আইপিএল খেলা বন্ধ করে বরং দেশের পাশে দাঁড়াক ক্রিকেটাররা, এমনই বার্তা দিলেন এবার শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি অর্জুনা রনতুঙ্গা। বর্তমানে অর্থনৈতিক সঙ্কটে শ্রীলঙ্কা ভয়াবহ পরিস্থিতিতে। দেশে জ্বালানি এবং খাদ্যভাবে ভয়ঙ্কর অবস্থায় দিনযাপন করছেন দ্বীপরাষ্ট্রের বাসিন্দারা। করোনা অতিমারী থেকে রেহাইয়ের পরে শ্রীলঙ্কা আপাতত দেশের ইতিহাসের সবথেকে বড় সঙ্কটের মোকাবিলা করছে।
এমন অবস্থায় সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অর্জুন রনতুঙ্গা জানিয়েছেন, "বহু ক্রিকেটার জাঁকজমকের সঙ্গে আইপিএল খেলছে। দেশের কথা চিন্তাতেই নেই তাঁদের। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ক্রিকেটাররা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এখনও মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছে। শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের অধীনে। ওঁরা স্রেফ নিজেদের চাকরি বাঁচাতেই ব্যস্ত। কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটাররা ভয়ের তোয়াক্কা না করে সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে। এখন বাকিদেরও এগিয়ে আসতে হবে।"
আরও পড়ুন: শামির ওপর চিৎকার করে চরম অপমান, হার্দিকের কাণ্ডে ফুঁসছে ক্রিকেট মহল, দেখুন ভিডিও
রনতুঙ্গার আরও সংযোজন, "যখন কোনও কিছু ভুল হয়ে, তখন তা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য সাহসের প্রয়োজন। সেই সময় নিজের স্বার্থের কথা ভাবলে চলে না। অনেকেই আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন, আমি কেন প্রতিবাদে নেই। আমি স্রেফ জানাতে চাই, ১৯ বছর ধরে রাজনীতি করছি। তবে এটা কোনও রাজনৈতিক ইস্যু নয়। এখনও পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক দলই প্রতিবাদে সামিল হয়নি। এটাই এদেশের সবথেকে বড় শক্তি।"
ঘটনাচক্রে, এর আগে আইপিএল খেলতে এসেই ভানুকা রাজাপক্ষে এবং ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার মত তারকারা দেশের অর্থনৈতিক সংকটে প্রতিবাদীদের সমর্থন জানিয়েছিলেন। তবে রনতুঙ্গা বলছেন, "কারা কারা আইপিএল খেলছে সকলেই জানে। তাঁদের নাম আলাদা করে উল্লেখ করতে চাই না। আমি চাই ওঁরা নিজেদের কাজ ফেলে একসপ্তাহের জন্য দেশে ফিরে প্রতিবাদে সামিল হোক।"
শ্রীলঙ্কান অর্থনৈতিক সঙ্কটে মার খেয়েছে গোটা দেশের পর্যটন ব্যবস্থাও। বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়েও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যে কারণে দেশে জ্বালানি এবং খাদ্যের দাম সাধারণের আয়ত্তের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। জীবন ধারণের দ্রব্যের ঘাটতিতে পড়শি দেশের মুখাপেক্ষী আপাতত দ্বীপরাষ্ট্র।
আর এই অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণেই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ্রা রাজাপক্ষে এবং প্রেসিডেন্ট গোটাবাওয়া রাজাপক্ষের অপসারণ চেয়ে সরব হয়েছে গোটা দেশ। সোমবার দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের জনসাধারণের কাছে ধৈর্য্য ধরার আর্জি রাস্তার বিক্ষোভে সামিল না হওয়ার আহ্বান করেছেন। দ্রুত এই সঙ্কটের মোকাবিলা করবেন তাঁরা, এমনটাই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।