কেকেআর: ১২৭/৯
দিল্লি ক্যাপিটালস: ১২৮/৬
ট্রেন্ডটা শুরু হয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচ থেকে। ধারাবাহিকতার অভাবে ভোগা ঈশান কিষান, সূর্যকুমার যাদবদের ফর্মে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কেকেআর। এবার নাইটরা শোচনীয়ভাবে পরাস্ত হল এমন একটা দলের কাছে। যারা টুর্নামেন্টের প্ৰথম পাঁচ ম্যাচেই হেরে বসেছে, নাইট ম্যাচ হারলেই যাঁদের সরকারিভাবে অঙ্কের হিসাবে প্লে অফের সম্ভবনা মুছে যেত।
সেই দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে হেরেই হারের হ্যাটট্রিক করে ফেলল কেকেআর। এতদিন কেকেআরের মান রক্ষা করে যাচ্ছিল ব্যাটিং লাইন আপ। ভেঙ্কটেশ আইয়ার, রিঙ্কু সিং, নীতিশ রানা, রহমনুল্লাহ গুরবাজ সকলেই রানের মধ্যে ছিলেন। তবে এই ব্যাটিং-ই বৃষ্টিভেজা ম্যাচে কেকেআরকে প্রথমার্ধেই শুইয়ে দিল। শোচনীয় ব্যাটিংয়ের খেসারত দিয়েই কেকেআর বৃহস্পতিবার হারল রানে।
১২৮ রানের আতুপুতু টার্গেট ডিফেন্ড করা সম্ভব নয়। সেটা হয়ও-নি। পৃথ্বী শ, ডেভিড ওয়ার্নার ঝোড়ো শুরু করার পরেই কার্যত স্পষ্ট হয়ে যায় কেকেআরের পক্ষে জেতা কোনওভাবেই সম্ভব নয়। তারপরেও দিল্লি কিছুটা হোঁচট খেয়েই লক্ষ্যে পৌঁছল। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে বরুণ চক্রবর্তী পৃথ্বী শ-কে ফিরিয়ে দেন। ক্যাপ্টেন নীতিশ রানা এবং অনুকূল রয় পরপর দু-ওভারে মিচেল মার্শ এবং ফিল সল্টকে ফিরিয়ে দিয়ে সামান্য আশা জাগিয়েছিলেন। তবে ওয়ার্নার হাফসেঞ্চুরি (৪১ বলে ৫৭) করে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে দেন। ১৪তম ওভারে বরুণ চক্রবর্তীই ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে দেন। তবে টার্গেট এত-ই অল্প ছিল যে দিল্লি চাপে পড়লেও জয় নিয়ে কার্যত কোনও সংশয়ের বাতাবরণও তৈরি হয়নি।
তা-ও যে ম্যাচ শেষ ওভার পর্যন্ত গড়াল, তার অনেকটাই কৃতিত্ব প্রাপ্য ক্যাপ্টেন রানা এবং অনুকূল রয়ের। ডেথ ওভারে টাইট বোলিং করে কার্যত ম্যাচ নাইটদের জিতিয়েই দিয়েছিলেন। ওয়ার্নার আউট হওয়ার পর আবেশ খান এবং মণীশ পান্ডেকে পরপর ফিরিয়ে নাইটরা ম্যাচে দারুণভাবে কামব্যাক করেছিলেন। শেষ ওভারেও জয়ের জন্য দিল্লির দরকার ছিল ৭ রান। টানটান ম্যাচে অক্ষর প্যাটেল ২২ বলে ১৯ করে দিল্লিকে জিতিয়ে দেন।
যাইহোক, হারের হ্যাটট্রিক কাটাতে মরিয়া হয়ে নাইটরা একাদশে চারটে বদল ঘটিয়ে খেলতে নেমেছিলেন। এন জগদীশন, গুরবাজ রহমনুল্লাহ, শার্দূল ঠাকুর এবং লকি ফার্গুসনকে বসিয়ে নাইটরা এদিন খেলিয়েছিল লিটন দাস, জেসন রয়, মনদীপ সিং এবং কুলবন্ত খেজুরিওয়ালাকে। তবে একগাদা পরিবর্তনের নিট ফল সেই জিরো। একমাত্র জেসন রয় নাইটদের জার্সিতে প্ৰথম ম্যাচে লড়াই উপহার দিয়ে গেলেন। বাকিরা দাগ-ই কাটতে পারলেন না।
প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমে দুরন্ত দিল্লির বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি কেকেআর। একা লড়াই চালিয়ে গেলেন জেসন রয়। ৪৩ রান করে দলকে সম্মানজনক রান গড়তে সাহায্য করলেন। আন্দ্রে রাসেল শেষদিকে ৩১ বলে ৩৮ না করলে আরও বড় বিপদে পড়ত কেকেআর। শেষ ওভারে জোড়া ছক্কা হাঁকিয়ে কোনও রকমে রাসেল কেকেআরকে ১২৭-এ পৌঁছে দেন। নাইটদের ইনিংসে তিনজন মাত্র দুই অঙ্কের রান করেছেন। এতেই প্রকট কেকেআরের ব্যাটিং ব্যর্থতা।
দিল্লি বোলাররা কখনই স্বছন্দে থাকতে দেয়নি কেকেআরকে। পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই তিন উইকেট হারিয়ে বসেছিল কেকেআর। তারপর কখনই সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কেকেআরের ব্যাটিং। একমাত্র জেসন রয়ের সামনে কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলেন ডেভিড ওয়ার্নাররা। তবে ১৫ তম ওভারে কুলদীপ যাদব জেসন রয়কে আউট করে দেন। ঈশান্ত শর্মা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, আনরিখ নর্জে প্রত্যেকেই দুটো করে উইকেট পান। মুকেশ কুমারের সংগ্রহে এক উইকেট।