সুনীল গাভাসকারের গনগনে ক্ষোভের মুখে পড়লেন মুম্বইয়ের ইন্ডিয়ান্স-এর তারকা পেসার জোফ্রা আর্চার। আইপিএলের মাঝপথেই দেশে ফিরে যাচ্ছেন আর্চার। এরপরেই ক্ষিপ্ত গাভাসকার বলে দিচ্ছেন, আইপিএল ২০২২'এ যে বিশাল পরিমাণ চুক্তি পেয়েছিলেন আৰ্চার, তার একটা টাকাও দেওয়া উচিত নয়।
মিড ডে-তে গাভাসকার নিজের কলামে লিখেছেন, "জোফ্রা আর্চারকে নিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স-এর কী অভিজ্ঞতা হল? ওঁর চোট রয়েছে জেনেও মুম্বই আর্চারকে নিয়ে নিলাম থেকে কিনে ঝুঁকি নিয়েছিল। ওঁরা ভেবেছিল এই সিজন থেকে আর্চারের সার্ভিস ওঁরা পাবে। ওঁর জন্য বিশাল অর্থ খরচ করতে পিছপা হয়নি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। এর বদলে ওঁরা কী পেল? ওঁকে কখনই একশো শতাংশ ফিট মনে হয়নি। ওঁর উচিত ছিল নিজের ইনজুরিট ব্যাপারে ফ্র্যাঞ্চাইজিকে আগে থেকেই অবহিত করা।"
"ফ্র্যাঞ্চাইজিতে যোগ দেওয়ার পরেই একমাত্র মুম্বই বুঝতে পারল আৰ্চার মোটেই নিজের স্বাভাবিক গতিতে বল করতে পারবে না। টুর্নামেন্ট চলাকালীন ও নিজের দেশে চিকিৎসা করাতে গেল। যেটা সম্ভবত ওঁর দেশের ক্রিকেট বোর্ডের তরফে নির্দেশ এসেছিল। ও কখনই পুরোপুরি ফিট ছিল না। তা স্বত্ত্বেও আইপিএল খেলতে চলে এল।"
"দেশের ক্রিকেট বোর্ডের থেকেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ওঁকে বেশি টাকা দেয়। তা হলেও ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য ওঁর দায়বদ্ধতা কোথায়? ওঁর বরং উচিত ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য নিজের দায়বদ্ধতা দেখিয়ে গোটা টুর্নামেন্ট ফ্র্যাঞ্চাইজিতে থাকা। বদলে ও দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।"
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স-এর জার্সিতে চলতি সিজনে আর্চার মাত্র পাঁচটি ম্যাচে খেলেছেন। উইকেট নিয়েছেন দুটো। ইকোনমি রেট ৯.৫০। এরপরে কনুইয়ে চোট পেয়ে গোটা টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে যান তিনি। কয়েকদিন আগেই রটে যায়, আইপিএলের মাঝপথে আর্চার চিকিৎসা করাতে ইংল্যান্ডে উড়ে যাচ্ছেন। যদিও টুইটারে সেই রিপোর্ট সরাসরি অস্বীকার করেন ইংরেজ সিমার। তবে এবার সত্যিসত্যিই দেশে ফিরে যাচ্ছেন তিনি। আসেজ থেকে ছিটকে যাওয়া পেসারকে নিয়ে সরাসরি গাভাসকার মুম্বইকে বোকা বনতে বারণ করছেন।
"যে দিন রিপোর্ট বেরোল যে আর্চার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে কয়েক মিলিয়নের চুক্তি করছে গোটা বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক টি২০ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার জন্য। এরকম একটা অনিচ্ছুক ঘোড়ার জন্য মুম্বইয়ের ভবিষ্যতে মোটেও টাকা খরচ করা উচিত হবে না। কোনও ভুল করো না মুম্বই। পরে অবাক হওয়ার সুযোগও থাকবে না। আর্চারকে ছাড়াই যে মুম্বই টুর্নামেন্টে ফিরে এসেছে এটা ভালো খবর। আইপিএল চুক্তির পুরো টাকা যদি ও পায়, তাহলে ওঁকে ভাগ্যবান-ই বলতে হবে। এই পুরোটা পেলেও ওঁর উচিত কিছু টাকা চ্যারিটিতে দান করা।"
এমনটা লিখে সানি আরও লিখেছেন, "যত বড়ই ফুটবলার হোক না কেন, যদি পুরো আইপিএল না খেলতে পারে তাহলে কোনও প্লেয়ারকে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজির একটাকাও দেওয়া উচিত নয়। সংশ্লিস্ট প্লেয়ারকেই ঠিক করতে হবে সে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলবে নাকি দেশের হয়ে খেলবে। তবে আইপিএল বাছাই করলে সেই প্লেয়ারকে পুরো দায়বদ্ধতা দেখাতে হবে। দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে। কোনও অজুহাত দেখিয়ে সাততাড়াতাড়ি আইপিএল ছাড়া চলবে না। বিশেষ করে যখন প্লে-অফের কোয়ালিফিকেশন এরকম টানটান জায়গায় পৌঁছে যায়।"
৭৩ বছরের কিংবদন্তি জানিয়েছেন, সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজিই ক্রিকেটারদের ক্ষমার চোখে দেখে। তবে ইংরেজ ক্রিকেটারদের ওই সমস্যা রয়েই গিয়েছে।
Read the full article in ENGLISH