আইপিএলের নিলামে মুজিব উর রহমানকে বেস প্রাইস ২ কোটি টাকায় কিনেছিল কেকেআর। সুনীল নারিনের ব্যাক আপ হিসেবে আফগান স্পিনারকে তুলে নিয়েছে নাইট রাইডার্স শিবির। তিন বছর পর আইপিএলে প্রত্যাবর্তনের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি।
নভিন উল হক আইপিএল তো বটেই গোটা দুনিয়া জুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলে বেড়ান। লখনৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে গত সিজনে আট ম্যাচে ১১ উইকেটও শিকার করেছিলেন। আইপিএলে উত্তেজনা সঞ্চার করেছিলেন বিরাট কোহলির সঙ্গে দ্বৈরথে জড়িয়ে। যদিও বিশ্বকাপের সময় সেই দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়েছেন নিজেই।
ফজলহক ফারুখিকে আবার নিলামের আগে রিটেন করেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ৫০ লক্ষ টাকায় ফজলহককে সই করিয়েছিল হায়দরাবাদ ফ্র্যাঞ্চাইজি। তারপর টানা দুটো সিজন খেলেছেন উমরান মালিক, ভুবনেশ্বর কুমারদের পাশে। সাত ম্যাচে ৬ উইকেটও নিয়েছেন।
আফগানিস্তান ক্রিকেটের এই তিন নক্ষত্রকেই সম্ভবত আসন্ন আইপিএলে দেখতে পাওয়া যাবে না। দেশের বোর্ডের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে তিন তারকার-ই ক্রিকেট কেরিয়ার সঙ্কটের মুখে।
কী হয়েছে?
সম্প্রতি তিন তারকাই আফগান বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে থাকতে চেয়েছেন, যাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আরও বেশি সময় দিতে পারেন। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে আফগান বোর্ড স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সংশ্লিষ্ট তিন তারকাকে আগামী দুই বছরের জন্য কোনওভাবেই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার জন্য এনওসি দেওয়া হবে না। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার জন্য সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারদের সেই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকে এনওসি জোগাড় করতে হয়। আর আফগান বোর্ডের তরফে এই সংশাপত্র না দেওয়ার ঘোষণা করার পরেই তিন তারকার আইপিএলে খেলা নিয়ে সংশয় হাজির হয়েছে।
শুধু এনওসি দেওয়াই নয়, তিন তারকাকে আগামী এক বছর কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বহিষ্কৃত করার ঘোষণাও করেছে এসিবি (আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড)। আফগান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, "জাতীয় দলের মুজিব উর রহমান, নভিন উল হক, ফজলহক ফারুখিকে ২০২৪ কেন্দ্রীয় চুক্তি বিলম্ব করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করার জন্য ওঁদের আগামী দুই বছর এনওসি'ও দেওয়া হবে না।"
"জাতীয় দলের স্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে বাণিজ্যিক লিগকে অগ্রাধিকার দেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। জাতীয় দলে খেলা সবসময় জাতীয় দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। এই জন্য এই তিন জন ক্রিকেটারকে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।"
তিন তারকার বিরুদ্ধে পুরো বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য এক তদন্তকারী কমিটি গঠন করা হয়েছিল এসিবি-র তরফে। বোর্ডকে নাকি তিন তারকাই জানিয়ে দেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে থাকতে চান। এবং জাতীয় দলে তাঁদের অংশগ্রহণের বিবেচনা করার আগে যেন বোর্ডের তরফে তাঁদের সম্মতি নেওয়া হয়। এতেই ক্ষুদ্ধ হয় এসিবি। তারপরই তদন্তকারী কমিটির পরামর্শে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে এক বছরের ছেদ এবং এনওসি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে মুজিব উর রহমান বিগ ব্যাশ লিগে খেলতে ব্যস্ত মেলবোর্ন রেনেগ্রাডস-এর হয়ে। এনওসি প্রত্যাহার করে দেওয়ার পর বিগ ব্যাশ লিগ না খেলেই তিনি আফগানিস্তানে ফিরে আসেন কিনা, সেটাই দেখার।