/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/12/ie-Rinku-Singh-1.jpg)
ভারতের ব্যাটসম্যান রিংকু সিং মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩, দক্ষিণ আফ্রিকার সেন্ট জর্জ পার্কে। (এপি)
রিংকু সিং-এর উত্থান অব্যাহত। সেই উত্থানের পথে যেন আরও স্তর, আরও রং যুক্ত হচ্ছে। এ যেন এক অখ্যাত গ্রাম থেকে উঠে এসে কোটিপতি হওয়ার গল্প। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর সমাপতন উপহার দেওয়া ব্যাটসম্যান। যিনি ইতিমধ্যেই টি-টোয়েন্টিতে নিজের আসন প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পাঁচ নম্বরে নেমে ব্যাট করার চ্যালেঞ্জকে নস্যি করে দিয়েছেন। যেন তিনি ২২ গজের এই সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাট উপভোগ করতে এসেছেন।
তাঁর খেলা মানেই নিজেকে একাদশে অপ্রতিরোধ্য করে তোলার দিকে এক বিশাল পদক্ষেপ। মঙ্গলবার ছিল তাঁর তেমনই এক পদক্ষেপের দিন। খেলা বিরতিতে, ভারত ৫৫/৩। আকাশে মেঘ। সিমাররা বাউন্স করছেন। মাঝে মাঝে সেই সব বল সাইডওয়ে মুভমেন্ট করছে। স্পিনারদের থেকে তবুও টুকটাক রান উঠছে। তবে, মাত্র ১০টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা দিয়ে এই পরিস্থিতি সামলানো চাট্টিখানি কথা নয়।
#AidenMarkram brought himself on in the penultimate over, and #RinkuSingh made him pay with back-to-back maximums 🔥
Rinku has brought his A-game to South Africa!
Tune-in to the 2nd #SAvIND T20I
LIVE NOW | Star Sports Network#Cricketpic.twitter.com/HiibVjyuZH— Star Sports (@StarSportsIndia) December 12, 2023
কিন্তু, রিংকু দেখালেন তিনি অন্য ধাতুতে গড়া। তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া। ভারতীয় ক্রিকেটকে তাঁর অনেক কিছু দেওয়ার আছে। শুধুমাত্র বড়-হিট করার ক্ষমতাই নয়। তাঁর সাহস এবং সংযমও অনবদ্য। যে গুণগুলো আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে একজন সফল ব্যাটসম্যানের জন্য অপরিহার্য। অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের ৩৬ বলে ৫৬ ম্লান হয়ে গেল রিংকুর ৩৯ বলে অপরাজিত ৬৮ রানের কাছে। যার জেরে ১৯.৩ ওভারে ভারতে ৭ উইকেটে পৌঁছে গেল ১৮০ রানে। ম্যাচে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল তাঁর সচেতনতা। প্রথম বলেই তিনি স্পিডস্টার জেরাল্ড কোয়েৎজির বলে চার হাঁকান।
আরও পড়ুন- সূর্যকুমারকে ‘জুতো দেখিয়ে’ ভয়ানক বিতর্কে শামসি! গালিগালাজ হজম করে বাধ্য হলেন মুখ খুলতে
আরও পড়ুন- হাত জোড় করে ক্ষমা চাইতে হল রিঙ্কু সিংকে! বিধ্বংসী হাফসেঞ্চুরিতেও মিলল না রেহাই, দেখুন ভিডিও
যখনই মনে হয়েছে রিংকু সামান্য ছটফটে, সূর্যকুমার যাদব এসে পরামর্শ দিয়েছেন, সাহস জুগিয়েছেন। রিংকুও বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি আদর্শ টিমম্যান, সতর্ক যোদ্ধা। এমন ভারসাম্য রেখেই তো তিনি আইপিএলের ম্যাচে শেষ ওভারে যশ দয়ালকে পরপর পাঁচটি ছক্কা মেরেছিলেন। ফেহলুকওয়েওর এক ওভারে তিনটি চার। যেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে রীতিমতো একটা ছেলেখেলা করা। যা দেখে লিজাদ উইলিয়ামসরা বুঝতে পারছিলেন না, ঠিক কী করলে এই ভারতীয় ব্যাটারকে শান্ত করা যাবে! তাঁর মৃত্যুদূতের মত বিধ্বংসী ভূমিকা আর ছক্কা বর্ষণ যে কেবল বৃষ্টিই থামাতে পারে, তা যেন বুঝিয়ে দিল প্রকৃতি। যেন, বাঁচিয়ে দিল প্রোটিয়াদের।
রিঙ্কুর ব্যাটের তান্ডব দেখে মুগ্ধ সুইং ডেল স্টেইন-ও। প্রোটিয়াজ কিংবদন্তি স্পিডস্টার বলে দিয়েছেন, “ওঁর টেম্পারমেন্ট দারুণ লাগল। ইনিংসের শুরুটা আরও ভালো লাগল। একটা বাউন্ডারি হাঁকানোর পরেই সিঙ্গলস নিল। যেন বলল, তোমাদের অনেক ধন্যবাদ, আপাতত একটা সিঙ্গলস -ই নেব। একটা ওভারে প্রথম তিন বলেই ৯-১০ তুলল। সেন্ট জর্জেস পার্কে এটা এক ওভারের জন্য পর্যাপ্ত রান। ও ক্রিজে থেকে প্রত্যেক ওভারে ১৫-১৭ করে তুলে গেল। এটা আমাকে প্রভাবিত করেছে।”
“এমন ইনিংস সাধারণত অভিজ্ঞতার সঙ্গে আসে। হাশিম আমলা এরকম খেলতেন। এতেই স্পষ্ট, রিঙ্কুর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিণতিবোধ রয়েছে। উইকেটের দুই দিক- অফসাইড, লেগ সাইড দুই দিকেই ও সাবলীল। বল সামান্য ওভার পিচড হলেই ও লং অন দিয়ে হাঁকাচ্ছিল। ও সবমিলিয়ে একজন অলরাউন্ড প্লেয়ার।”