১৫তম আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মত দল গড়েছিল কেকেআর। অন্তত খাতায় কলমে টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা দল হিসেবে ভাবা হচ্ছিল কেকেআরকে। তবে সপ্তম স্থানে থেকে নাইটরা অভিযান শেষ করেছে। কিন্তু কী কারণে এভাবে মুখ থুবড়ে পড়ল কোটি কোটি টাকার ফ্র্যাঞ্চাইজি, তা নিয়ে দলের অন্দরে ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিলামে বিশাল অর্থ খরচ করে কেকেআর কিনেছিল শ্রেয়স আইয়ারকে। তবে প্ৰথম একাদশে ক্রমাগত পরিবর্তন প্রভাব ফেলেছে দলের পারফরম্যান্সে। ১৪ ম্যাচে হাফডজন জয় নিয়ে ১২ পয়েন্টে লিগ পর্ব ফিনিশ করে প্লে অফের আগেই।ছিটকে গিয়েছে কেকেআর। দলে একের পর এক ম্যাচ উইনার থাকা সত্ত্বেও চাপের মুখে অনেকেই নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি।
আরও পড়ুন: গুজরাটের জয়ে নেচে-কুঁদে অস্থির জয় শাহ! বোর্ডের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ব্যাপক বিতর্ক
তবে চড়াই উতরায়ের মরশুমে নাইটদের বেশ কিছু সদর্থক বিষয়ও রয়েছে। দলগতভাবে কেকেআর ব্যর্থ হলেও বেশ কয়েকজন তারকা ব্যক্তিগত স্তরে পারফর্ম করে সমর্থকদের ভরসা আদায় করে নিয়েছেন। দেখে নেওয়া যাক, এমন চার তারকা-
১) নীতিশ রানা: আইপিএলে অভিজ্ঞতায় অনেকের থেকে এগিয়ে নীতিশ রানা। মুম্বইয়ের হয়ে আবির্ভাবের পরে কেকেআরের জার্সিতে ভরসা হয়ে উঠেছেন গত কয়েকবছর ধরে। নিলামের আগে তাঁকে রিটেন না করা হলেও পরে মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে কেকেআর কেনে নীতিশ রানাকে।
দলের আস্থার মর্যাদা দিয়ে রানা ১৪ ম্যাচে ৩৬১ রান করেছেন। নাইটদের যে কয়েকজন তারকা ধারাবাহিকভাবে গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে রান করে গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম নীতিশ রানা। তবে দলের বারবার বদলে তাঁর ভূমিকা বদলে গিয়েছিল। ম্যাচ উইনারের পরিবর্তে অধিকাংশ ক্ষেত্রেও ম্যাচ বাঁচানোয় অবতীর্ণ হতে হয়।
আরও পড়ুন: মেয়ে বেবো-কে ভুলেই গিয়েছেন, সংসার চলছে গয়না বিক্রি করে! IPL চ্যাম্পিয়ন শামিকে নিশানা হাসিনের
২) উমেশ যাদব: জাতীয় দলের বর্ষীয়ান পেসার সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলে যেন নিজেকে নতুনভাবে ফিরে পেয়েছেন। স্রেফ নিজের সমালোচকদের মুখ বন্ধ করাই নয়, পাওয়ার প্লে-তে অধিকাংশ ম্যাচে বিপক্ষের উইকেট তুলে দলকে ব্রেক থ্রু দিয়েছেন। ১৬ উইকেট নিয়ে তিনি দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।
৭.০৬ ইকনমি রেটে বল করেছেন। স্ট্রাইক রেট ২১.১৮। দিল্লির হয়ে গত মরশুমে বেশিরভাগ ম্যাচেই বেঞ্চে বসে কাটাতে হয়েছিল। তিনি এবার কেকেআর জার্সিতে বুঝিয়ে দিলেন, এখনও ফুরিয়ে যাননি।
৩) শ্রেয়স আইয়ার: দিল্লি ক্যাপিটালস থেকে নেতা হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে নাম লিখিয়েছিলেন কেকেআর শিবিরে। তিনি যে নেতা হিসেবে নজর কেড়েছেন, এমনটা নয়। বেশ কয়েকবার তাঁর নেতৃত্ব দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমন খারাপ মরসুমেও তিনি দলের সেরা রান সংগ্রাহক।
৩০.৮৪ গড়ে শ্রেয়স আইয়ার ৪০১ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১৩৪.৫৬। অধিকাংশ সময়ই ব্যাটিং ব্যর্থতার মুখে শ্রেয়সকে শিট এঙ্করের ভুমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়েছিল। এই মরসুমের ব্যর্থতা আগামী দিনে তিনি যে সুদে আসলে মিটিয়ে ফেলতে মরিয়া থাকবেন, তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন: শাহরুখের KKR-কে চরম চাপ সিএবি-র! অস্বস্তিতে ফেলে প্রকাশ্যেই বিবৃতি প্রেসিডেন্ট ডালমিয়ার
৪) রিঙ্কু সিং: ২০১৮ থেকে খেলার সুযোগ প্রায় পাননি। তবে ২০২২ সিজন রিঙ্কুর কাছে মোড় ঘোরানো হয়ে থাকল। প্ৰথম পর্বে বসিয়ে রাখা হয়েছিল আলিগর থেকে উঠে আসা বাঁ হাতিকে। তবে সুযোগ পেতেই নিজের জাত চেনাতে ভুল করেননি। শেষ ৭ ম্যাচে ১৭৪ রান করেছেন ইনিংস পিছু ৩৪ গড়ে। লখনৌ ম্যাচে দলের বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে কেকেআরকে প্রায় জিতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। অবিশ্বাস্য সেই ব্যাটিং তারিফ কুড়িয়েছে অজস্র।
তাঁর স্ট্রাইক রেট অবশ্য বেশ প্রভাব ফেলার মত- ১৪৮.৭১। বড় শট হাঁকানোর ক্ষমতা রয়েছে। দুরন্ত ব্যাটসম্যান হওয়ার পাশাপাশি দারুণ ফিল্ডারও তিনি।