IPL 2024: শ্রেয়স-ঈশান ইস্যু নাড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটকে। বোর্ডের পরামর্শ কর্ণপাত না করে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাতিল হওয়ার পর ঈশান-শ্রেয়সকে নিয়ে যেন আলোচনা থামছেই না। বোর্ডের এই সিদ্ধান্তে দ্বিধাবিভক্ত ক্রিকেট সমাজ। ইতিমধ্যেই হার্দিক পান্ডিয়ার প্রসঙ্গ টেনে বোর্ডের নীতির সামঞ্জস্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইরফান পাঠান।
এর মধ্যেই বোর্ডের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে নিজেদের তারকার পাশে দাঁড়াল কেকেআর ফ্র্যাঞ্চাইজি। সরাসরি সরকারিভাবে বোর্ডের বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও কেকেআর শিবিরের তরফে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে অপ্রীতিকর একাধিক প্রশ্ন। রেভ স্পোর্টসকে কেকেআরের এক কর্মকর্তার তরফে কেএল রাহুলের নাম ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলে দেওয়া হয়েছে, "কেএল রাহুল-ও তো নিজের কোয়াড্রিসেপস মাসলের ইনজুরি সারাতে লন্ডনে উড়ে গিয়েছে। কই ওঁকে নিয়ে তো এত কথা হয়নি। আর রাহুল কবে রঞ্জি খেলেছে? ওঁর-ও চোট-আঘাতের সমস্যা লেগেই রয়েছে। বহু ম্যাচ মিস করেছে। নিজেদের শরীরের বিষয়ে সংস্লিষ্ট ক্রিকেটারই ভালো বুঝতে পারবে।"
বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে ফর্মে ছিলেন শ্রেয়স। তবে তারকার মিথ্যাচারিতা বেআব্রু হয়ে গিয়েছিল আগেই। চলতি ইংল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের পর ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর শ্রেয়সকে বলা হয়েছিল মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলতে। তবে পিঠে ব্যথার অজুহাত দেখিয়ে বরোদার বিলক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে নামতে রাজি হননি। সেই সময় এনসিএ-এ মেডিক্যাল বিভাগের প্রধান নীতিন প্যাটেল রীতিমত বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল শ্রেয়সের নতুন কোনও ইনজুরি নেই। শেষমেশ রঞ্জির সেমিতে তামিলনাড়ুর বিপক্ষে মুম্বইয়ের জার্সিতে শ্রেয়স খেলতে রাজি হলেও ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈশান-শ্রেয়স বাদ পড়লে হার্দিককে কেন ছাড়! বোর্ডের বিরুদ্ধে ‘স্বজনপোষনের’ বিষ্ফোরক অভিযোগ পাঠানের
বোর্ডের তরফে শ্রেয়সকে কার্যত মিথ্যাবাদী দাগিয়ে দেওয়া হলেও কেকেআর অবশ্য তা মানছে না। রেভ স্পোর্টসকেই ফ্র্যাঞ্চাইজির এক কর্তা জানিয়েছেন, টিম ইন্ডিয়া থেকে বাদ পড়ার পর শ্রেয়স মুম্বইয়ে কেকেআরের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছিলেন রিকভারির উদ্দেশ্যে। এবং গোটা বিষয়টিই মুম্বই ক্রিকেট সংস্থাকে অবহিত করা হয়। এমনকি মুম্বইয়ের রঞ্জি দলের হেড কোচ ওমকার সালভি প্রায়ই কেকেআর ক্যাম্পে আসতেন শ্রেয়সের উন্নতির গতি মেপে নেওয়ার জন্য।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্ৰথম দুই টেস্টের পরেই বাদ পড়েন শ্রেয়স। একদমই ফর্মে ছিলেন না তারকা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, শ্রেয়স নাকি টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে পিঠে দৃঢ়তা অনুভব করার অভিযোগ করেন। তবে তাঁর ইনজুরি বোর্ডের মেডিক্যাল দল মানতে রাজি হয়নি। ফিটনেসের সমস্যার কারণে কোনও ক্রিকেটারকে স্কোয়াডের বাইরে রাখতে হলে সংস্লিষ্ট ক্রিকেটারদের ফিটনেসের আপডেট দেওয়া হয় সরকারিভাবে। তবে আইয়ারের ক্ষেত্রে এরকম কিছুই সরকারি।বিবৃতিতে বলা হয়নি।
বোর্ডের শ্রেয়সের ইনজুরি নিয়ে সন্দিহান হলেও কেকেআর ক্যাম্প-এর সেই কর্তা রেভ স্পোর্টস-কে বলেন, "ওয়ার্ল্ড কাপে খেলার জন্যই কিন্তু শ্রেয়স আইপিএল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিল। এমনকি অস্ত্রোপচারের পরেও দেশের হয়ে খেলার তাগিদে কর্টিসল ইনজেকশন নিয়ে বিশ্বকাপে নেমেছিল। সেমিফাইনালে এবং ফাইনালে এই যন্ত্রণা নিয়েই খেলতে বাধ্য হয় ও। শ্রেয়স-ই একমাত্র ক্রিকেটার যে বিশ্বকাপের পরেও ব্রেক পায়নি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে হোম টি২০ সিরিজ খেলেছে। তারপরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছে। ঘরে ফেরার পর ওঁকে রঞ্জিতে খেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইংল্যান্ড সিরিজ শুরুর আগে ও রঞ্জিতেও খেলেছে। একজন ক্রিকেটারের কি নিজের পছন্দের কোচের তত্ত্বাবধানে ট্রেনিং করার স্বাধীনতা টুকুও নেই?"
শ্রেয়স বনাম কেকেআর বিতর্ক ছাপিয়ে আইপিএলের আগেই শুরু হয়ে গেল কেকেআর বনাম বোর্ড ধুন্ধুমার। এই জল কতদূর গড়ায় সেটাই আপাতত দেখার।