কেকেআর: ১৪৯/৮
রাজস্থান রয়্যালস: ১৫১/১
প্লে অফের ওঠার দৌড়ে জোড়া ম্যাচ জিতে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল কেকেআর। পরপর জোড়া জয়ে। তবে ইডেনে নাইটরা বৃহস্পতিবার মাস্ট উইন ম্যাচে খেলতে নেমে কার্যত ধ্বংস হয়ে গেল। প্রথমে জুজবেন্দ্র চাহালের ঘূর্ণি। তারপর ব্যাট হাতে যশস্বী জয়সোয়ালের তান্ডব। ছিন্নভিন্ন হয়ে বৃহস্পতিবার মাঠ ছাড়ল কেকেআর। স্কোরবোর্ডে কেকেআর কোনওরকমে টার্গেট রেখেছিল ১৫০। আইপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি সমেত ওপেন করতে নেমে জয়সোয়াল ৪৭ বলে ৯৮ করে ম্যাচ একপেশে করে দেন। দেড়শ রানের টার্গেট রাজস্থান চেজ করল ৪১ বল এবং ৯ উইকেট হাতে নিয়ে।
মোচার পূর্বাভাস ছিল ইডেনে। সেই ঘূর্ণিঝড় এল না। তবে ব্যাটে সাইক্লোন নিয়ে হাজির হলেন যশস্বী জয়সোয়াল। মাত্র ১৩ বলে হাফসেঞ্চুরি করে ভেঙে দিলেন কেএল রাহুলের রেকর্ড। রাহুল পাঁচ বছর আগে ১৪ বলে ফিফটি করেছিলেন। সেই রেকর্ড ভেঙেচুরে একাকার করে দিলেন যশস্বী।
নীতিশ রানা প্ৰথম নাইটদের হয়ে বোলিং শুরু করেছিলেন। সেই ওভারেই জয়সোয়াল ২৬ তুলে দিয়েছিলেন। জোড়া বাউন্ডারি, তিনটে ওভার বাউন্ডারিতে রানার ওভারে নাইটদের ওপর অত্যাচার শুরু করেন। তারপরের শার্দূল হোক বা অন্যান্য নাইট বোলার-কেউই থামাতে পারেননি রাজস্থান তারকাকে। হাফসেঞ্চুরি করার পথে জয়সোয়াল সাত বাউন্ডারি, তিনটে ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান।
দ্বিতীয় ওভারেই বাটলার রান আউট হয়ে যান রানের খাতা খোলার আগেই। তাতে কেকেআরের দুর্ভোগ একটুও কমেনি। নীতিশ রানা ওই যে প্ৰথম ওভারে এসেছিলেন। তারপর আর বল হাতে তোলার সাহস হয়নি। হর্ষিত রানা, শার্দূল ঠাকুর, অনুকূল রায় কাউকে ছাড় দেননি জয়সোয়াল। শেষ পর্যন্ত ক্রিজে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে ৪৭ বলে ৯৮ করে যান। একডজন বাউন্ডারি, পাঁচটা ওভার বাউন্ডারি সমেত। অন্যপ্রান্তে ঝড় তোলেন ক্যাপ্টেন সঞ্জু স্যামসন-ও। ২৯ বলে ৪৮ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে যান সঞ্জু। দুজনে মিলে নাইটদের বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন ইডেনে। সঞ্জু হাঁকালেন জোড়া বাউন্ডারি, পাঁচ ওভার বাউন্ডারি।
তার আগে টসে জিতে কেকেআরকে প্ৰথমে ব্যাটিং করতে পাঠিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস। বল হাতে কেকেআরকে ধ্বংস করেন ট্রেন্ট বোল্ট এবং চাহাল। আগেই আইপিএলের যুগ্ম সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে গিয়েছিলেন চাহাল। তবে বৃহস্পতিবার ইডেনে তিনি এককভাবে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে যান। মাত্র ২৫ রান খরচ করে ৪জনকে আউট করে যান তারকা স্পিনার। বোল্ট নাইটদের দুই ওপেনারকেই ফেরত পাঠান। রাজস্থান দলে ফিরে কেকেআরের বিপর্যয়ের রিংটোন সেট করে দিয়েছিলেন বোল্ট।
তারপর নাইটদের মিডল অর্ডার ভাঙেন চাহাল। গুরবাজ এবং জেসন রয় শুরুতেই মারদাঙ্গা ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে সেই মোমেন্টাম ধরার রাখতে পারেননি। এরপরে কেকেআর ব্যাটিংয়ের ক্ষয়ক্ষতি মেরামত করার কাজ চালান ভেঙ্কটেশ আইয়ার এবং নীতিশ রানা। রাজস্থানের আঁটোসাঁটো বোলিংয়ের সামনে বাউন্ডারি হাঁকাতে সমস্যায় পড়ছিলেন দুজনে। তাই খুচরো রান নিয়েই কেকেআরের স্কোরবোর্ডে চালু রাখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন দুজনে।
চাহাল এই জুটিতে ভাঙন ধরান। এরপর একপ্রান্তে উইকেট পতন অব্যাহত থাকলেও ভেঙ্কটেশ আইয়ার ৪২ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলে যান। রিঙ্কু সিং, আন্দ্রে রাসেল কেউই এদিন সফল হতে পারেননি। কেকেআর কোনওরকমে স্কোরবোর্ডে ১৪৯ তুলেছিল। তবে যশস্বীর ঝড়ে আপাতত এই রাত নাইটদের হল না।