Advertisment

নিলামের ভুলে বিধ্বস্ত ধোনির শিষ্য, পরিবার! মারাত্মক অভিযোগে বিদ্ধ দিল্লি ক্যাপিটালস

দিল্লি ক্যাপিটালস বড় অভিযোগে কাঠগড়ায়

author-image
IE Bangla Sports Desk
New Update
delhi-capitals

অভিযোগে সমস্যায় দিল্লি ক্যাপিটালস (টুইটার)

এ এক আবেগপ্রবণ মা আর হতাশায় ডুবে যাওয়া ক্রিকেটারের গল্প। আইপিএল নিলামে দিল্লি ক্যাপিটালসের ভূমিকা যাঁদের পৌঁছে দিয়েছে এক বিব্রতকর অবস্থায়। এই ক্রিকেটার হলেন ঝাড়খণ্ডের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান সুমিত কুমার। দুবাইয়ে ২০২৪ সালের আইপিএল নিলাম চলাকালীন তিনি কোনও একটা কাজে বাড়ির বাইরে ছিলেন। টেলিভিশনের পরদায় আগ্রহভরে নিলাম দেখছিলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। তাঁদের আশা ছিল, মহেন্দ্র সিং ধোনির ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা বাড়ির ছেলেটা আইপিএলে কোনও না-কোনও একটা দল পাবেই পাবে।

Advertisment

নিলাম চলাকালীন, উপস্থাপিকা মল্লিকা সাগর সুমিতের নাম ঘোষণা করতেই তাঁর মা হাতজোড় করে ভগবানকে ডাকা শুরু করে দেন। সুমিতের নাম ও ছবি বারবার টেলিভিশনের পরদায় দেখানো শুরু হয়। নিলামে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই তাঁকে নিতে আগ্রহ দেখান। দেখানো হয় ন্যূনতম মূল্য ২০ লক্ষ টাকা। নিলামে সেই দর চড়তে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত দিল্লি ক্যাপিটালস ১ কোটি টাকায় সুমিতকে তুলে নেয়। টেলিভিশনের পরদায় যা দেখে সুমিতের পরিবার রীতিমতো কেঁদে ফেলে। ভেজা চোখেই সুমিতের মা তাঁকে ফোন করেন। অভিনন্দন জানান। আর, সেই সময় ফোনে কথা বলতে টেলিভিশন সেটের সামনে থেকে উঠে যান।

দিল্লি ক্যাপিটালস এরপর সুমিতের ফোটো ছাপায়। তাঁকে ট্যাগ করে এবং সুমিতকে নিজেদের পরিবারে স্বাগত জানায়। এরপরই ঝাড়খণ্ডে সুমিতের বাড়িতে তীব্র আলোড়ন পড়ে যায়। বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা সুমিতের বাড়ির সামনে জড় হন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের থেকে বাইট সংগ্রহের চেষ্টা চালান। আত্মীয়-পরিজনরাও সুমিতদের বাড়িতে ভিড় করতে শুরু করেন। যাঁরা আসতে পারেননি, ফোনেই শুভেচ্ছা জানানো শুরু করেন। কিন্তু, সুমিত আর সুমিতের পরিবারের লোকজন জানতেন না যে তাঁদের এই আনন্দ ক্ষণস্থায়ী হবে! গোটা বিষয়টাই বদলে যাবে। আর, আনন্দ পরিণত হবে বেদনায়!

সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডে সুযোগ-সুবিধার অভাবে সুমিত নাগাল্যান্ড দলের হয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করেছেন। নিলামের পর আনন্দের মধ্যেই সুমিত আচমকা দেখতে পান, দিল্লি ক্যাপিটালসের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তাঁর ছবি বদলে গিয়েছে। তাঁর বদলে সেখানে জ্বলজ্বল করছে হরিয়ানার ক্রিকেটার সুমিত কুমারের নাম। ঘটনাটি সুমিত তাঁর মাকে জানান। তবে, সেটা জানানোর চেয়েও সান্ত্বনা দেওয়াটা বেশি ছিল। কারণ, খবরটা জানতে পেরে তাঁর মা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এই ব্যাপারে ২৭ বছরের সুমিত সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আমার মা এত খুশি হয়েছিল! তিনি আমার জন্য টানা প্রার্থনা করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু, একটা কীভাবে ঘটল, আমি বুঝতে পারছি না। আমি মানছি, দু'জনের নামটা এক। কিন্তু, টিভি স্ক্রিনে যে ছবিটা দেখানো হল, সেটা কীভাবে ঘটল? সেখানে আমার ফোটো দেখানো হল, আমার নাম দেখানো হল! আমি আমার মাকে এখন এসব কিছুতেই বোঝাতে পারছি না। প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছে। টেলিভিশনে আমার নাম আর ফোটো দেখে এত আনন্দ পেয়েছিল! সেখানে এমন ব্যাপার সহ্য করতে পারছে না। দিল্লি ক্যাপিটালস একটা বড় দল। তারা একজন খেলোয়াড়ের আবেগ নিয়ে এমন করতে পারল! ভাবতেও পারছি না। ওরা তো আমার ফোটো ইনস্টাগ্রামেও দিয়েছিল। আমাকে ট্যাগ করেছে। আমি সেই কারণে একশো শতাংশ নিশ্চিত ছিলাম। কিন্তু, যেই কয়েক ঘণ্টা পরে ওরা (দিল্লি ক্যাপিটালস) নোটিফিকেশনটা ডিলিট করে দিল, তখনই আমার সন্দেহ হয়েছিল!'

এখন সুমিত আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জনে জনে এই কাহিনি সবাইকে বলতে হচ্ছে। পরিচিত থেকে সংবাদমাধ্যম, সবার জিজ্ঞাসা মেটাতে হচ্ছে। যা গোটা পরিবারের কাছে যথেষ্ট বিব্রতকর ব্যাপার হয়ে উঠেছে। এই ব্যাপারে সুমিত বলেন, 'এটা আমার আর আমার পরিবারের কাছে অত্যন্ত বিব্রতকর ব্যাপার। আমি অনেক শুভেচ্ছা পেয়েছিলাম। বন্ধু-বান্ধব থেকে ক্রিকেটারদের অনেকেই আমার ফোটো-সহ নিলামের স্ক্রিনশন তুলে মেসেজ করেছেন। আমি বলে বোঝাতে পারব না, আমার পরিবারের এখন ঠিক কী অবস্থা!'

ঝাড়খণ্ডের বোকারোর সুমিত মাত্র ১০ বছর বয়সে খেলা শুরু করেন। তাঁর বাবা ছিলেন পেশায় মেকানিক। বাবার হাত ধরেই সুমিতের ক্রিকেটে আসা। এরপর ২০১৪-১৫ সালে সুমিত ঝাড়খণ্ডের সিনিয়র দলে সুযোগ পান। ২০১৪-১৫ সালে তিনি ঝাড়খণ্ডের সিনিয়র দলে চান্স পান। বর্তমানে খেলছেন নাগাল্যান্ড রাজ্য দলের হয়ে। ইতিমধ্যেই ২০টি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ম্যাচ এবং এ তালিকাভুক্ত ২৬টি ম্যাচ এবং ২১টি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন সুমিত।

আরও পড়ুন- টি২০ বিশ্বকাপে ভারতের ক্যাপ্টেন কে! রোহিতের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিরাট আপডেট প্রকাশ্যে, খতম সব জল্পনা

সংবাদমাধ্যমকে সুমিত বলেন, 'আমি মাহি ভাইয়ের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। ওঁর সঙ্গে ড্রেসিরুম শেয়ার করেছি। ওঁর টিপস পেয়েছি। আমি ওঁকে দেখেই উইকেটকিপিং শুরু করি। উনি আমাকে সবসময় ছোট ভাইয়ের মত স্নেহ করেছেন। আমার রাস্তা এখানেই শেষ হচ্ছে না। আমি হতাশ। তবে, লক্ষ্য অর্জনের পথে লড়াই চালিয়ে যাব।'

MS DHONI jharkhand Delhi Capitals Nagaland ipl auction
Advertisment