ইডেনে আইপিএল ম্যাচে মোহনবাগান সমর্থকদের নিগ্রহ করেছিল কেকেআর ম্যানেজমেন্ট। বাগানের ঐতিহ্যবাহী টি-শার্ট লোগো পরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ইডেনে। শনিবার সেই কাণ্ডের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল মেরিনার্স সমর্থকরা।
লাঞ্ছিত বাগান সমর্থকদের পাশেই এবার দাঁড়াল ক্লাব। রবিবার সরকারিভাবে বিবৃতি দিল মোহনবাগান কর্তৃপক্ষ। যেখানে সচিব দেবাশিষ দত্ত তীব্র ভাষায় নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বিবৃতিতে জানালেন, "আইপিএলে কেকেআর বনাম লখনৌ ম্যাচ স্পেশ্যাল ছিল। কারণ লখনৌ নতুনভাবে সবুজ-মেরুন জার্সিতে ইডেনে নামল। তবে কেকেআর ম্যানেজমেন্টের তরফে বাগান সমর্থকদের স্বাধীনতা খর্ব করা হল। ওঁরা কেকেআর তো বটেই লখনৌয়েরও সমর্থক। সবুজ মেরুন জার্সি পরে ওঁদের মাঠে প্রবেশে বাধা দেওয়া হল।"
"১৯৯০ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের ম্যাচ দেখেছি। জাতীয় ক্লাব মোহনবাগানের জার্সি গায়ে। কোথাও কখনও বাধার মুখে পড়তে হয়নি। এটা ব্যক্তি স্বাধীনতার বিষয়। সে কোন ক্লাবের জার্সি পরবে। কারোর পছন্দে নাক গলানোর অধিকার কারোর নেই। মোহনবাগান ক্লাব তীব্রভাবে নিন্দা করছে জাতীয় ক্লাবকে অবমাননা এবং সমর্থকদের সেন্টিমেন্টে আঘাত করায়।"
শনিবার মেগা ম্যাচের আগেই লখনৌ সুপার জায়ান্টসের মালিক আরপিএসজি গ্রুপ জানিয়েছিল, মোহনবাগানকে সম্মান জানানোর জন্যই শনিবার কেকেআরের বিপক্ষে লখনৌ সবুজ-মেরুন জার্সিতে মাঠে নামবে। এমন ঘোষণায় আপ্লুত হয়ে বাগানের এক ফ্যান ক্লাব ময়দানের সবুজ-মেরুন তাঁবু থেকে ইডেন পর্যন্ত মিছিল করতে করতে আসে। মোহনবাগানের নামে জয়ধ্বনিও দেওয়া হয়। কিন্তু সেই মোহনবাগান সমর্থকদের অভিযোগ বৈধ টিকিট থাকা সত্ত্বেও তাঁদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়।
নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে মোহনবাগানের এক ফ্যান পেজ থেকে গোটা ঘটনার বিবরণ দেওয়া হয়, "আমাদের শহরের ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে লজ্জাজনক ব্যবহারের শিকার হলাম। মোহনবাগানকে সমর্থন করার জন্য আমরা বাগান তাঁবু থেকে ফ্লেক্স, টিফো, ব্যানার, টি-শার্ট নিয়ে মিছিল করে হাজির হই ইডেনে। পুলিশ কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও আপত্তি করা হয়নি। তবে কেকেআরের নিজস্ব কর্মীরা আমাদের বাধা দেয়। মোহনবাগান সম্পর্কিত কোনওকিছুই নিয়ে মাঠে ঢুকতে দেওয়া হল না। অনেক তর্কবিতর্কের পরেও যুক্তিগ্রাহ্য কোনও সমাধান মেলেনি। এতে আমার সমস্ত কিছু মাঠের বাইরে রেখে প্রবেশ করতে হয়। কেকেআর-কে সমর্থন করার আগে এবার বাগান সমর্থকরা দু-বার ভাববে।"
সবমিলিয়ে মোহনবাগান বনাম কেকেআর সংঘাতের জল কতদূর গড়ায়, সেটাই এখন দেখার।