Advertisment

নিলামে KKR-এর মাস্টারস্ট্রোক 'দ্বিতীয় নারিন'কে তুলে! টেনিস বলের এই তারকাই এখন তুরুপের তাস

রমেশ কুমারকে কেকেআর কিনে চমক দিয়েছে। আগামীর তারকা হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখেন এই বাঁ হাতি স্পিনার।

author-image
IE Bangla Sports Desk
New Update
NULL

কোনও প্ৰথম শ্রেণির ক্রিকেটেই খেলেননি। পাঞ্জাবের জালালাবাদের ২৩ বছরের রমেশ কুমারকে ২০ লক্ষ টাকার বেস প্রাইসে তুলে নিয়ে নিলামের মঞ্চে কিছুটা বিস্ময় উদ্রেক করেছে কেকেআর শিবির।

Advertisment

ব্যাটসম্যান হিসেবে আইপিএল নিলামে নাম নথিভুক্ত করেছিলেন। তবে ব্যাটিং নয়, রমেশের প্রধান শক্তি বোলিং। বাঁ হাতি স্পিনার যে কিনা দু-দিকেই বল টার্ন করাতে পারেন। ইন্টারনেটে জালালাবাদের নারিন নামে বেশ বিখ্যাত তিনি। কারণ রমেশ নিজেই জানাচ্ছেন, ক্যারিবিয়ান রহস্য স্পিনার নারিনের সঙ্গে তাঁর বোলিং একশনে অনেক মিল রয়েছে।

আরও পড়ুন: অবিক্রিতই রায়না! CSK-ও কেন মুখ ফেরাল নিলামে, আসল কারণ জেনে নিন

টেনিস বলের ক্রিকেট খেলে বেড়ে উঠেছেন। তবে স্থানীয় ক্রিকেট সার্কিটে রমেশ ছক্কা হাঁকানোর জন্য আলাদা নাম করে নিয়েছেন। ইউটিউবেই 'নারিন জালালাবাদ' সার্চ করলে পাওয়া যাবে একাধিক ভিডিও। যেখানে তাঁকে এক ওভারে পাঁচ ছক্কা হাঁকাতে দেখা যাচ্ছে। ১০ বলে ৫০ করার কীর্তি ফুটে উঠছে ইউটিউবের স্ক্রিনে।

ইউটিউবের এক সাক্ষাৎকারে রমেশকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁর ফেভারিট প্লেয়ার কে! রমেশ অজ্ঞাত এক টেনিস বল ক্রিকেটারের নাম নেন। প্রিয় বোলার হিসাবেও বেছে নিয়েছেন স্থানীয় এক ক্রিকেটারকে। নিজের ক্রিকেটীয় জগৎ সম্পর্কে এতটাই সচেতন তিনি।

মফঃস্বলের গড়পড়তা ছেলেদের যেমন ক্রিকেট কেরিয়ারের সূচনা হয়, সেরকম হুবহু রমেশেরও। বাবা একজন মুচি। মা পার্শ্ববর্তী গ্রামে হাতে তৈরি জিনিস বিক্রি করেন। টেনিস বলে ক্রিকেটের হাতেখড়ি। তবে ব্যাটে-বলে সমান দক্ষতার জন্য রমেশ অল্প সময়ের মধ্যে স্থানীয় ক্রিকেট জগতে বেশ নাম করে ফেলেন। স্থানীয় এলাকায় আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্ট হলেই ডাক পড়ে রমেশের।

আরও পড়ুন: মুম্বইয়ে রোহিতের ওপেনিং পার্টনার ১৫ কোটির এই তারকা! নিলাম শেষে ফাঁস আকাশ আম্বানির

পুরোদস্তুর ক্রিকেটার নয়, বরং অন্য কোনও চাকরিতে যোগ দিক রমেশ। এমনটাই ছিল পরিবারের ইচ্ছে। তবে পরিবারের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়েই ক্রিকেটকে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন রমেশ। বিভিন্ন টেনিস বলের ক্রিকেট খেলে যে পুরষ্কার বাবদ অর্থ পেতেন, তা দিয়েই নিজের পড়াশুনার খরচ চালিয়ে এসেছেন এতদিন। স্নাতকেও উত্তীর্ণ হয়েছেন।

টেনিস বলে বারবার দাপুটে পারফরম্যান্স করার পরে বন্ধুরাই ক্রিকেট বল নিয়ে অনুশীলন চালানোর পরামর্শ দেন। প্রথাগত ট্রেনিং না থাকলেও ক্রিকেট বলেও অনায়াসে দাপুটে পারফরম্যান্স মেলে ধরতে থাকেন একের পর এক ম্যাচে। শেষপর্যন্ত মোগার হয়ে জেলাস্তরের ক্রিকেটেও দারুণ পারফরম্যান্স করেন। টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা বোলার হিসাবে নিজেকে জানান দেন।

জেলাস্তরের ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্স করার পরে গত বছর পাঞ্জাবের রাজ্য ক্রিকেটের ক্যাম্পে ডাক পান তিনি। ওখানেই রমেশের সঙ্গে আলাপ হয় গুরকিরত সিং মানের সঙ্গে। যিনি ২০১৬-য় জাতীয় দলের হয়ে তিনটে ওয়ানডে খেলেছিলেন। মানের কাছে নিজের আর্থিক দুরবস্থা খুলে বলেন কেকেআরে সদ্য যোগ দেওয়া প্রতিভা। মান তাঁকে সাফ জানিয়ে দেন, রমেশকে তিনি সাহায্য করবেন। তবে দিনের শেষে পারফরম্যান্সই বিচার্য হবে। মান শেষ পর্যন্ত জেপি আত্রে ট্রফিতে মিনার্ভা ক্রিকেট একাডেমির হয়ে খেলার বন্দোবস্ত করে দেন। প্ৰথম ম্যাচেই রমেশ ৯ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেন। দ্বিতীয় ম্যাচে রমেশ আট ওভারে ৩২ রানে ৪ উইকেট দখল করেন।

আরও পড়ুন: ভাই অর্জুন নিলামে দর পেতেই উচ্ছ্বসিত সারা! ইন্সটা-পোস্টে জানিয়ে দিলেন মনের কথা

সেই ম্যাচের ফুটেজ গুরকিরত মান পাঠিয়ে দেন কেকেআরের সহকারী কোচ অভিষেক নায়ারকে। তারপরেই কেকেআরের ট্রায়ালে ডাকা হয় তাঁকে। সেখানে তাঁর ব্যাটিং, বোলিং দেখার পরে নিলামে কেনার বিষয়ে মনস্থির করে নাইট শিবির।

আর নাইট শিবিরে স্বপ্নের সুযোগ মেলার পরে রমেশ কুমার জানিয়ে দিয়েছেন, "নিলাম আমার গোটা কেরিয়ার বদলে দিয়েছে। আইপিএল আমাকে বড়সড় প্ল্যাটফর্ম এনে দিয়েছে। কখনও প্ৰথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলিনি আগেও। আশা করি এবার রঞ্জিতেও সুযোগ পাব। আসল লক্ষ্য অবশ্যই টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে খেলা। আর গুরকিরত পাজির হেল্প, ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছাড়া কোনও কিছুই সম্ভব ছিল না।"

IPL KKR Kolkata Knight Riders
Advertisment