দীর্ঘ দু বছর পর ফের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়র লিগ ফিরেছে চেন্নাইয়ে। কিন্তু প্রথম আইপিএল ম্যাচের ঠিক পরই এল আরও একটি খারাপ খবর চেন্নাইয়ের ক্রিকেট ফ্যানেদের জন্য। কাবেরী জলবন্টন ইস্যুতে চলমান আন্দোলনের দরুন তৈরী সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা ভেবেই চিপক থেকে সমস্ত ম্যাচ তুলে নিল বিসিসিআই। চিপকের বদলে এবার অন্য কোনও শহরে অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচগুলি। গত মঙ্গলবার প্রায় ৪০০০ পুলিশ মোতায়েন ছিল স্টেডিয়ামে। এরকম কঠোর নিরাপত্তাতেই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল চিপকে। সব দেখেই বিসিসিআই চিপক থেকে সব ম্যাচ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।
২৪ ঘণ্টা আগে চিপকে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও চেন্নাই সুপার কিংসের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়েই ছিল প্রবল সংশয়। কাবেরী জলবন্টন ইস্যুতে চেন্নাইতে দফায় দফায় আন্দোলন চলছে। শুধু কলকাতা-চেন্নাই ম্যাচই নয়, ওই শহরে আইপিএল বয়কটের কথাই ভাবছেন আন্দোলনকারীরা। এমনকী দক্ষিনী ছবির মেগাস্টার রজনীকান্তও চেন্নাইয়ের ক্রিকেটার ও সমর্থকদের প্রতিবাদ জানাতে কালো ব্যাজ পড়ে মাঠে নামার আর্জি জানিয়েছিলেন। এই অবস্থাতেই কলকাতা-চেন্নাই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ম্যাচের আগে ও ম্যাচ চলাকালীন দফায় দফায় বিঘ্ন ঘটালেন আন্দোলনকারীরা।
সেদিন রাত আটটার বদলে ম্যাচটি শুরু হয় আটটা তেরোতে। সেদিন বিকেল পাঁচটার সময় একদল আন্দোলনকারী স্লোগান দিতে দিতে চিপক স্টেডিয়ামের ওয়ালাজাহ রোড গেটের বাইরে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। কিছু পরেই পুলিশ এসে তাদের ভ্যানে করে তুলে নিয়ে যায়। এরপর স্টেডিয়ামে ও তার আসেপাশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটোসাটোঁ করা হয়। টিম হোটেল থেকে কেকেআর ও ম্যাচ অফিসিয়ালদের বেরোতেও দেরি হয়ে যায়। ফলে টস অনুষ্ঠিত হয় নির্ধারিত সময়ের কিছুটা পরেই। বিক্ষিপ্ত আন্দোলনের রেশ এসে পড়ে গ্যালারিতেও। কেকেআর-এর ইনিংসের অষ্টম ওভারে স্টেডিয়ামের ‘এফ আপার’ স্ট্যান্ড থেকে ক্রিকেটারদের উদ্দেশ্যে জুতো বৃষ্টি হতে থাকে। রবীন্দ্র জাদেজা, ফাফ দু প্লেসি ও লুঙ্গি নিদিরা মাঠ থেকে জুতো সরাতে শুরু করেন। আন্দোলনকারীদের হাতে ধরা ছিল লাল পতাকাও। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। আন্দোলনকারীদের একেবারে মাঠের বাইরে নিয়ে যান তারা।
কাবেরী জলবণ্টন ম্যানেজমেন্ট বোর্ড গঠনের দাবিতেই তামিলনাড়ুতে এখন আন্দোলনের ঝড় উঠেছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দেশের সর্বোচ্চ আদালত কেন্দ্রকে এই বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল। যাতে দুই প্রতিবেশী রাজ্য তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকের মধ্যে জল বন্টন ইস্যুতে আবহমান বিবাদ মেটে। কিন্তু মোদী সরকার এখনও এই বোর্ড গঠন করে উঠতে পারেনি। ফলে তামিলনাড়ুর প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলই প্রতিবাদে পথে নেমেছে। শুধু রজনীকান্তই নন, কমল হাসানের মতো দক্ষিণী অভিনেতা ও ইলাইয়ারাজার মতো সুরকাররাও এই আন্দোলেন সামিল হয়েছেন। এছাড়াও ওই রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরাও এই আন্দোলনে নিজেদের সমর্থন জানিয়েছেন।