আইপিএল শেষ। নজর কাড়লেন অনেক তারকা। রাতারাতি লাইম লাইটে উঠে এলেন ঈশান কিষান, রাহুল তেওটিয়া, দেবদূত পাডিক্কলের মত তরুণ তুর্কিরা। অনেকে আবার প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স না করতে পেরে আপাতত দিন গুনছেন দলছুট হওয়ার। এর মধ্যেই প্রচারে উঠে এলেন ঝাঁকড়া চুলের এক আম্পায়ার। আইপিএল শেষ হয়ে যাওয়ার পর এই আম্পায়ার হয়ত বলছেন, 'পশ্চিম পাঠক! নাম তো শুনা হি হোগা'।
আইপিএলে এসেই সেনসেশন হয়ে গিয়েছেন পশ্চিম পাঠক। শুধু ঝাঁকড়া চুলের জন্যই নয়, নম্র ব্যবহার, আচরণ এবং নিখুঁত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতার জন্য। রবিচন্দ্রন অশ্বিনই যেমন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বলছিলেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা।
আরো পড়ুন: ‘পকেট ডিনামাইট’ ঈশানের বান্ধবী যেন ‘অ্যাটম বম্ব’! লাস্যময়ী অদিতির ‘বায়োডেটা’ জানুন
আরসিবি ম্যাচে পিঠে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন তিনি। এমআরআই রিপোর্টে ধরা পড়ে পিঠের পেশির স্নায়ু পুলব্যাক করেছে। সেই সময় অন্য আম্পায়ার হলে নির্ঘাত বলতেন, সময় অপচয় না করার জন্য। তবে পশ্চিম পাঠক বাকিদের থেকে আলাদা। তিনি অশ্বিনকে প্রথমে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি ঠিক রয়েছেন কিনা! তাঁর শরীরে কোথায় যন্ত্রণা হচ্ছে তা জানতে চান। তারপরেই সরে যান। এমন ব্যবহারের জন্য সেদিন থেকেই পশ্চিম পাঠকের ফ্যান হয়ে গিয়েছেন তারকা স্পিনার, "ওর ব্যবহার থেকে চুলের কেত, সব-ই ভালো লাগে।"
অশ্বিনের মতই আইপিএল দুনিয়ায় আপাতত ঝড় তুলে দিয়েছেন পাঠক। স্রেফ চুলের স্টাইলের জন্য। অনেকেই তাঁকে বলছেন, 'ডিজে আম্পায়ার।' কেউ আবার নামকরণ করেছেন, 'রকস্টার'। আদতে তিনি একজন চার্টার্ড একাউন্ট। তবে আম্পায়ারিংয়ের নেশা বরাবরের ছিল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে পাঠক বলছিলেন, "আমার বন্ধু বান্ধব, আত্মীয়স্বজন প্রত্যেকের কাছ থেকেই অনেক মেসেজ পেয়েছি। সকলেই আমার হেয়ারস্টাইল নিয়ে আলোচনা করছেন। তবে এটা নতুন নয়। শেষ দু-বছর ধরেই চুল বাড়িয়েছি আমি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও এই লম্বা চুল নিয়ে আম্পায়ারিং করেছি।"
৯০-এর দশকে শচীন-কাম্বলীর জগৎ বিখ্যাত কোচ রমাকান্ত আচরেকরের একাডেমিতে নাম লিখিয়েছিলেন। তবে বেশিদূর এগোতে পারেননি তিনি। ক্রিকেটার না হতে পারলেও পশ্চিম পাঠক খেলার আইন নিয়ে মেতে ওঠেন। শেষ পর্যন্ত দুধের স্বাদ মেটে ঘোলে। আম্পায়ার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয় তাঁর।
মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলা প্রতিবেশী শ্রীরাম কান্ননের কাছে খোঁজ পেয়ে জানতে পারেন মুম্বই ক্রিকেট এসোসিয়েশন প্রতি বছর নতুনদের আম্পায়ার হওয়ার সুযোগ দেয়। তবে তার জন্য লিখিত ও মৌখিক দুই পরীক্ষাতেই উত্তীর্ন হতে হবে। সেই এমসিএ থেকেই শুরু হয় পাঠকের পথচলা।
৪৪ বছরের এই মুম্বই আম্পায়ার আগেও আইপিএলে আম্পায়ারিং করেছেন। তবে এই বছরের মত এভাবে সেনসেশন হয়ে উঠতে পারেননি। তিনি যদিও জানিয়ে রাখছেন, কোনো ক্রিকেটার-ই তাঁর চুলের এখনো প্রশংসা করেননি।
আলোচনায় তাঁর চুল। তবে আম্পায়ারিং দক্ষতা নিয়ে কেউ কথা বলে না। পাঠক বলছেন, একদিন নিশ্চয় হেয়ারস্টাইল নয়, তাঁকে পছন্দ করবে আম্পায়ারিং স্কিলের জন্য। আপাতত সেই অপেক্ষাতেই দিন গুনছেন আইপিএলের "রকিং' আম্পায়ার।
Read the full article in ENGLISH
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন