সিএসকে: ২৩৫/৪
কেকেআর: ১৮৬/৮
IPL 2023,KKR vs CSK Match Report in Bangla:
চেন্নাইয়ের রান বন্যার কাছে ধুয়ে গেল কেকেআর। ইডেন গার্ডেন্সে মাথা উঁচু করেই বেরোলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ব্লকবাস্টার ধোনি ম্যাচের জন্য ইডেন চত্ত্বরে হাহাকার উঠেছিল টিকিটের।
ধোনির সিএসকের কাছে লজ্জার হারে টানা চার নম্বর হার হজম করে একেবারে তলিয়ে গেল নাইট রাইডার্স। সিএসকের ২৩৬ রানের টার্গেট চেজ করে জেসন রয়ের ঝড়ে ভর করে সামান্য সময় ম্যাচে ভেসে থাকলেও শেষমেশ ১৮৬/৮ এর বেশি তুলতে পারল না।
আন্দ্রে রাসেল টিকলেন মাত্র ৬ বল একটা ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েই দায়িত্ব শেষ! শ্রীলঙ্কান উঠতি তারকা মাথিসা পাথিরানাকে হাঁকাতে গিয়ে শিবম দুবের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় হওয়ার পরই স্পষ্ট হয়ে যায় কেকেআরের হার। রিঙ্কু সিং ক্রিজ আঁকড়ে ৩৩ বলে ৫৩ করলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না।
পাহাড়প্রমাণ রান চেজ করতে নেমে কেকেআর ফের একবার ওপেনিং কম্বিনেশন বদলেছিল রবিবার। জেসন রয়কে মিডল অর্ডারে ঠেলে এন জগদীশনকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল সুনীল নারিনের সঙ্গে ওপেন করতে। এই স্ট্র্যাটেজি কাজে আসেনি। পরপর দু-ওভারে আকাশ সিং এবং তুষার দেশপান্ডে দুই ওপেনারকে আউট করে দেন। পাওয়ার প্লে খতম না হতেই নীতিশ রানা, ভেঙ্কটেশ আইয়ারকেও হারিয়ে ফেলে নাইটরা।
তবে জেসন রয় এবং রিঙ্কু সিংয়ের ৬৫ রানের পার্টনারশিপ আশা জাগিয়েছিল অসম্ভবের। তবে গুজরাট ম্যাচের মত প্রতিদিন ম্যাজিক হওয়া সম্ভব নয়। এদিন-ও হয়নি। জেসন রয় লঙ্কান রহস্য স্পিনার থিকসানার গুগলি পড়তে না পেরে বোল্ড হয়ে যান।
ভেঙ্কটেশ আইয়ার আউট হওয়ার পর ক্রিজে এসেছিলেন রয়। মঈন আলির প্ৰথম ওভারেই হ্যাটট্রিক ছক্কা হাঁকিয়ে ঝড়ের সূচনা করেন ইংরেজ তারকা। ২৬ বলে ৬১ রানের ইনিংসে পাঁচটা করে ছক্কা, বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান। তবে তিনি আউট হতেই কেকেআর হয়ে দাঁড়াল কে কে হারে!
টসে জিতে প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমে কেকেআর বোলিং নিয়ে তান্ডব চালাল সিএসকে। চলতি সিজনে প্ৰথমবার ব্যাট করে সবথেকে বেশি রান খাড়া করেছিল ধোনির চেন্নাই। সিএসকের সকল ব্যাটাররাই ধ্বংসলীলা চালালেন ব্যাট হাতে।
বিষ্ফোরক ব্যাটিংয়ের সূচনা করে গিয়েছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড (২০ বলে ৩৫) এবং ডেভন কনওয়ে (৪০ বলে ৫৬)। দুজনে মিলে ফের একটা হাফসেঞ্চুরি পার্টনারশিপ গড়ে গেলেন। পাওয়ার প্লে-তে ঝড় ওঠার পর রুতুরাজকে সুয়াশ শর্মা আউট করলেও ছক্কার ঝড় থামেনি। চলতি সিজনে নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করেছেন অজিঙ্কা রাহানে।
নিয়ম করে ব্যাটে চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন তিনি। কনওয়ে টানা চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি করে আউট হয়ে যান। তারপর শিবম দুবের সঙ্গে জুটিতে কেকেআর বোলিংকে থেঁতলে দেন দুজনে। দুজনের মাত্র ১৬ বলে হাফসেঞ্চুরি পার্টনারশিপ গড়ে যান। দুবে ছক্কার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মাত্র ২০ বলে ফিফটি করেন। রাহানে-শিবমের জুটিতে ৮৫ রান যোগ হওয়ার পরই কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় সিএসকের রানের পাহাড়। রাহানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে যান ২৯ বলে ৭১ রান করে। শেষদিকে জাদেজাও ছোটখাটো ক্যামিওয় দলকে ২৩৪-এ পৌঁছে দেন।
ব্যাটিং কেকেআর নিয়ম করে সামলে নিচ্ছে। তবে বোলিংয়ে চলতি সিজনে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়ে চলেছে কেকেআর। সাত ম্যাচের মধ্যে কেকেআর রবিবার চার বার-ই প্ৰথমে বল করল। এর মধ্যে সবথেকে কম রান খরচ করেছিল পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে- ১৯১! তাও আবার টুর্নামেন্টের প্ৰথম ম্যাচে। গুজরাটের বিপক্ষে ২০৪ রান লিক করলেও রিঙ্কু সিং একার কৃতিত্বে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচ জিতিয়ে দেন নাইটদের। হায়দরাবাদের বিপক্ষে নাইট বোলারদের পিটিয়ে রাহুল ত্রিপাঠিরা ২২৮ রান তুলেছিল। এদিন চেন্নাই আবার আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেল। একসময় যেভাবে দুবে-রাহানে ছক্কার পর ছক্কা হাকাচ্ছিলেন, মনে হচ্ছিল হয়ত টুর্নামেন্টের ইতিহাসে নিজেদেরই সর্বোচ্চ (২৬৩) রানের রেকর্ড ভেঙে দেবেন ধোনিরা। তা না হলেও নারিনদের লাঞ্ছনা আর আটকাল কই!