আইপিএলের বরাবরের স্লোগান, 'যেখানে প্রতিভা সুযোগের মঞ্চ পায়।' আইপিএলে প্রত্যেক বছরেই নজরকাড়া তরুণ তুর্কিরা উঠে আসে। আরও নতুন দুই দলের সংযোজনের ফলে এবার উঠতি প্রতিভাদের আরও বেশি করে প্রমাণের মঞ্চ উপহার দিচ্ছে আইপিএল। আইপিএল সবেমাত্র একসপ্তাহ গড়িয়েছে। এর মধ্যেই আয়ুশ বাদোনি, ললিত যাদব, তিলক ভার্মারা নজর কেড়েছেন।
শনিবার তিলক ভার্মা একার হাতে মুম্বইকে জয় এনে দিয়েছিলেন প্রায়, ৩৩ বলে ৬১ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে। মুম্বই শেষমেশ হেরে গেলেও তিলকের পারফরম্যান্স ক্রিকেট বিশ্বের কুর্নিশ আদায় করে নিয়েছে। জাতীয় দলের প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী যেমন ১৯ বছরের ক্রিকেটারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সেইসঙ্গে তিনি জানান, তিলক ভার্মাদের মত তারকাদের উঠে আসা রোহিতদের কাছে ভাল লক্ষণ।
২০২০-তে যুব বিশ্বকাপে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিলক। গত বছর হায়দরাবাদের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফর্মার ছিলেন তিনি। নিলামে আইপিএলের দুই সফলতম ফ্র্যাঞ্চাইজি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং সিএসকের মধ্যে কার্যত কড়াকাড়ি পড়ে গিয়েছিল তিলককে সই করানোর জন্য। শেষমেশ মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ১.৭ কোটি টাকায় তিলককে সই করিয়ে নেয়।
আরও পড়ুন: ক্যাচ মিসে হ্যাটট্রিকও মিস! দু-বলে দু-উইকেট নিয়েও স্বপ্নভঙ্গ চাহালের, দেখুন ভিডিও
ক্রিকবাজ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিলক জানিয়েছেন, মুম্বই তাঁকে সই করানোর পর কীভাবে তাঁর পরিবার, আত্মীয়স্বজন প্রতিক্রিয়া জানান। তিলক জানিয়েছেন, "যেদিন আইপিএলের নিলাম চলছিল, সেদিন কোচের সঙ্গে ভিডিও কলে ছিলাম। নিলামে আমার দর যখন হুহু করে বাড়ছিল, আমার কোচ কেঁদে ফেলেন। মুম্বই আমাকে তুলে নেওয়ার পরে বাড়িতে ফোন করি। বাড়ির সবাই কাঁদতে শুরু করে দেয়। মা তো কথাই বলতে পারছিলেন না।"
আইপিএলে চুক্তি পাওয়ার আগে জীবন কঠিন ছিল। পদে পদে পেরোতে হয়েছে কঠিন বাধা। আর্থিক অনটন প্রবল হয়ে উঠেছিল। তিলক বলছিলেন, "বেড়ে ওঠার সময় প্রবল অর্থ কষ্টের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। বাবা অল্প বেতন নিয়ে আমার ক্রিকেট, ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাতেন। গত কয়েক বছরে স্পনসরশিপ, ম্যাচ ফি দিয়ে নিজেই নিজের খরচ জোগাতে পারছি।"
আপাতত ১৯ বছরের তারকা বলছেন, বাবা-মা'র জন্য বাড়ি কেনা তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য। "এখনও পর্যন্ত আমাদের নিজস্ব বাড়ি নেই। তাই আইপিএল থেকে যত টাকাই উপার্জন করি, একমাত্র লক্ষ্য থাকবে বাবা-মায়ের জন্য একটা বাড়ি কেনা। আইপিএলের এই অর্থ আমার বাকি ক্রিকেট জীবনের খরচের বিষয়ে নিশ্চিন্ত করেছে। আপাতত খোলা মনে ক্রিকেট খেলতে চাই।" বলে দিয়েছেন তিলক।