বাবাকে হারাতে হয়েছে গত শুক্রবার। তারপর সেই শোক নিয়েই সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে নেমেছিলেন। কুর্নিশ করেছিলেন শচীন থেকে আইপিএল দুনিয়ার অন্যান্য নক্ষত্ররা। তবে শোকের হ্যাংওভার কাটার আগেই মনদীপের ব্যাটে এবার শিকার হল কেকেআর।
মনদীপ সিংয়ের ব্যাটে ভর করে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব হারাল কেকেআরকে। টানা পাঁচ জয়ে কিংস বাহিনী কেকেআরকে লিগ তালিকায় পাঁচ নম্বরে নামিয়ে উঠে এল চারে।
আরো পড়ুন: বাবার মৃত্যুও দমাতে পারল না, শোক বুকে চেপে ব্যাট করলেন মনদীপ
এর মধ্যেই পিতা হারানো মনদীপ সোমবার আইপিএলের শিরোনামে। চোট পাওয়া মায়াঙ্ক আগারওয়ালের পরিবর্তে ওপেন করতে নেমেছিলেন ক্রিস গেইলের সঙ্গে। গেইল-মনদীপ জুটি রোলার কোস্টার চালাল কেকেআর বোলারদের উপর। নাইট বাহিনীর ১৫০ রান তাড়া করতে নেমে মনদীপ শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং উপহার দিতে থাকেন।
দ্বিতীয় উইকেটে গেইলের (৫১) সঙ্গে ১০০ রানের পার্টনারশিপও গড়েন তিনি। ৬৬ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয় এনে দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। কামিন্স থেকে বরুণ চক্রবর্তী- কোনো বোলারকেই রেয়াত করেননি তিনি। মনদীপের ইনিংস সাজানো ৮টা বাউন্ডারি এবং ২টো ওভার বাউন্ডারিতে।
ম্যাচের পরেই আবেগে বিহ্বল হয়ে পড়েন পাঞ্জাব দ্য পুত্তর। তাঁর লড়াকু ইনিংসের প্রশংসা করে মনদীপকে দলের সতীর্থরা স্বান্তনায় ভরিয়ে দেন। পরে আইপিএলের অফিসিয়াল হ্যান্ডল থেকে শেয়ার করা হয় আবেগঘন সেই মুহূর্তের ভিডিও।
You deserve it all and more @mandeeps12 ????????#Dream11IPL pic.twitter.com/c5GRlWgU5q
— IndianPremierLeague (@IPL) October 26, 2020
মনদীপ সিংয়ের বাবা পাঞ্জাব ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টসের একজন আধিকারিক ছিলেন। লিভারে সংক্রমণ নিয়ে মোহালির এক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল তাঁকে। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁকে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই কিংস বাহিনী শনিবার হায়দরাবাদ ম্যাচে কালো আর্মব্যান্ড পড়ে নামে।
টানা পঞ্চম জয়ের পর আনন্দে ভাসতে ভাসতে অধিনায়ক কেএল রাহুল প্রশংসায় ভরিয়ে দেন মনদীপকে, "যেভাবে ও খেলল, সবাইকে আবেগী করে তুলেছিল।" ম্যাচের পরে নিজের বাবাকে স্মরণ করে মনদীপও বলেন, "আমার বাবা সবসময় আমাকে নট আউট থাকার কথা বলতেন। বলতেন, ১০০ হোক বা ২০০ সবসময় নটআউট থাকা উচিত। সেই জন্যই এই ইনিংসটা স্পেশাল।"
এরপরে মনদীপ আরো জানিয়েছেন, "আগের ম্যাচে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেছিলাম। তবে সেভাবে ব্যাটিং করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করিনি। তাই এই ম্যাচের আগে রাহুলের সঙ্গে কথা বলি। রাহুল আমাকে নিজের মত করে ইনিংস সাজিয়ে খেলার পরামর্শ দেয়। আমি যে ম্যাচ জেতাতে পারি। সেই বিশ্বাসটা ছিল। নিজের খেলায় আমি খুশি। গেইলও আমাকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করতে বলেছিল। ওকে আমি আবার অবসর না নেওয়ার অনুরোধ করি।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন