Virender Sehwag and Glenn Maxwell in IPL 2017: আইপিএলে ২০১৭-য় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের নেতা ছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। সেই সময়েই বীরেন্দ্র শেওয়াগের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিলেন ম্যাড ম্যাক্স। নিজের আত্মজীবনী দ্যা শো-ম্যান-এ ভারতীয় কিংবদন্তির সঙ্গে কীভাবে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিলেন, তা নিয়েই মুখ খুলেছেন।
বলে দিয়েছেন, ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্রিকেট ডিরেক্টর হিসাবে শেওয়াগ সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। এমনকি দলের প্ৰথম একাদশও তিনি ঠিক করতেন।। আইপিএল ২০২৪-এ বিধ্বংসী মেজাজে ছিলেন ম্যাক্সওয়েল। ১৮৭.৭৫ স্ট্রাইক রেটে ৫৫২ রান করেছিলেন। ম্যাক্সওয়েলের তান্ডবে পাঞ্জাব সেবার রানার্স আপ হয়। ২০১৭-এ সেই ঝড় তোলা তারকাকেই নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তবে ক্যাপ্টেন হয়ে সেই ম্যাজিকের পুনরাবৃত্তি করতে পারেননি। গ্রুপ পর্বে ১৪ ম্যাচের সাতটিতে হেরেই প্লে অফের আগে ছিটকে যায়। ম্যাক্সওয়েলের সেই বইয়ের সেই বিতর্কিত অংশ সম্প্রতি প্রকাশ্যে এনেছে ক্রিকইনফো। যেখানে ম্যাক্সওয়েল দলের খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য দায়ী করেছিলেন শেওয়াগকে।
"টেস্ট সিরিজে আমরা যখন মুখোমুখি হয়েছিলাম, সেই সময় শেওয়াগ জানিয়েছিল আমি দলকে নেতৃত্ব দেব। আমরা দুজনে একসময় খেলেছি। তবে অবসরের পর মেন্টরের ভূমিকা নিয়েছিল। কীভাবে দল এগোবে, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল। তখন আমাদের মধ্যে তালমিল ছিল।" সেই বইয়ে লিখেছেন ম্যাক্সওয়েল।
"দল নির্বাচনের জন্য কোচেদের একটা হোয়াটসএপ গ্রুপে থাকা যে জরুরি সেই প্রস্তাব আমিই দিই। সকলেই সেই বিষয়ে সম্মত হয়েছিল। নিজেদের পছন্দের কথা জানাত। ব্যতিক্রম ছিলেন শেওয়াগ।"
"গোটা বিষয়টির শেষে ও এটা স্পষ্ট করে দেয়, যে চূড়ান্ত একাদশ বাছবে ও নিজেই। আমরা মাঠ, মাঠের বাইরে সব জায়গায় হারছিলাম। ও এমন সমস্ত সিদ্ধান্ত নিত, যেটার মোটেই প্রয়োজন ছিল না।"
"গ্রুপের শেষ ম্যাচে এওয়ে কন্ডিশনে পুনেতে চমকের মুখে পড়েছিলাম। ভেজা উইকেটে ব্যাট করতে নেমে আমরা ৭৩ রানে অলআউট হয়ে যাই। যেভাবে ছন্নছাড়া হয়ে আমাদের খেলতে হয়েছিল, তার মধ্যেও যেভাবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত প্লে অফের সমীকরণ-এ ছিলাম, তাতে গর্বিত লাগে এখনও।"
এরপরে তাঁর আরও সংযোজন, "আমি কতটাই না ভুল ছিলাম! আমাদের কোচ যে অরুণকুমার প্রথমবার কোচ হয়েছিলেন। উনি যে কেবলমাত্র নামের কোচ, তা স্পষ্ট হয়ে যায় কয়েকদিনের মধ্যেই। পিছন থেকে দলকে নিয়ন্ত্রণ করছিলেন শেওয়াগ। দলের সকল কোচ, প্লেয়াররা আমার কাছে এসে প্ৰশ্ন তুলছিল। আমি সোজাসাপ্টা কোনও জবাব দিতে পারছিলাম না।"
কীভাবে তাঁকে দলের হোয়াটসএপ গ্রুপ থেকেও বাতিল করা হয়েছিল, তা নিয়েই লিখেছেন তিনি, "একদিন টিম বাসে উঠে বুঝতে পারি দলের হোয়াটসএপ গ্রুপের বাইরে রাখা হয়েছে আমাকে। কী ঘটছিল আদৌ বুঝতে পারছিলাম না। সেই সময়ে শেওয়াগও মিডিয়ায় মুখ খুলে আমাকে 'বড় হতাশা'র বলে দেগে দিয়েছিলেন। ক্যাপ্টেন হিসাবে দায়িত্ব না নেওয়ার জন্য আমাকে দোষারোপ করেছিলেন। ভীষণ অপ্রীতিকর একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বিশেষ করে, যখন ভেবেছিলাম, সৌজন্যের মোড়কেই আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে।"
"আমি ওঁকে টেক্সট করি, ওঁর মন্তব্যে আমি কতটা আহত হয়েছি সেটা বুঝিয়ে। বলে দিই, কীভাবে আমার মধ্যে একটা সমর্থক ও হারাল। ও পাল্টা লেখে, আমার মত ফ্যান ওঁর প্রয়োজন নেই। এরপরে আমাদের আর কথা হয়নি। ফ্র্যাঞ্চাইজিতে আমার সময় যে ফুরিয়ে এসেছে, সেটা বুঝতে পারছিলাম। শেওয়াগকে ওঁরা যদি ধরে রাখে তাহলে ওঁরা যে আবার ভুল করবে। সেটা ফ্র্যাঞ্চাইজিকে জানাই।"