আইপিএলের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে আপত্তি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
IPL 2020, Coronavirus

২৯ এপ্রিল থেকে ২০ মে পর্যন্ত আইপিএল হবার কথা ছিল

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আইপিএল পিছিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।। এর একদিন পরেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ইঙ্গিত দিয়েছেন ২০২০ মরশুমে ম্যাচের সংখ্যা কমবে। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি আধিকারিকদের কেউ কেউ ২০০৯ সালের ধাঁচে পুরো আইপিএল চাইছেন।

Advertisment

তখন এ প্রতিযোগিতা পূর্ণ হয়েছিল ৩৭ দিনে। পুরনো সূচি অনুসারে ২০২০ আইপিএল হবার কথা ছিল ২৯ মার্চ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত। ২০০৯ সালে তৎকালীন আইপিএল সর্বেসর্বা ললিত মোদী গোটা প্রতিযোগিতা সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। সে বছর ভারতে সাধারণ নির্বাচন ছিল। ২০০৯ সালের আইপিএল শুরু হয়েছিল ১৮ এপ্রিল, শেষ হয় ২৪ মে-তে। মোট ৫৯টি ম্যাচ খেলা হয়েছিল। তখন নকআউটে দুটো সেমিফাইনাল ও ফাইনাল হত। তার আগে গ্রুপ লিগে হত ৫৬টি ম্যাচ। এখন দুটি কোয়ালিফায়ার ও একটি এলিমিনেটর ম্যাচের মাধ্যমে মাত্র একটি অতিরিক্ত ম্যাচ খেলা হয়।

শনিবার ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিকে নিয়ে মুম্বইতে একটি বৈঠক করে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলষ এর পরে সৌরভ বলেন, "যদি (সংক্ষিপ্ত আইপিএল) হয়, যদি ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়, তাহলে ১৫ দিন বাদ চলে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে ব্যাপারটা সংক্ষিপ্তই হবে। কত সংক্ষিপ্ত, কটা খেলা, সে সব আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। ১৫ এপ্রিলের আগে বিদেশি প্লেয়ারদের কোনও ভিসা দেওয়া হবে না।"

Advertisment

একটি ফ্র্যাঞ্চাইজির এক শীর্ষ কর্তা ২০০৯ সালের উদাহরণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, "দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩৭ দিনের আইপিএলের উদাহরণ আমাদের কাছে রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা তেমনটাও করতে পারি। আইপিএল এপ্রিল-মে মাসে করতেই হবে। আশা করা যায়, গরম আসছে, এবং তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে, ২০ এপ্রিলের মধ্যে যদি শুরু করা যায়, তাহলে পুরো আইপিএল খেলা যেতেই পারে।"

ভেন্যু কম

২০০৯ সালের মডেল যদি অনুসরণ করাও হয়, তাহলে মাত্র দুটি তিনটি শহরে ম্যাচ করা যেতে পারে, সেক্ষেত্রে বিমানভ্রমণ কমবে, পরিকাঠামোর চাপও কমবে। এক ফ্র্যাঞ্চাইজিরি সিইও বলছিলেন, "আজ বিসিসিআই যখন আমাদের গোটা বিষয়টা বলল, আমরা বুঝলাম যে বিসিসিআইয়ের অবস্থান কেন অবশ্যমান্য। এরকম ব্যাপার নয়, যে আমরা শুধু টাকার কথা ভাবছি। আমরা এই বিশ্বজোড়া মহামারী নিয়ে উদ্বিগ্ন। নতুন করে খেলা কীভাবে হতে পারে এ ব্যাপারে আমরা কোনও প্রস্তাব দিইনি। এটা বিসিসিআইয়ের বিষয়। ওঁরা আমাদের সঙ্গে দু-তিন সপ্তাহ পর ফের কথা বলতেও পারেন।"

সংক্ষিপ্ত সংস্করণ আইপিএলের ব্যাপারে, আটটি দলকে দুটি গ্রুপে ভাগ করে, মুখোমুখি ম্যাচ বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। আগের সূচিতে মাত্র ৬টি রাতের ম্যাচ ছিল। বিভিন্ন ভেনুতে একই সময়ের ম্যাচের সংখ্যা বাড়ানো একটা উপায় হতে পারে।

শুক্রবারের বৈঠকে হাজির ছিলেন সব ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকরা। প্রত্যেকেই বলেছেন জনতা ও খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা এখন আগের বিষয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯কে অতিমারী বলে চিহ্নিত করেছে। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ অতিক্রান্ত।

টাকাটা বিষয় নয়

কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের অংশীদার নেস ওয়াদিয়া স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিসিসিআই, ফ্র্যাঞ্চাইজি, স্টার স্পোর্টস, কেউই এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আইপিএল থেকে আর্থিক লাভের কথা ভাবছে না। বৈঠকের পর তিনি বলেন, "সকলেই মনে করছেন, এখন একটা টাকার কথা ভাবাও ভুল হবে। আমরা কেউই অর্থে আগ্রহী নই। পরিস্থিতির ফায়দা আমরা কেউ তুলতে চাই না। প্রথম লক্ষ্য হল সকলের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা।"

আইপিএল বাতিল করে যদি একজনের প্রাণও বেঁচে যায়, তাহলে তা বেশি মূল্যবান।

শাহরুখ খান টুইট করে বলেছেন, "বিসিসিআই ও আইপিএলের সঙ্গে বৈঠকে আমরা যে কথা মনে করি, তাই ফের উঠে এল, দর্শক, খেলোয়াড়, ম্যানেজমেন্ট ও যেসব শহরে আমরা খেলি, তাদের স্বাস্থ্য সবার আগে। স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারের দেওয়া সমস্ত নির্দেশ মেনে চলা হবে। তিনি আরও বলেন, আশা করা যায় ভাইরাসের প্রকোপ কমবে এবং খেলা হবে।"

দিল্লি ক্যাপিটালসের পার্থ জিন্দাল বলেন, "একবার পরিস্থিতি আয়ত্তের মধ্যে এলে, সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।"

তবে আইপিএল বাতিল হলে সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ৩০০০ কোটি টাকা, যা উদ্বেগের বিষয়। ফ্র্যাঞ্চাইজিরা খালি মাঠে খেলতে রাজি ছিল। কিন্তু তার পর পিছিয়ে দেবার কথা ঘোষণা করে বিসিসিআই। তবে আইপিএল বাতিল হয়ে গেলে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিকে চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়দের টাকা দিতে হবে না।

বিদেশি না খেলালে আইপিএল হবে না

জানা গিয়েছে, এই বৈঠকে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের তরফ থেকে বোর্ডকে জানিয়ে দেওয়া হয়, আইপিএল খেলতে হলে বিদেশি খেলোয়াড়দের খেলতে দিতে হবে।

আপাতত সমস্ত ভিসাই ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত হয়ে গিয়েছে। বিজনেস ভিসায় বিদেশি খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ, কোচ কারা আসেন তা এখন সময়ের অপেক্ষা।

Sourav Ganguly IPL coronavirus