্বরে নারিন দিলেন মাত্র চার।পাওয়ার প্লে শেষ, বেঙ্গালুরুর ওপেনিং জুটিতে উঠেছে ৫৩।এর থেকে ভাল শুরু হতে পারত না লিগ টেবলের একদম শেষে থাকা টিমের।
চমৎকার ব্যাটিং উইকেট, বল দ্রুত আসছে ব্যাটে। রানের ঠিকানা লেখা এই বাইশ গজের প্রতি ইঞ্চিতে। এবং ঝকঝকে শুরু করেছে বেঙ্গালুরু, নারিনের ওভারে এল সাত। চার ওভারে ২৭, কোহলি ১৩ বলে ২৬ ব্যাটিং। আজই কি কিং কোহলির ফর্মে ফেরার দিন? ফার্গুসনকে যেভাবে মিডউইকেট দিয়ে পাঠালেন, তেমনই ইঙ্গিত। তেমনই ইঙ্গিত স্ট্রেট ড্রাইভে ছবির মতো চারে। বোর্ডে চার ওভারে ৪১
প্রসিধ কৃষ্ণের প্রথম ওভারে এল ১৩। পুল করে পার্থিবের একটা বাউন্ডারি এবং কোহলির দুটো চারের সৌজন্যে। যার মধ্যে একটা কভার ড্রাইভ বাঁধিয়ে রাখার মতো। ভিন্টেজ কোহলি! কমেন্ট্রি বক্সে গাভাসকার বললেন, 'গ্লোরিয়াস!' পীযুষের ওভারে এল সাত, দু'ওভারে বিরাটরা ২০। চিন্নাস্বামী গলা ফাটাচ্ছে ঘরের টিমের সমর্থনে.. 'আর সি বি .. আর সি ব ..!'
কিছু টুকরো টুকরো ব্যক্তিগত যুদ্ধও লুকিয়ে আছে আজকের ম্যাচে। কোহলি বনাম পীযুষ-কুলদীপ। এই আইপিএল-এ গুগলির বিরুদ্ধে কখনওই স্বচ্ছন্দ দেখায়নি বিরাটকে। তেমনই এবিডি বনাম নারিন-পীযুষ। ডিভিলিয়ার্স গত চার ম্যাচের তিনটেতে আউট হয়েছেন অফব্রেক বা গুগলিতে। কুলদীপের মতো বাঁ হাতি রিস্টস্পিনারের বিরুদ্ধে বরং তুলনায় এবি বেশি সহজাত। এবং আন্দ্রে রাসেল বনাম চাহাল। বিধ্বংসী 'দ্রে রাস'-কে থামাতে ক্যাপ্টেন যে মূলত তাঁর লেগস্পিনের দিকেই তাকিয়ে থাকবেন, বিলক্ষণ জানেন চাহাল। এই ছোট ছোট যুদ্ধগুলো যারা জিতবে, ম্যাচ ঢলে পড়বে তাদের দিকেই। চুম্বকে ম্যাচের মূল ভরকেন্দ্র হতে যাচ্ছে নাইটদের স্পিন ত্রয়ী বনাম বিরাট-এবিডি। এবং আন্দ্রে রাসেল বনাম চাহাল।
ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং, কোন কিছুতেই এ পর্যন্ত 'ক্লিক' করেনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। চারটে ম্যাচ মিলিয়ে একমাত্র পার্থিব প্যাটেল তিন অঙ্ক পেরিয়েছেন ব্যাটে (১৩৮)। বিরাট-এবি-মইন-হেটমায়ার, কেউ একশো পেরোননি এখনও চারটে ম্যাচ খেলেও। বোলিং? চাহাল ছাড়া বলার মতো কিছু নেই। উমেশ যাদব-মহম্মদ সিরাজের পেস জুটি না পারছেন শুরুতে ঝটকা দিয়ে উইকেট তুলতে, না পারছেন ডেথ ওভারে রান আটকাতে। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো প্রতি ম্যাচেই একাধিক ক্যাচ ফেলছেন কোহলির টিমের সদস্যরা। সব সমস্যা কাটিয়ে ওঠার ম্যাচ আজ বিরাটদের, এসপার-ওসপার ম্যাচ।
টস জিতলেন কার্তিক এবং প্রত্যাশিতভাবেই সিদ্ধান্ত নিলেন আগে ফিল্ডিংয়ের। কোহলির টিমে দুটো বদল, হেটমায়ারের জায়গায় অভিজ্ঞ সাউদি এবং উমেশের বদলে পবন নেগি। "টিমে ভারসাম্য আনতে এবং বোলিং অপশন বাড়াতেই এই বদল," বক্তব্য কোহলির।
টস জিতলে প্রথমে ফিল্ডিং করে নিতে চাইবেন কার্তিক বা কোহলি, আন্দাজ করা যায়। রাতের দিকের ম্যাচে এটাই সাধারণত দস্তুর। কারণটাও সবার জানা। শিশির, ' ডিউ ফ্যাক্টর'। রাতের দিকে শিশির পড়ে বল গ্রিপ করতে অসুবিধে হয় বোলারদের, আউটফিল্ডেও সম্ভাবনা বাড়ে ক্যাচ মিস বা মিসফিল্ডের। সচরাচর সব অধিনায়কই রাতের ম্যাচে রান তাড়া করতে চান। তার উপর চিন্নাস্বামীর ছোট মাঠে যে কোনও টার্গেটই 'চেজেবল' পর্যায়ে থাকে সাধারণত।
আজ শুধু ব্যাটসম্যান কোহলির নয়, ক্যাপ্টেন কোহলিরও অগ্নিপরীক্ষা। লাগাতার চারটে হারের পর প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বিরাটের অধিনায়কত্ব নিয়েও, সোশ্যাল মিডিয়ায় আরসিবি ভক্তরাও দাবি তুলতে শুরু করেছেন, ক্যাপ্টেনসি ছেড়ে দিয়ে ব্যাটিংয়ে মন দিন বিরাট। প্রশ্ন ওঠারই কথা। নিজের না হয় অফ ফর্ম যাচ্ছে, কিন্তু ক্যাপ্টেন হিসেবে টিমের বাকিদের থেকে সেরাটা বার করে আনার দায়িত্বও তো তাঁরই। সেটাই বা পারছেন কই ? টিম যাতে 'টিম ' হয়ে উঠে সংঘবদ্ধ পারফরম্যান্স দেয়, সেই পরীক্ষার সামনেও আজ কিং কোহলি।
কেকেআর-এর সম্ভাব্য এগারোয় আগের ম্যাচের টিমে বেশি অদলবদলের সম্ভাবনা কম। সুস্থ হলে নারিন ফিরছেনই। ব্যস, ওইটুকুই। লিন, রাসেল আর লকি ফার্গুসন বাকি তিন বিদেশি। দেশজ প্লেয়ারদের মধ্যেও নেহাত চোটআঘাতের সমস্যা না থাকলে আগের ম্যাচে যাঁরা খেলেছেন, তাঁরাই থাকবেন। ক্যাপ্টেন কার্তিকের সঙ্গে ব্যাটে রানা-গিল-উথাপ্পা, বোলিংয়ে কুলদীপ-পীযুষ-প্রসিধ।
কোহলি আজ টিমে বেশ কিছু রদবদল ঘটালে অবাক হওয়ার কিছু নেই। মিডল অর্ডারে রান পাচ্ছেন না ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকাটারি ব্যাট হেটমায়ার। তাঁর জায়গায় আজ ঘটতেই পারে কুলটারনাইলের অন্তর্ভুক্তি। বাকি তিন বিদেশি নিশ্চিতভাবেই মইন, এবিডি আর স্টোইনিস। তবে টিমে যে বদলই আসুক, সার কথা হল, জিততে হলে বিরাটকে খেলতে হবে বিরাটের মতো। চারটে ম্যাচে কোহলি করেছেন ৭৮, গড় ১৯.৫০, স্ট্রাইক রেট ১২৯.২৬। আজ বদলাবে হিসেব, বিরাটোচিত ব্যাটিং অপেক্ষা করে আছে কেকেআর-এর জন্য?
বেঙ্গালুরুর মাঠ তুলনায় ছোট, উইকেটও সাধারণত ব্যাটসম্যানদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় এ মহল্লায়। জিততে হলে রাসেলকে আজ যেভাবেই হোক, থামাতে হবে বিরাটদের। দীর্ঘদেহী ক্যারিবিয়ানের ওই অবিশ্বাস্য পাওয়ার হিটিংয়ে বড় মাঠেই ছয় হয়ে যায় মিসহিটও। এই ছোট মাঠে রাসেলের তাণ্ডব থামানো না গেলে অশেষ দুঃখ আছে বিরাটদের কপালে। রাসেলকে আটকাতে কোহলির সেরা বাজি হতে পারেন চাহাল, টুর্নামেন্টে আট উইকেট তুলে নিয়ে যিনি আপাতত 'পার্পল ক্যাপ'-এর মালিক।
পরিসংখ্যান কী বলছে? দুই দল আইপিএলে মুখোমুখি হয়েছে ২২ বার। কেকেআর জিতেছে ১৩টা, আরসিবি ৯টা। চিন্নাস্বামীতে কেকেআর জিতেছে ৬ বার, আরসিবি ৩ বার। শেষ দশ সাক্ষাতের ফল? কেকেআর জিতেছে সাতবার, বেঙ্গালুরু শেষ হাসি হেসেছে তিনবার। হিসেব নিশ্চিতভাবেই নাইটদের পক্ষে, কিন্তু খেলাটার নাম তো ক্রিকেট! সে আর কবে হিসেব-নিকেশের তোয়াক্কা করেছে?