IPL mega auction: আইপিএলের নিলাম একবছর পিছিয়ে যাক। এমনটাই চায় বেশিরভাগ ফ্র্যাঞ্চাইজি। সেই তালিকায় রয়েছে এমআই, সিএসকে এবং কেকেআরের মত দলগুলো। তারা পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এই বছর ছোট নিলাম চায়। এসব নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বিসিসিআই আর ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সঙ্গে আইপিএল বৈঠক। সভায় ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম নিয়েও আলোচনা হয়েছে। কিন্তু, কোনও ঐকমত্য হয়নি।
বুধবার সন্ধ্যায় আগামী বছরের আইপিএল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মুম্বইয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে বিসিসিআই এবং আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যরা ছিলেন। সেখানে প্রতিটি বড় দলই পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিয়েছে। আর, সেই জন্য বড় বা মেগা নিলামের পরিবর্তে মিনি বা ছোট নিলাম আয়োজনের অনুরোধ করেছে বিসিসিআইকে। তবে, সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত বিসিসিআই নেবে। এমনিতে তিন বছর অন্তর মেগা নিলাম হয়। ২০২৫ সালের আইপিএলের জন্যও সেই নিলাম হওয়ার কথা। কিন্তু, বৈঠকে বড় দলগুলো প্রস্তাব দিয়েছে তিনের বদলে চার অথবা পাঁচ বছর পরপর মেগা নিলাম আয়োজনের।
মেগা নিলামে যে খেলোয়াড়দের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তিন বছর ধরে ছাড়েনি, তাঁদের ইচ্ছা অনুযায়ী সেই সব খেলোয়াড়দের দলবদল করতে দিতে বাধ্য হয়। এতে টিমের গঠনে প্রভাব পড়ে। এই প্রসঙ্গে করোনা আবহে চার বছরের ব্যবধানে শেষ দুটি বড় নিলাম হয়েছিল। অর্থাৎ ২০১৮ সালের পর ২০২২ সালে হয়েছিল মেগা নিলাম। বৈঠকে সেই উদাহরণ টেনেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো বিসিসিআইকে অনুরোধ করেছে মেগা নিলামের বছর পিছিয়ে দিতে।
বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি বিসিসিআইকে জানিয়েছে যে তারা এই পর্যায়ে তাদের দলের মূল প্রতিভাদের দলবদল করতে দিতে চায় না। গত তিন বছরে এজন্য তারা যথেষ্ট অর্থ ব্যয়ও করেছে। এই পরিস্থিতিতে বড় খেলোয়াড়রা নানা কারণে দল বদল করলে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো সার্বিক ক্ষতির মুখে পড়বে। বৈঠকে কার্যত এমনটাই বোঝানোর চেষ্টা করেছে দলগুলোর কর্তারা। বৈঠকে কেকেআর ছাড়াও, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, চেন্নাই সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ, রাজস্থান রয়্যালস এবং গুজরাট টাইটানস এবছর বড় নিলাম স্থগিত করার জন্য বিসিসিআইকে চাপ দিয়েছে।
বৈঠকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষ থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজির সহ-মালিক শাহরুখ খান উপস্থিত ছিলেন। কেকেআরের হয়ে তিনিই বড় নিলামে আপত্তি জানান। এনিয়ে বৈঠকের পরপরই সাংবাদিকদের পার্থ জিন্দাল বলেন, 'আমি অবাক হয়েছি। বিতর্ক ছিল। কিছু লোক বড় নিলাম চায়নি। তারা শুধু ছোট নিলাম চেয়েছে। আমি সেই ক্যাম্পে নেই। কারণ, এটা খেলাকে মাঠের বাইরে নিয়ে চলে যাচ্ছে। এটা আইপিএলকে স্রেফ প্রতিযোগিতার ব্যাপার করে তুলছে। আমরা অনেকেই ব্যাপারটা মানিনি। এখন বিসিসিআই নিজের মত সিদ্ধান্ত নেবে।'
এই বৈঠকের আগেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর একাংশ স্পষ্ট করে দেয় যে, তারা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ৫-৬ জন খেলোয়াড়কে দলে ধরে রাখতে চায়। কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি আবার রাইট টু ম্যাচ (RTM) বিকল্পের জন্য চাপ বৈঠকে চাপ দিয়েছে। যদিও সেই সংখ্যাটা খুব বেশি ছিল না। কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি আবার আনক্যাপড ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্যও আলাদা রিটেনশন ক্যাপ চেয়েছে। তবে, শীর্ষস্থানীয় বেশিরভাগ দলই চেয়েছে, বড় নিলাম আপাতত স্থগিত রাখতে। তবে পাঞ্জাব কিংস, দিল্লি ক্যাপিটালস, লখনউ সুপার জায়ান্টস এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু আবার বড় নিলামের পক্ষে ছিল।
আরও পড়ুন- বিশ্বকাপ জয়ের পর ফের মাঠে কোহলি-রোহিত! শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ানডেতে ভারতের একাদশে চমকের পর চমক
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়মের ব্যাপারে কোন সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়নি। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ছাড়া সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এমআই মালিকরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। যেসব ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো মেগা নিলাম চায় না, তাদের না চাওয়ার অন্যতম কারণ, এই দলগুলোর নিজস্ব ভালো ক্রিকেট একাডেমি আছে। তারা বড়মাপের খেলোয়াড়দের ধরে রেখে, একাডেমি থেকে তরুণ প্রতিভাদের আইপিএলে তুলে ধরতে চায়। কিন্তু, বড় খেলোয়াড়রাই দল থেকে বেরিয়ে গেলে, শুধুমাত্র নতুন বা তরুণ প্রতিভাদের নিয়ে তারা আইপিএলে ভালো কিছু করতে পারবে না। এটাই ভয় আইপিএলের প্রধান ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর।