আইপিএলের সেরার সেরা ম্যাচ হয়ে গেল রবিবার। যে ম্যাচে তান্ডব চালিয়ে রিঙ্কু সিং টি২০-র ইতিহাসে সেরার সেরা ইনিংস উপহার দিয়ে গেলেন।
রশিদ খান যখন চলতি আইপিএলের প্ৰথম হ্যাটট্রিক করে গিয়েছিলেন। তখন ধরেই নেওয়া হয়েছিল ম্যাচ সেট। নাইটদের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিয়েই রশিদ পরপর ফিরিয়ে দেন রাসেল, সুনীল নারিন এবং শার্দূল ঠাকুরকে।
শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য নাইটদের প্রয়োজন ছিল ৪৪ রান। ওভার পিছু ২২ রান তুলে কেকেআরকে ম্যাচ জিতিয়ে দেবেন ক্রিজে তখন-ও পর্যন্ত খোঁড়াতে থাকা রিঙ্কু এবং উমেশ যাদব- স্রেফ ভাবা যায়নি। ধারাভাষ্যকাররা বলতে শুরু করে দিয়েছিলেন, এই ম্যাচে কেকেআরের জেতা মুশকিল। তবে ম্যাচ শেষে নিজেদের কথা নিজেরাই গিলতে বাধ্য হলেন কমেন্টেটররা।
১৯তম ওভারে জশুয়া লিটল টানা দুটো ওয়াইড দিয়ে ওভার শুরু করেন। সেই ওভারেই শেষ দুই বলে রিঙ্কু বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি হাঁকানোয় জয়ের জন্য শেষ ওভারে সমীকরণ নেমে আসে ২৯ রানে। ২০ তম ওভারে গুজরাটের রান ডিফেন্ড করার দায়িত্ব ছিল ইয়াশ দয়ালের ওপর।
প্ৰথম বলে উমেশ একরান নিয়ে স্ট্রাইক দেন রিঙ্কুকে। শেষ পাঁচ বলে দরকার ছিল চার ওভার বাউন্ডারি এবং একটা বাউন্ডারি অথবা ওভার বাউন্ডারি। এখানেই ম্যাচ হারিয়ে ফেলে গুজরাট। ইয়াশ দয়াল টানা তিনটে ফুলটস দিয়ে বসেন। যেগুলো রিঙ্কু উড়িয়ে দেন লং অফ, ডিপ স্কোয়ার লেগ এবং লং অফের ওপর দিয়ে। শেষ দুই বলে সমীকরণ নেমে আসে মাত্র ১০ রানে।
পঞ্চম বলে দয়াল ব্যাক অফ দ্যা হ্যান্ড স্লোয়ার ফেলেন। সেই বল-ও রিঙ্কু উড়িয়ে দেন লং অনের ওপর দিয়ে। শেষ বলে দরকার ছিল মাত্র ৪ রান। দয়াল চাপের মুখে অফস্ট্যাম্পের বাইরে শর্ট বল ফেলেন। একদম সোজাসুজি ছক্কায় রিঙ্কু বল মাঠের বাইরে ফেলতে দ্বিধা করেননি।
কেকেআরের রিঙ্কু সিংয়ের কাছে বিশ্বের বৃহত্তম স্টেডিয়ামে ছোটই মনে হচ্ছিল। আর অবিশ্বাস্য এই রান চেজ দেখে গ্যালারিতে বসে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন জুহি চাওলা এবং জয় মেহতা। শেষ বলে লং অনের ওপর দিয়ে রিঙ্কু ছক্কা হাঁকানোর সঙ্গেসঙ্গেই মাঠে নেমে পড়েন ক্যাপ্টেন নীতিশ রানা। তাঁকে ফলো করেন বাকি সতীর্থরা।
এরকম থ্রিলার সর্বস্ব জয় ছিনিয়ে নেওয়ার পর কেকেআর মালকিন জুহি চাওলাকে দেখা যায় চোখের জল মুছছেন। তারপরে ভেঙ্কি মাইশোর এবং স্বামী জয় মেহতাকে আলিঙ্গন করতে দেখা যায় জুহিকে।