মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির পাক মালিকানাধীন দোকানে সুগন্ধী বিক্রি করতেন একটা সময়ে। ১৪ ঘন্টা হাড়ভাঙা কঠোর পরিশ্রমে শেষে হাতে জুটিত ৩৫ ডলার। এখন তাঁর পকেটে আইপিএলে ১০.৭৫ কোটি টাকার চুক্তি। জীবন এভাবেই বদলে গিয়েছে আরসিবি তারকা হর্ষল প্যাটেলের। নিজের ফেলে আসা জীবনের কথাই এবার শেয়ার করলেন গৌরব কাপুরের ব্রেকফাস্ট উইথ চ্যাম্পিয়ন শো-এ।
Advertisment
সেখানেই অনর্গল ভঙ্গিতে সেই জীবনের কথা উপুড় করে দিয়ে হর্ষল বললেন, "নিউ জার্সির এলিজাবেথে পাকিস্তানি এক দোকানে পারফিউম বিক্রি করতাম। এক বর্ণও ইংরেজি বলতে পারতাম না। কারণ বরাবর গুজরাটি মাধ্যমে পড়াশুনা করে এসেছি। সেই সময়েই ভাষাগত কারণে এত বিপত্তির মুখে পড়েছিলাম প্ৰথমবার। অনেক স্ল্যাং শিখে ফেলেছিলাম কারণ গোটা এলাকায় লাতিনো এবং আফ্রো-আমেরিকানদের বসবাস ছিল। সেই গ্যাংস্টার ইংলিশ শিখে ফেলি শেষমেশ।"
"শুক্রবার ওঁরা একসঙ্গে ১০০ ডলারের পারফিউম কিনত। সোমবার ওঁরাই ফিরে এসে বলত, ওহে, আমি স্রেফ কয়েকবার স্প্রে করেছি। এটা ফিরিয়ে দিতে চাই। কারণ খাবার কিনতে পারছি না টাকার জন্য। এরকমটা হামেশাই ঘটত। এরকম ব্লু কলার জব দারুণভাবে নিজেকে চিনিয়ে দিয়েছিল। তাই গোটা বিষয়টিই দারুণ উপভোগ্য ছিল আমার কাছে। সকাল সাতটায় আমার কাকা-কাকিমা অফিস যাওয়ার সময় আমাকে দোকানে ড্রপ করে দিতেন। দোকান খুলত সকাল ৯টায়। আমি এলিজাবেথ স্টেশনে অপেক্ষা করতাম। ১২-১৩ ঘন্টার ডিউটি শেষে পকেটে ঢুকত কড়কড়ে ৩৫ ডলার।"
Advertisment
২০১৮ সালে আরসিবি হর্ষলকে তাঁর বেস প্রাইস ২০ লক্ষ টাকায় কিনে নেয়। ২০২০-তে ট্রেডিংয়ে আরসিবিতে যোগ দেন তারকা পেসার। ২০২১ আইপিএলে স্বপ্নের পারফরম্যান্স করে ১৫ ম্যাচে ৩২ উইকেট তুলে নেন। দলকে প্লে অফে তুলতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নিলামের আগে আরসিবি হর্ষলকে ছেড়ে দিলেও মেগা অকশনে বিশাল অর্থ খরচ করে নিজেদের তারকাকেই ফিরিয়ে নেয়।
ক্রিকেট জীবন নিয়েও মুখ খুলেছেন খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে যাওয়া তারকা। বলছিলেন, "মোতেরায় সকাল সাতটা থেকে দশটা পর্যন্ত প্র্যাকটিস করতাম। পাশেই একটা স্যান্ডউইচের দোকান ছিল। সেখানে আলু-মটর স্যান্ডউইচ, ভেজ স্যান্ডউইচ খেতাম। টোস্ট করা স্যান্ডউইচ খেতাম না দাম বেশি হওয়ার কারণে। আলু-মটর, ভেজিটেবল স্যান্ডউইচের দাম ছিল ৭ টাকা। আর টোস্টেড স্যান্ডউইচ মিলত ১৫ টাকায়।"