আরসিবিকে চিন্নাস্বামীতে দুর্ধর্ষভাবে হারানোর পরেই আন্দ্রে রাসেল বলে গিয়েছিলেন, জয়ের জন্য রীতিমত চাপে ছিল কেকেআর। টানা চার ম্যাচের পর জয়ে ফিরলেও এখনও কঠিন পথ পেরোনো বাকি নাইটদের। দলগতভাবে আরসিবিকে উড়িয়ে দিলেও কেকেআরের বিগ ম্যাচ প্লেয়াররা এখনও সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি।
ক্যারিবীয় ফ্লেভার এখনও অনুপস্থিত:
ব্যাট হাতে সেরা ছন্দে নেই রাসেল। তবে বল হাতে নিজের ব্যাটিংয়ের অফফর্ম মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন রাসেল। উমেশ যাদব হোক বা বিদেশি দুই সিমার লকি ফার্গুসন, টিম সাউদি প্রভাব ফেলতে পারছেন না। শার্দূল ঠাকুর এখনও পুরোপুরি ফিট নন। এমন অবস্থায় রাসেল কেকেআরের বোলিংয়ের অন্যতম অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছেন। আরসিবি ম্যাচেই যেমন রাসেল বল হাতে ৪ হাতে মাত্র ২৯ রান খরচ করেছিলেন। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ, ম্যাচের মোক্ষম সময়ে বিরাট কোহলি এবং ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে আউট করেছিলেন তিনি।
রাসেল বল হাতে ছাপ ফেললেও অন্য এক ক্যারিবীয় সুনীল নারিন একদমই ব্যর্থ। আরসিবির বিপক্ষেও ৪১ রান বিলিয়ে দিয়েছিলেন। উইকেট ছাড়াই। আইপিএল ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্পিনার নারিন। তবে এই সিজনে একদমই ফর্মে নেই তিনি।
রয়ের জন্য কেকেআর শিবিরে জয়ের আনন্দ:
এতদিন কেকেআরের টপ অর্ডার ধুঁকছিল। তবে জেসন রয়ের প্ৰথম একাদশে অন্তর্ভুক্তির পর থেকেই কেকেআরের ব্যাটিং আরও অপ্রতিরোধ্য মনে হচ্ছে। তিন ম্যাচে ইংরেজ ওপেনার করে গিয়েছেন ৪৩, ৬১ এবং ৫৬। আগের ম্যাচে জেসন রয়ের দুরন্ত ইনিংস-ই নীতিশ রানা, ডেভিড ওয়াইজ, রিঙ্কু সিংদের বড় রান গড়ার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিয়েছিল।
কেকেআরের বোলিং কোচ ভরত অরুণ-ও বলে গিয়েছেন পাওয়ার প্লে-র যে মিসিং পাজল ছিল, জেসন রয় আসায় তা মিটে গিয়েছে।
প্লে অফের অঙ্ক:
টুর্নামেন্ট আপাতত অর্ধেক গড়িয়েছে। কেকেআরের কাছে প্লে অফের অঙ্ক খুব স্পষ্ট। শেষ ছয় ম্যাচের অন্তত পাঁচটিতে জিততে হবে কেকেআরকে। তবে এটা বাড়তি চাপের কারণ হবে না বলেই মনে করছেন কেকেআরের সহকারী কোচ জেমস ফস্টার। তিনি জানাচ্ছেন, "এই বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ব্যাটিং ইউনিট হিসাবে আমাদের ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে হবে। আগামী ম্যাচগুলো উপভোগ করাই আপাতত চ্যালেঞ্জের। কয়েক বছর আগেও এরকম পরিস্থিতি থেকে আমরা ফাইনালে পৌঁছেছিলাম। তাই নিজেদের আত্মবিশ্বাসে ভরসা রাখতে হবে। এভাবেই আমরা এগোতে পারব।"
ম্যাচের মূল যুদ্ধ: ম্যাচের অন্যতম আকর্ষণীয় ডুয়েল হতে চলেছে আন্দ্রে রাসেল বনাম রশিদ খানের লড়াই। আফগান লেগস্পিনারের বিরুদ্ধে ক্যারিবীয় সুপারস্টারের ব্যাটিং গড় মাত্র ৩.৬৭। স্ট্রাইক রেট ৬১.১১। এখনও পর্যন্ত রশিদ খান তিনবার আউট করেছেন কেকেআর তারকাকে। রশিদ খানের বিপক্ষে নীতিশ রানার যুদ্ধও বেশ লোভনীয়। আফগান স্পিনারের কাছে দু-বার উইকেট ছুঁড়ে দিয়েছেন নাইটদের ক্যাপ্টেন। অন্যদিকে, নারিনও ঋদ্ধিমানকে চারবার আউট করেছে। পাওয়ার প্লে-তে এসব লড়াই-ই ম্যাচের ফলাফল নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
হেড টু হেড রেকর্ডস:
আইপিএলে দুই দল দু-বার মুখোমুখি হয়েছে। দু-দলই একবার করে জিতেছে। শেষবারের ম্যাচ তো ইতিহাসে ঢুকে গিয়েছে। ইয়াশ দয়ালকে টানা পাঁচটা ছক্কা হাঁকিয়ে রিঙ্কুর ম্যাচ জেতানো ইনিংস এখনও স্মৃতিতে টাটকা। তবে ঋদ্ধিমান সাহা বলছেন। বারবার এরকম ঘটনা ঘটে না। লাখে একবার সেরকম ঘটনা ঘটে। ঋদ্ধিমান ম্যাচের আগে বলে দিয়েছেন, "দিনটা রিঙ্কুর ছিল, দয়ালের নয়। হাজারে, লাখে একবার এরকম ঘটে।"
Read the full article in ENGLISH