GT vs MI IPL 2023 2nd Qualifier Match Report..
গুজরাট টাইটান্স: ২৩৩/৩
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ১৭১/১০
পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বইয়ের পুনরায় কাপ জয়ের স্বপ্নে জল ঢেলে দিল গুজরাট। শুভমান গিলের আরও একটা বিষ্ফোরক শতরান ফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে দিল রোহিত শর্মাদের। গিলের সাইক্লোন তোলা ব্লকবাস্টার শতরান এর আগে বিরাটের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছিল। এবার রোহিতের কাপ জয়ের স্বপ্নেও ফুলস্টপ ফেলে দিলেন গিল।
গিলের অনবদ্য ১২৯ রানে ভর করে ২৩৩ রানের পাহাড় স্কোরবোর্ডে তুলে ফেলেছিল গুজরাট। সেই রান চেজ করতে নেমেই ১৭১ রানে গুটিয়ে গেল মুম্বই। ১৮.১ ওভারেই খতম পাঁচবারের আইপিএল জয়ীরা। ৬২ রানে মুম্বই বধ করে ফাইনালে চেন্নাইয়ের মোকাবিলা করবে হার্দিকের গুজরাট। আগামী রবিবার।
রানের পাহাড়ের চাপ, সেই চাপের মুখে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করে বসল মুম্বই। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারালেও মুম্বই চলতি টুর্নামেন্টে পঞ্চমবার ২০০+ টার্গেট চেজ করার ঐতিহাসিক চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল তিলক ভার্মা এবং সূর্যকুমার যাদবের ব্যাটে ভর করে।
ফিল্ডিং করার সময়েই মুম্বইয়ের টপ অর্ডারের তিন তারকা চোট পেয়ে বসেছিলেন। রোহিত এবং ক্যামেরন গ্রিনের আঙুলে ইনজুরির সঙ্গে ঈশান কিষান চোখে চোট পেয়ে ব্যাটেই নামতে পারেননি। কনকাশন পরিবর্ত হিসাবে নামানো হয় বিষ্ণু শঙ্করকে। নেহাল ওয়াদেরাকে সঙ্গে নিয়ে ওপেন করতে নেমেছিলেন ক্যাপ্টেন রোহিত। প্ৰথম দুই ওভারের মধ্যেই মহম্মদ শামি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রোহিত-নেহালকে।
এরপরেই মুম্বইকে ম্যাচে ফেরায় ক্যামেরন গ্রিন-তিলক ভার্মার পার্টনারশিপ। দুজনে ঝড়ের গতিতে ৫১ রান যোগ করে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন গুজরাটকে। তবে পাওয়ার প্লে-র একদম শেষ বলে রশিদ খান মোক্ষম সময়ে তিলক ভার্মাকে (১৪ বলে ৪৩) আউট করে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন গুজরাটকে।
এরপরে সূর্যের শো-য়ে রিকোয়ার্ড রেট আয়ত্তের মধ্যেই ছিল মুম্বইয়ের। সূর্যের সঙ্গে গ্রিন জুটিতেও ৫২ রান ওঠে। ৩৮ বলে ৬১ করে দলকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন সূর্য। সেই সময়ে ভালোভাবেই ম্যাচে ছিল মুম্বই। তবে কয়েক ওভারের ব্যবধানে সূর্য এবং ক্যামেরন গ্রিন আউট হওয়ার পর ভেঙে পরে মুম্বইয়ের বাকি ব্যাটাররা। মুম্বইয়ের মিডল অর্ডারে ভাঙচুর চালিয়ে পাঁচ উইকেট তুলে নেন মোহিত শর্মা।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ঋদ্ধিমান সাহা এবং শুভমান গিল হাফসেঞ্চুরি পার্টনারশিপ করে দেন। ঋদ্ধিমান সেভাবে ব্যাটে বলে করতে পারছিলেন না। ১৬ বলে ১৮ করে বাংলার তারকা আউট হয়ে গেলেও সাই কিশোরের সঙ্গে ১৩৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন গিল। এই জুটিতেই কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় মুম্বই।
৩১ বলে ৪৩ রান করে সাই কিশোর মাঠ ছাড়েন বাকি ব্যাটারদের হাত খোলার সুযোগ দেওয়ার জন্য। হার্দিক পান্ডিয়া ১৩ বলে ২৮ করে দলকে ভালো ফিনিশ করতে সাহায্য করেন। গুজরাটের বাকি ইনিংস জুড়ে কেবলই শুভমান গিলের তান্ডব। ভারতীয় ক্রিকেটের বর্তমান প্রিন্স কেন বলা হচ্ছে পাঞ্জাব তনয়কে, এদিন আরও একবার প্রমাণ করলেন তিনি। চলতি আইপিএলে তৃতীয় শতরান করে।
ইনিংসের শুরুতে একবার প্রাণ পেয়েছিলেন। বাকিরা পুরোপুরি নিখুঁত বাঁধিয়ে রাখার মত। শেষমেশ ৬০ বলে ১২৯ করে যখন গিল আউট হন, তখন আইপিএলের প্লে অফের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান গড়ার রেকর্ড নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।
প্ৰথম পাঁচ ওভারে মুম্বই বোলিংয়ের রাশ আঁটোসাঁটো রেখেছিলেন। তবে একবার শুভমান গিল খোলস ছেড়ে বেরোতেই ম্যাচ থেকে ক্রমশ হারিয়ে যান মুম্বই বোলাররা।
মোতেরার উইকেট একদম পাটা। বোলারদের জন্য কার্যত বধ্যভূমি। পীযূষ চাওলা ধুরন্ধর বোলিংয়ে ঋদ্ধিমানকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন পাওয়ার প্লে-র মধ্যে। তবে সেটা গুজরাটকে আটকে রাখার পক্ষে যথার্থ ছিল না। কুমার কার্তিকেয় এবং জেসন বেহরনডর্ফ বাদে বাকি বোলাররা স্রেফ উড়ে গিয়েছেন গুজরাটের ব্যাটিংয়ের কাছে।
লখনৌ ম্যাচে ৫ উইকেট তুলে সাড়া ফেলে দেওয়া আকাশ মাদওয়াল এদিন সেঞ্চুরিয়ন শুভমান গিলকে আউট করেন। তবে ৪ ওভারে ৫২ রান খরচ করলেন তিনি। পীযূষ চাওলা (৩ ওভারে ৪৫), ক্রিস জর্ডন (৪ ওভারে ৫৬), ক্যামেরন গ্রিন (৩ ওভারে ৩৫) সকলেই রানের ওপর রান খরচ করে যান।