ফেব্রুয়ারি-মার্চে দেশে সফলভাবে ইংল্যান্ড সিরিজ আয়োজন করেই আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল বিসিসিআই। বিদেশে নয়, তাই দেশেই আইপিএলের আসর বসে। তবে সেই সিদ্ধান্ত যে বুমেরাং হয়ে যাবে, তা ভাবতে পারেননি বোর্ডের কেউ-ই। মাত্র ২৯ ম্যাচ পরেই আইপিএল বন্ধ হয়ে গিয়েছে ২৪ ঘন্টা আগে।
এমন সময়েই ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক নাসের হুসেন বলে দিলেন, ভারতে আইপিএল আয়োজন করাই ভুল হয়েছিল বিসিসিআইয়ের। ডেইলি মেইল-এ নিজের কলামে নাসের হুসেন লিখেছেন, "অনেক হয়েছে। একাধিকবার জৈব সুরক্ষা বলয়ের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার পর আইপিএল বন্ধ করা ছাড়া ভারতের হাতে আর অন্য কোনো উপায় ছিল না। এটা ক্রিকেট খেলার থেকেও যেন বড় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ক্রিকেটাররা কেউই নির্বোধ অথবা অসংবেদনশীল নন। ভারতে কী হচ্ছে, তা সকলেই চোখ কান খোলা রেখে বুঝতে পারছিল। টিভিতে ওঁরা দেখছিল, অক্সিজেন, বেডের অভাবে কীভাবে ভারতের মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।"
আরো পড়ুন: আইপিএল বন্ধে ক্ষতি কোটি কোটি টাকা! কার্যত ভিখারি হয়ে গেল সৌরভের বোর্ড
"ক্রিকেটাররা দেখছিলেন, অব্যবহৃত এম্বুলেন্স মাঠের বাইরে অপেক্ষা করছে। সেই সময়ে সেটা ঠিক কিনা, তা নিয়ে ক্রিকেটারদের মানসিক দ্বন্দ্ব ছিল।" বলেছেন তিনি।
খুচখাচ সমস্যা বাদ দিলে আইপিএল আয়োজনে প্রথম ধাক্কা আসে বরুণ চক্রবর্তী এবং সন্দীপ ওয়ারিয়র কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ার অর। সেদিন বিকালেই আরো তিনজন সেই তালিকায় নাম লেখান। আর ২৪ ঘন্টা পরেই আক্রান্তের সংখ্যা ৭-এ পৌঁছে যায়। তারপরেই আইপিএলে বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঘটনা হল, আইপিএল যখন শুরু হয়, তখন সংক্রমণের মাত্রা এভাবে লাগামছাড়া হয়ে যায়নি। তবে সপ্তাহ গড়াতে না গড়াতেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
তবে নাসের হুসেন মনে করছেন নিরাপত্তা ঝুঁকি না নিয়ে এবারেও আইপিএলে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আয়োজন করতে পারত বিসিসিআই। তিনি জানাচ্ছেন, "প্রথম ভুলটাই হয়, ভারতে আইপিএল আয়োজন করে। ছয় মাস আগেই ইউএই-তে দারুণভাবে আইপিএল হয়েছিল। সেই সময় কোভিড নিয়ন্ত্রণেই ছিল। বায়ো বাবলের নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার মতোও কিছু ঘটেনি। ওঁরা তো ওখানেই আইপিএল করতে পারত।"
কোভিড পরিস্থিতির কারণে একের পর এক বিদেশি ক্রিকেটার নাম তুলে নিলেও টুর্নামেন্ট আয়োজন করার বিষয়ে আশাবাদী ছিল বোর্ড। লিয়াম লিভিংস্টোন বাবলে ক্লান্তির কারণ দেখিয়ে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তারপরেই তিন অজি ক্রিকেটার সরে দাঁড়ানোর তালিকায় নাম লেখান- রাজস্থান রয়্যালসের এন্ড্রু টাই, আরসিবির কেন রিচার্ডসন, এডাম জাম্পা।
বর্তমানে আইপিএল বন্ধ করে দিলেও বিদেশি ক্রিকেটারদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়াই নতুন চ্যালেঞ্জ ভারতীয় বোর্ডের কাছে। অস্ট্রেলিয়া বাদ দিয়ে বাকি ক্রিকেটাররা দেশে সরাসরি যেতে পারবেন। অবশ্য ফের একবার আইসোলেশন পর্ব কাটাতে হবে তাদের। অন্যদিকে, অস্ট্রেলীয়রা ১৫ মে পর্যন্ত দেশে ফিরতে পারবেন না। তাই আইপিএলে অংশগ্রহণকারী অজিরা মালদ্বীপ অথবা শ্রীলঙ্কায় কিছুদিন কাটিয়ে তারপর দেশে ফিরবেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন