Advertisment

এত কোটি কোটি খরচ করে স্টার্ককে কিনলেন কেন! অবশেষে মুখ খুললেন KKR সিইও ভেঙ্কি মাইশোর

স্টার্ককে ২৪.৭৫ কোটিতে কিনে মুখ খুললেন KKR CEO! ইডেন চমকানোর বার্তা এল সরাসরি

author-image
IE Bangla Sports Desk
New Update
starc-kkr

নিলামে কেকেআর অবিশ্বাস্য দর দিয়ে কিনেছে স্টার্ককে (টুইটার)

চলতি বছরের শুরুতে মুম্বইয়ে সদ্য চালু হওয়া মহিলা প্রিমিয়ার লিগে (ডব্লিউপিএল) খেলার সময়, অ্যালিসা হিলি (মিচেল স্টার্কের স্ত্রী) তাঁদের দাম্পত্য জীবনের একটি দেজা-ভু (ইতিমধ্যে ঘটেছে, এমন ঘটনা), এই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন। হিলি বলেন, 'আমি এখানে (ভারতে) ছিলাম। সেই সময় মিচ আরসিবির হয়ে দুই বছর খেলেছে। ওঁর সঙ্গে সেই মুহূর্তগুলি ভাগ করে নেওয়া সত্যিই বেশ উত্তেজনাপূর্ণ ব্যাপার ছিল। আমরা সেই সব ব্যাপারে বহু কথাও বলেছি। ও এখানে ডব্লিউপিএলের জন্য থাকতে চায়। ও আমার চেয়ে অনেক বেশি টেস্ট ক্রিকেট খেলে। ওর সময়সূচি ভীষণই ব্যস্ত। তবে আমার সন্দেহ নেই যে ও যদি আইপিএলে ফিরে আসার সুযোগ পায়, তবে সেই সুযোগটা নেবে।'

Advertisment

মিচেল স্টার্ক শেষবার আইপিএল ম্যাচে বোলিং করার পর আট বছর কেটে গেছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ছিল আট বছর। কারণ, মঙ্গলবার দুবাইয়ে ১৫ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে একজন খেলোয়াড়ের নিলাম নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে দর হাঁকার চূড়ান্ত যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। যার শেষে, ৩৩ বছর বয়সি অজি পেসার ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়ের শিরোপা পেয়েছেন। ১৪টি ম্যাচের জন্য ২৪.৭৫ কোটি টাকা। যদি বেশি খেলতেও হয়, সর্বাধিক খেলতে হবে ১৭টি ম্যাচ। টাকার অঙ্কটা এতই অবিশ্বাস্য যে, বিভিন্ন জন হোয়াটসঅ্যাপে বারবার ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করেছে। এই বিপুল অর্থের বিনিময়ে কেকেআরে যোগদানের ব্যাপারে মিচেল স্টার্ক প্রতিক্রিয়ায় JioCinema-কে বলেন, 'আমার স্ত্রী ভারতে মহিলা দলের সঙ্গে গেছেন। তাঁদের কভারেজ অস্ট্রেলিয়ায় আমার পাওয়া কভারেজের থেকে কিছুটা এগিয়ে ছিল। তাই স্ক্রিনে দেখার আগেই আমি আপডেট পাচ্ছিলাম।'

খেলার সুবাদে থাকার জেরে, স্টার্কের স্ত্রী হিলি প্রাণভরে ঘুরে দেখেছেন মায়ানগরী মুম্বই। যেন একটা স্বপ্নের শহর। তবে, স্টার্ক যেখানে যাচ্ছেন, সেই কলকাতা আবার পরিচিত 'সিটি অফ জয়' বা আনন্দের শহর হিসেবে। স্টার্ক, ২০১৮ সালেও কেকেআরে ছিলেন। কিন্তু, সেটা অর্ধেক থাকার ব্যাপার। দুই বারের আইপিএল বিজয়ী কেকেআর, সেবছর স্টার্ককে ৯.৪ কোটি টাকায় কিনেছিল। কিন্তু, ডান পায়ে স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের জেরে স্টার্ক গোটা মরশুমটা মিস করেন।

সেই কথা ভোলেননি কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইসোরও। ভেঙ্কি বললেন, 'আমাদেরও সেই জন্য কষ্ট হয়েছিল। কিন্তু, আমরা ওঁকে বলেছিলাম, এসব নিয়ে চিন্তা করবেন না।' সেই সব পুরোনো দিনের বদলে কেকেআর সিইওর চোখে এখন কেবল আগামী সুদিনের কল্পনা। ভেঙ্কির কথায়, 'ইডেন গার্ডেনে তাঁর রান আপ (বল করতে ছুটে যাওয়া) দেখাটা বেশ মজার হবে। আমি মনে করি, দর্শকরা বেশ আনন্দ পাবেন।'

কেকেআর কি একটু বেশিই খরচ করে ফেলল না এমন একজন তারকার জন্য যিনি ক্রিকেটে নিজের সেরা সময় পেরিয়ে এসেছেন অনেকদিন আগে! কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইসোর বলেছেন, "নিলামে ১০টি দল ১০০ কোটি টাকা খরচ করে বাড়ি গিয়েছে। প্রতিটি দল আলাদাভাবে ঠিক করেছে, কীভাবে ওই অর্থ খরচ করবে। সেটা প্রতিটি দলের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি। শেষ পর্যন্ত আমরা সব দলগুলোই একই পরিমাণ অর্থই নিলামে ব্যয় করেছি।, মাইসোর একথা বললেও পাঁচ বছর আগে এই স্টার্ককেই ৯.৪০ কোটি টাকায় কেকেআর প্রায় নিয়েই ফেলেছিল। শেষ মুহূর্তে গিয়ে মত বদলায়।

স্টার্ক কি ইতিমধ্যেই অনেকটা বদলেছেন? জুনেই কিন্তু, এই মিচেল স্টার্ক-ই দ্য গার্ডিয়ান-এ উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, কেন তিনি আইপিএলের গ্লিটজ এবং গ্ল্যামার জগত থেকে দূরত্ব বজায় রাখেন। এই ব্যাপারে স্টার্ক বলেছিলেন, 'ছেলে ও মেয়েদের একটি প্রজন্ম আছে, যাঁরা টেস্ট ক্রিকেটে নিজের দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চায়। আমার কাছে ঐতিহ্যবাদীরা এখনও সেসব আশা করেন। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে অবশ্য সহজে অর্থ পাওয়া যায়। আসলে এটা কুখ্যাতির দ্রুত ট্র্যাক মাত্র।'

সঙ্গে অবশ্য স্টার্ক বলেছিলেন, 'অবশ্য ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সংখ্যা বাড়ছে। ১২ মাসের (বছরভর) ফ্র্যাঞ্চাইজি চুক্তির ব্যাপারে আরও বেশি করে কথা বলা হচ্ছে। যেখানে কোনও খেলোয়াড়ের আন্তর্জাতিক জানালা থাকবে। যেখানে আন্তর্জাতিক খেলায় যেতে এবং খেলতে আপনার ক্লাবের ছাড়পত্র প্রয়োজন হবে। ব্যাপারটা সম্ভবত ফুটবলের মত হবে।' এই শেষের কথাগুলোতেই প্রশ্ন, যে স্টার্ক কি তাহলে এই সব কারণেই নিজের মত বদলালেন?

মঙ্গলবার, নিলামে বিক্রি হওয়ার পর স্টার্ক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে নিজের ভাবনা বদলের সাফাইয়ে বলেছেন, তাঁর মাথায় রয়েছে টি২০ বিশ্বকাপ। সেক্ষেত্রে লিগে খেলা তাঁর কাজে লাগবে। তাছাড়া লিগে তাঁর সতীর্থ ২০ কোটির গন্ডি টপকানো প্যাট কামিন্সও আছেন। খেলছেন জোশ হ্যাজলউডও। এমনকী, যাঁরা বিক্রি হননি, তাঁরাও নিলামের জন্য নাম তুলেছিলেন। আর, টেস্ট ক্রিকেটকে প্রাধান্য দিলেও, তার সংখ্যা কম। পাঁচ দিনের টেস্ট ম্যাচও বর্তমানে বেশ কমই খেলা হয়।

আরও পড়ুন- মুখের ওপর রোহিত-প্রশ্ন, ঢোঁক গিললেন আম্বানি! নিলামের মঞ্চেই বেকায়দায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, দেখুন

অ্যালিসা অতীতে বাড়িতে ক্রিকেট নিয়ে কথোপকথনের কথা বলেছেন। সেই ব্যাপারে মিচেল স্টার্ক বলেন, 'আমরা সামগ্রিকভাবে আন্তর্জাতিক খেলা সম্পর্কে অনেক কথাই বলি। আন্তর্জাতিক খেলার সংখ্যা বাড়াতে আমরা ব্যক্তিগতভাবে কী করতে পারি? যেখানে এই ম্যাচটি চলছে, সমর্থন জানানোর জন্য সেখানে থাকতে পারি। এই ধরনের প্রতিযোগিতার একটি অংশ হওয়ার এটি অন্যতম উপায়। তাতে খেলা উপভোগ করা যাবে। ক্রিকেটের অংশ হওয়ায়, তার অগ্রগতি ঘটবে। আশা করি, আপনার আশেপাশের অন্যরাও তাতে উপকৃত হবেন।'

Cricket Australia KKR Kolkata Knight Riders Australia IPL ipl auction Australia Cricket Team
Advertisment