ইডেন গার্ডেন্সে যে পিচে খেলতে হচ্ছে, তাতে মোটেই খুশি নন কেকেআর ক্যাপ্টেন নীতিশ রানা। তিনি এমনটাও বলে দিয়েছেন, আইপিএলে কেকেআর বাদে প্রত্যেক ফ্র্যাঞ্চাইজিই ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা নিচ্ছে।
যদিও ইডেনের পিচ কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে বলেছেন, নির্দেশ অনুযায়ী, তাঁরা মোটেই হোম টিমের পছন্দ মত পিচ তৈরি না-ই করতে পারেন।
তিনি জানাচ্ছেন, "ঘরের মাঠের সুবিধার ভিত্তিতে আইপিএল মোটেই খেলা হয়না। ক্যাপ্টেন যা খুশি তা বলতেই পারেন। আইপিএলের কি কোথাও বলা রয়েছে যে আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের ইচ্ছামত পিচ বানাতে হবে?"
আইপিএলের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, কলকাতা নাইট রাইডার্স বরাবর ইডেনের পিচের পুরো ফায়দা তুলতে স্লো বোলারদের ওপর অত্যধিক নির্ভর করে থেকেছে। ২০১২, ২০১৪-য় কেকেআরের চ্যাম্পিয়ন দলের মূল স্তম্ভ-ই ছিলেন স্লো বোলাররা। সুনীল নারিন, সাকিব আল হাসান এবং পীযূষ চাওলারা নিয়মিত প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের বেঁধে রাখতেন ১৪০-১৬০'এর মধ্যে। তারপর কেকেআর ব্যাটাররা সেই রান স্বছন্দে তাড়া করতেন। এবারেও কেকেআরের আশা ছিল স্পিন নির্ভর স্লো উইকেট বানানো হবে।
তবে ইডেনের পিচের চরিত্র বদলে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে ইডেনের পিচ পুরোপুরি ফ্ল্যাট এবং রানের বন্যা বইয়ে দেওয়ার মত সারফেস। ঘরোয়া ক্রিকেটে ইডেনের পিচ আবার সাম্প্রতিককালে পেস সহায়ক। ফাস্ট বোলাররা যেখানে পুরোপুরি ফায়দা তুলতে পারেন। এমনকি গত সিজনে রঞ্জির ফাইনালে বাংলা বনাম সৌরাষ্ট্রের ফাইনালে গ্রিন টপ ফেলা হয়েছিল। বাংলার পেস বোলিং ব্রিগেডও বেশ দারুণ পারফর্ম করেছে। আকাশদীপ, মুকেশ কুমার, ঈশান পোড়েলরা বাংলার হয়ে দারুণ পারফর্ম করে গিয়েছেন রঞ্জিতে। সেই ফাইনালের আগে মনোজ তিওয়ারিও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলে যান, "ইডেনের সারফেস ফাস্ট বোলারদের সাহায্য করে।"
সুজন মুখোপাধ্যায় বলছেন, দু-মাসের আইপিএলের জন্য সারফেসের চরিত্র বদল করা ঠিক হবে না। "প্রচুর সমস্যা রয়েছে যা আমি বলতে চাই না। তবে কেকেআরের সুবিধার জন্য পিচ বদলে দেওয়া সোজা নয়। অন্যান্য আইপিএল দলগুলো দেখুন, আরসিবি, দিল্লি ক্যাপিটালস কিন্তু হোম আডভান্টেজের দোহাই দিয়ে অনুযোগ করছে না। যে পিচ দেওয়া হচ্ছে, তাতেই ওঁরা খেলছে।" অন্যান্য সিএসবি আধিকারিকরা এই ইস্যুতে সরাসরি মুখ খুলছেন না।
সিএবি কর্তাদের এই আচরণে অবশ্য বেশ বিরক্ত কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট। দলের বেশ কয়েকজন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, তারা চাইতেন স্লো সারফেসে খেলা হোক। কারণ তাঁদের দলে স্পিনাররাই সবথেকে বেশি উইকেট পাচ্ছেন। বরুণ চক্রবর্তী ১৯ উইকেট পেয়েছেন। নবাগত সুয়াশ শর্মাও ১০ উইকেট তুলে নিয়েছেন। নারিনও উল্লেখযোগ্য পারফর্ম করেছেন। চিপকের স্লো পিচে কেকেআর দেখিয়ে দিয়েছে, সঠিক উইকেট পেলে কেকেআর কতটা বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারে। স্লো সারফেসে সিএসকের হেভিওয়েট ব্যাটিং লাইনআপকে মাত্র ১৪৪ রানে আটকে রাখার পর কেকেআর সেই রান চেজ করে ৯ বল বাকি থাকতে।
ঘরের মাঠে সেই সুবিধাটুকুই পাচ্ছেন না নীতিশ রানারা। এতেই হতাশ হয়ে পড়ছে কেকেআর শিবির।
Read the full article in ENGLISH